somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“বাচ্চারা শ্রদ্ধেয়, কিঞ্চিত ১৮+ হতে পারে”

২১ শে জুলাই, ২০১১ রাত ২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটা বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে আমার শেষ লিখা।

বেশ কিছু দিন আগে আমি বাইরে থেকে বাসায় ফিরছি।দেখি আমার রুমে আমার ভাতিজা আহনাফ খেলছে।তার বয়স তখন ৫ বছর।নিয়মমত প্যান্ট টা খুলে গামছা পড়ে হাফপ্যান্ট পড়লাম।খেয়াল করলাম না ভাতিজা আমার রুমে।কিছুক্ষন পর ভাতিজা বলে উঠল “চাচ্চু তোমারটা আমার চেয়ে বড়”।আমি ঠিক বুঝলাম না।হঠাৎ খেয়াল হল আরে আমিতো এখনো প্যান্ট পড়িনি,গামছাটা হালকা উপরের দিকে উঠে আছে।মাথায় বাজ পড়ল।হয়ত এখনি চিল্লাবে চাচ্চুরটা অনেক বড় বলে।কিন্তু বিপদ হওয়ার আগে অন্য অনেক কথা বলে ভুলিয়ে দিলাম।যাক বাঁচা গেল।বড়ই বদমাইশ।এ বয়সে কি সব বলে।

এরপর আরেকদিন বাসায় ঢুকে দেখলাম আহনাফ মায়ের সাথে বসে ষ্টার প্লাসে হিন্দী সিরিয়াল।ডাকলাম ওরে। বললাম” তুই যদি ওগুলা দেখিস দেখতে দেখতে একদিন তুই মেয়ে হয়ে যাবি”।এ কথা শুনে আহনাফ কি যেন ভাবল।তারপর জিজ্ঞেস করল “আচ্ছা চাচ্চু মেয়ে হলে কি লিপিষ্টিক দিতে হবে?আমি কি উত্তর দিব বুঝলাম না।তবুও বললাম “লিপিষ্টিক দিতে হবে,রান্না করতে হবে,শাড়ী পড়তে হবে”আহনাফ বলল “তাহলে আমি আর হিন্দী নাটক দেখবো না”।কিন্তু পরের দিন দেখলাম মায়ের সাথে বসে দিব্যি হিন্দী সিরিয়াল দেখছে।আমি বললাম “কিরে তুই না হিন্দী নাটক আর দেখবিনা?
-আম্মু বলছে আমি মেয়ে হব না।

আহনাফের ছোট ভাই আহরার।ও হল নিরব ঘাতক।মুখে কম কথা বলে যা বলে হাতে।ওর জীবনের লক্ষ হল আমার ল্যাপটপ ভাঙ্গা।সেদিন ভাইয়্যার নম্বর থেকে ফোন আসল।রিসিভ করলাম আহারার বলছে “চাচ্চু তোমার ল্যাপটপ কোথায়?
-কেন চাচ্চু?
-আব্বুর ল্যাপটপ আছাড় দিছি এখন তোমারটা ভাঙ্গবো।
পরে ভাইয়্যার কাছে শুনলাম ভাইয়্যার ল্যাপটপ সে আছাড় দিয়ে ভাঙ্গছে ।এখন সে আমারটা খুজছে।ভাগ্যিস আমার ল্যাপটপ নিয়া আমি বের হইছিলাম।

আরেক পিচ্চির কথা বলি।আমার পাশের বাসায় থাকে।নাম ফাহিম।ইট দিয়ে হাতে মারলে কি হয় পরীক্ষা করতে গিয়ে সে নিজের ডান হাত থেতলে দিছে।ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর ইনজেকশন মারার আগে এনেসথেসিয়া দিছে।সে ডাক্তারের কাছ থেকে এসে আমাকে বলছে “আমি রোবট হয়ে গেছি?আমি বললাম “কেমনে?
সে বলল “তুমি আমাকে চিমটি কাট আমি ব্যাথা পাবনা” সে নিজে নিজের হাতে চিমটি কাটল।আর অনেক হাসল।তার হাসি দেখে আমি নিজেও হাসি চেপে রাখতে পারলাম না।

আহরার আর আহনাফ বাসায় ক্রিকেট খেলে।সেখানে আহরার শুধুই বোলার আরা আহনাফ ব্যাটসম্যান।আহনাফের সেখানে ১৫ বলেও সেঞ্চুরি আছে।নিয়মটা বেশ সুন্দর।খাটে উঠলে ৬,টেবিলে লাগলে ৪,ফ্যানে লাগাইতে পারলে ৮,আর ওয়ারড্রবে লাগলে ২।শচীনও সেখানে বাচ্চা।আহনাফের সেখানে লিটল মাষ্টার।আর আহরার বেচারা খালি বল করে।তার কোন প্রতিক্রিয়া নাই।চুপ থাকে।কিন্তু কোন ঝামেলা হইলে ঝগড়াঝাটি না করে ডাইরেক্ট ব্যাট দিয়ে বড় ভাইকে মাইর।তারপর মায়ের আচলে গিয়ে বলে “আম্মু ভাইয়্যা ও আবুট (আউট) হইছে কিন্তু দিচ্ছে না” আমার ভাবী আম্পায়ারের মত আহনাফকে আউট দেয়।তারপর আবার খেলা শুরু হয়।

আহাররকে প্রায় মজা করে মুসলমানি করার ভয় দেখাই।ভয় দেখালে তার প্রথম উত্তর "তোকে মুসলমানি করাবো"
ভয়ে সে হাসপাতালে যায় না।যে মুসলমানির কথা বলে তারে ডাইরেক্ট মাইর।স্কুলে যাওয়ার কথা বললেও ক্ষেপে যায়।অবশেষে সে একদিন বলল “আমি বড় হইলে মুসলমানি করে ভাইয়্যার মত একটা লুঙ্গি পড়বো,তারপর স্কুলে যাব”


আমার একটা বদঅভ্যাস আছে।ওদের জন্য চকলেট,চুইনগাম যাই নি না কেন প্রথমে লোভ দেখিয়ে কান ধরিয়ে উঠবস করাই।এর ফলও একদিন পাইছি।আহনাফ চানাচুর খাচ্ছিল।আমি বললাম “চাচ্চুকে একটু দে” আহনাফ বলল “তাহলে কান ধরে ১০বার উঠবস কর” আমার আর কিছু বলার রইলনা।

চকলেটের জন্য কান ধরা অবস্থায় দুই ভাই।

এসব বাচ্চা আছে বলেই শান্তি লাগ।আমি বাসায় ফেরার আগে যদি তারা ঘুমিয়ে যায় মনটা খারাপ লাগে।একদিন বাসায় না থাকলে বাসাটা কেন যেন চুপ থাকে।সময়ও কাটে না ঠিকমত।শেষবার যেবার বাসায় যাই।সারারাত জার্নি করে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ছিলাম।আহনাফ জোর করে আমাকে তুলে দিল।আমি অনেক্ষন পর উঠলাম।যতক্ষন উঠিনি ততক্ষন আমার পাশে শুয়ে ছিল।ভাবতেই অনেক ভাল লাগে।

বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে আমার আগের দুটি লিখা।
বাচ্চা কাচ্চারা শ্রদ্ধেয়।

বাচ্চাকাচ্চারা শ্রদ্ধেয়,তাদের শ্রদ্ধা করুন।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১২ রাত ২:৪১
৪০টি মন্তব্য ৩৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×