হয়তো আমার কবিতা
তোমাদের চূড়ান্ত বিজয়ের সেই প্রত্যাশিত
মুহূর্তকে ছুঁতে চেয়েছিল;
এতদিন তাই সেই আসেনি।
হয়তো আমার কবিতা
তোমাদের ঝঞ্চাক্ষুব্ধ জীবনের অন্তর্হিত
আনন্দকে ছুঁতে চেয়েছিল;
এতদিন তাই সে আসেনি।
হয়তো আমাদের কবিতা
তোমাদের ঘরে ফেরা উৎফুল্ল রাত্রির
আবেগের সাথী হতে চেয়েছিল;
এতদিন তাই সে আসেনি।
এতদিন সে ছিল শুধুই
তোমাদের অন্তহীন যাযাবর-যাতনার
একজন আহত দর্শক।
হয়তো আমার কবিতা
বৃন্তচ্যুত পুষ্পের অব্যক্ত চাহনির সাথে
তোমাদের শরণার্থী মুখশ্রীকে
চায়নি মেলাতে।
হয়তো সে ভেবেছিল তোমাদের ঘরে ফেরা
হাসি মুখগুলোকে স্বগৃহে স্বাগত জানাবে;
এতদিন তাই সে আসেনি।
হয়তো সে দেখতে চেয়েছিল
যুদ্ধশেষে ফিরে পাওয়া তোমাদের
মুক্ত প্যালেস্টাইন।
হয়তো সে উৎকর্ণ ছিল
নবজাতকের সাহসী কান্নার জন্য,
পূর্ব-পুরুষের মতো যে ভূমিষ্ঠ হবে
তার জন্মভূমির নিজস্ব মাটিতে।
হয়তো আমার কবিতা
যুদ্ধ, মৃত্যু আর অন্তহীন রক্তপাত শেষে
চেয়েছিল অনন্ত শান্তির সরোবরে
প্রেমিক পদ্মের মতো সুগন্ধ ছড়িয়ে ফুটতে।
হায়, যারা তা হতে দেয়নি,
যারা ভূলুণ্ঠিত করেছে আমার কবিতার
এই নিষ্পাপ স্বপ্নকে, যারা আমার
কোমল হৃদয়ের বৃন্ত থেকে ছিনিয়ে এনেছে
এই পাথর-কঠিন পঙিক্তমালা,
আমার ঘৃণায় যেন লেখা হয় তাদের বিনাশ,
যেন সাঙ্গ হয় অসুরের পালা।