একটি সভ্যতার বিচার করা হয় নাকি তার বই, গ্রন্থাগার থেকে। আর গ্রন্থাগারের বইগুলো যারা লেখেন? সেইসব সাহিত্যিক, কবি, গল্পকার যদি লেখক, গবেষক হিসেবে সমৃদ্ধ না হন তবে সেই সভ্যতাকে কোনভাবেই সমৃদ্ধ বলা যায় না।
একজন গল্পকারকে আপনি বিচার করবেন কী দিয়ে?
তাঁর সুন্দর চেহারা?
তাঁর সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে ’কুল’ সাবজেক্টে পড়াশোনা?
তাঁর বনেদি বংশ পরিচয়?
জানি ‘না’ বলছেন।
আদতে তাই হওয়া উচিত।
তাঁর সমৃদ্ধ লেখাই পাঠকের কাছে অমূল্য রত্নাকারে উপস্থিত হবে।
পাঠক গোগ্রাসে গিলবে তাঁর লেখা।
বর্তমান সময়ে দূর্জনের মুখে একটা বদনাম আছে। ভালো লেখা, ভালো বই বাঙলা সাহিত্য পাচ্ছে না।
হাজার হাজার নিম্নমানের (বিষয়টা আপেক্ষিক) লেখার ভিড়ে মধ্যম মানের অনেক লেখাই আছে নিঃসন্দেহে।
কিন্তু ইতিহাসে ঠাঁই করে নেবার মতো লেখা?
সেই অমূল্য রত্নটিকে যে সাগর সেচে মুক্তো কুড়িয়ে আনার মতো করে খুঁজে নিতে হবে।
এসময়ের তেমনি একজন লেখক ’এশরার লতিফ’।
অনলাইনে তাঁর লেখা পড়ে ভক্ত বনে গিয়েছিলাম। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি পাঠক হিসেবে যারা তাঁর বই পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই করে বলবেন তাঁর লেখনির ধারের কথা।
অপেক্ষায় ছিলাম তাঁর মুদ্রিত বইয়ের। ’স্ফটিক বাড়ি ও অন্যান্য গল্প’ বহু আকাঙ্ক্ষিত সেই বই।
আদতেই কি বহু আকাঙ্ক্ষিত?
১৮টি গল্প নিয়ে এ সঙ্কলনের প্রতিটা গল্পই অনন্য। পড়ার পর অদ্ভুত এক তৃপ্তি আপনাকে ঘিরে রাখবে।
কিন্তু আমার প্রত্যাশার সীমাকে দুমড়ে মুচড়ে হাল্কের মতো গুড়িয়ে দিয়েছে ‘স্ফটিক বাড়ি’ গল্পটি।
যখন এই পোস্ট লিখছি তার বেশ কয়েক ঘন্টা আগে বিশেষ এই গল্পটি পড়ে শেষ করে নিজের কাজ ফেলে ‘থম’ ধরে বসেছিলাম কিছুক্ষণ।
কোনভাবেই যেনো ঘোর কাটছিল না!
তখন মনে হলো আমার প্রিয় সহব্লগারদের সাথে এই লেখকের বইয়ের পরিচয় করিয়ে দেই। কীভাবে একটি লেখা অনন্য হয়ে উঠে তার উপস্থাপনের গুনে পাঠক পড়ে দেখুক।
এএকটি বই নিয়ে লেখবো কিন্তু তার কোন সমালোচনা থাকবে না তা কী করে হয়?
জি, বলছি।
সমস্যাটা বইয়ে নয়। রকমারিডটকমে বইয়ের প্রথম গল্পটি দেয়া আছে ‘পার্থিব’। কিন্তু বইয়ে চূড়ান্ত প্রুফ রিডিং সম্পন্ন লেখা ছাপা হলেও প্রাথমিকভাবে জমা দেয়া গল্পটিই প্রুফ রিড না করেই রকমারিতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশাকরি বাঙলাদেশে এই বইয়ের প্রকাশক
সুপ্রিয় সহব্লগার নীল সাধু দাদা বিষয়টি দেখবেন।
কলকাতার ‘সৃষ্টিসুখ’ থেকে প্রকাশিত এই বইটি সম্পর্কে যা পেয়েছে তা তুলে ধরলাম নিচে।
কলকাতা বইমেলা ২০১৮-য় সৃষ্টিসুখ থেকে যে গল্প সংকলনগুলো প্রকাশ পেতে চলেছে, তার মধ্যে নিঃসন্দেহে একটি উল্লেখযোগ্য বই এশরার লতিফের ‘স্ফটিক বাড়ি ও অন্যান্য গল্প’।
এশরারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ প্রায় এক দশকের, সৃষ্টি গল্প প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। ওঁর স্ফটিক বাড়ি গল্পটি ছিল পুরস্কারপ্রাপ্ত গল্পের তালিকায়। তারপর এই লেখকের গল্প আমরা নিয়মিত পেয়েছি পত্রিকার পাতায়। তবে এপার বাংলায় প্রথম বই হয়ে বেরোতে চলেছে সেইসব গল্প।
বইটি সম্পর্কে বৈষয়িক তথ্য:
বইয়ের নাম: স্ফটিক বাড়ি ও অন্যান্য গল্প
লেখক: এশরার লতিফ
প্রকাশক : নীল সাধু, এক রঙ্গা এক ঘুড়ি
প্রথম প্রকাশ : বাংলাদেশে বইমেলা ২০১৮
মূল্য: ৩০০ টাকা
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৪