মা আজ দিনগুলো কেমন জানি, স্বপ্নেরা উবে গেছে, চেনা ঘ্রাণ , চেনা বিছানা, প্রতিটা কোনে তোমার রেখে যাওয়া স্মৃতি গুলি বড্ড জ্বালাতন করে। গেট খুলে বাসায় ঢুকতাম তুমি এগিয়ে আসতে, আসছিস বাবা, হুমম, হাত মুখ ধ্যে খেয়ে নে। আমি তো আসি মা বারবার কই আর তো এগিয়ে আসোনা , বলনা বাবা আসছিস, কেন মা এটা কি খুব কঠিন বলা, কেন এতটা বোবা হয়ে গেলে। পৃথিবীর শব্দ গুলো কেন এত তাড়াতাড়ি হরিয়ে গেল তোমার কাছ থেকে।
তবুও আমি আসব বারবার- যে দুয়ার খুলে তুমি বের হতে আমি দুয়ারে কড়া নাড়ব। কত হিসেব বাকি ছিল সেগুলো আর মেলেনা, মিলবেওনা কোনদিন। আমার উচ্ছ্বাসের কোলাহল থেমে গেছে, বৈশাখ, ফাগুন, বর্ষায় যখন সবাই উৎসবের রঙে ভেসে যাবে, তখনো আমি আসব তোমার কাছে, আমার উৎসব তুমি, আমার জীবনের রঙ তুমি, যা কোনদিন মলিন হবার নয় মা।
কত কথা জমে ছিল, কিছু স্বপ্ন ছিল আমাদের ছোট্ট চারটা দেয়াল জুড়ে, আমি আর কোনদিন সে স্বপ্ন আঁকতে পারব না। আমার রঙ তুলি সব ধুসর হয়ে গেছে। বেছে বেছে মাছ গুলো ফ্রিজে রেখে দিতে, আমি বাড়ি আসলে রান্না হত, ফ্রিজটা খালি পড়ে আছে, রান্না ঘরটা শুকনো, হাড়িপাতিল গূলো খরখরে , এ ঘরে আর উনুন জ্বলেনা মা, আমার নিঃশ্বাস ভারি হয়ে যায়, কোন মায়ার চাদরে মুড়ে রেখে গেছো হারিয়ে যেতে চেয়েও আবার ফিরে আসি।
আঙুল গুলো কাঁপে, যে ছোট্ট হাতের আঙুল ধরে এ পৃথিবীর বুকে আমায় চলতে শিখিয়েছিলে, আজ সে হাতে তোমার কবরের মাটি ছুঁয়ে যাই, তুমি দেখতে কি পাও মা, আমার ঝাপসা চোখে আমি তোমায় দেখিনা, শুধু বুকের ভিতর অস্থিরতার জলে আমি ডুবে যাই। এতটা গহীনে ডুবে যাই- পৃথিবীর কোন মায়া আমায় খুঁজে পায়না।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:৪৮