বাজরঙ্গি ভাইজান যে দেখে সে কাঁদে, কারণ সালমান খান এবং একটি ছোট শিশু হারশালি মালহোত্রা'র (মুন্নী) অসাধারণ রসায়ন! কি অপূর্ব!
.
শিশুটির নিষ্পাপ সরল চাহনিতে যেমন মুগ্ধ দর্শক তেমনি রাজনের মায়া ভরা সরল চাহনিতে বাকরুদ্ধ হয়েছিল বাংলাদেশ,কিন্তু ফিল্মটির বিপরীতে অবস্থান শিশু রাজনের, দুই শিশুর দুই নিয়তি!
.
আবেগপ্রবণ দৃশ্যে কাজ করার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে হারশালি বলেছিল, ‘সালমান চাচ্চুর চোখে জল দেখলেই আমি কেঁদে ফেলতাম। তিনি যতোবার কেঁদেছে, আমিও ততোবার কান্না করেছি। তাকে মারামারি করতে দেখলেও মন খারাপ হতো! তখনও কেঁদে দিতাম।’
আর রাজনের চোখে যখন কান্না,মুখে আর্তনাদ তখন আরো নতুন উদ্যমে হায়ানার স্টিম রোলার তার দিকে তেড়ে আসছিল, ভিডিও ধারণকারী উল্লাস করে বলতেছিল, ফেসবুকে ভিডিও ছেড়ে দিয়েছি এখন সবাই দেখবে....
.
একটা নাটক/ফ্লিম হোক না সেটা অভিনয়, সদ্য স্কুলে যাওয়া বাচ্চা ছেলেটাও জানে এটি অভিনয় বৈকী কিছু নয়, তবুও এরি মাঝে হাসি কাঁদি ইত্যাদি,
.
মানুষ এমনি আবেগী যে মাঝে মধ্যে যুক্তি তর্ক মানে না, হৃদয় আসলেই অনেক কোমল, সে কোমল হৃদয়টি একদিন পাষাণ হয়ে উঠে, সামান্য একটি শিশুর অভিনয়ের দুঃখ যে মানুষটির চোখে জল আনে সে মানুষ নামক অন্য কেউ একটি শিশু রাজনকে পিটিয়ে মেরে পেলে কিভাবে?
.
শিশু জিহাদ যখন গর্তে পড়ে গেছিল, মনে হচ্ছিল পুরো বাংলাদেশ নলকূপে পড়ে গেছিল, সমগ্র দেশ জুড়ে চলছিল পার্থনা, সেই বাংলাদেশে আবার প্রায় আধাঘন্টা ভিডিও করে হৈ হৈল্লর করতে করতে এত সুন্দর কিউট একটি শিশুকে জ্যান্ত মেরে পেলল! আবার বলল পানির বদলে ঘাম খা!
.
বিশ্বাস করুন আর নাইবা করুন! রাস্তা ঘাটে কিছু সভ্য মানুষ প্রতিনিয়ত শিশুদের দিয়ে ফুটবল প্যাকটিস করে, কারণে অকারণে লাথি,চড়, থাপ্পড় দিয়ে পৈশাচিক আনন্দ নেয়,দানবের মার খেয়ে ও অসহায় শিশুগুলো হাসে, কারণ তারা পথশিশু, তাদের কাঁদতে নেই, তাদের উদরে ক্ষুধা....
.
প্রতিদিন কত খবর আসে পত্রিকার পাতা ভরে, জীবন পাতার অনেক খবর রয়ে যায় অগোচরে, মুখে আমরা নিজেদের যত বাজরঙ্গি ভাইজানের ভাব দেখায় না কেন, আমাদের পাশের শিশুটির প্রতি আমাদের আচরণ প্রমাণ করবে আমরা কি বাজরঙ্গি ভাইজান অথবা রাজন হত্যাকারীর দলে!
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:১৭