আমার ছোট মামা আব্দুর রহমান যে সন্দ্বীপ থেকে এসএসসি পাশ করেছে কোন রকম ঠেলে ঠুলে ৩.৫ এর চেয়েও কম জিপিএ নিয়ে !
.
শুনেছি পড়া ফাঁকি দেওয়ার জন্য সে চৌকির নিচে পালিয়ে থাকতো ! পড়া ফাঁকি দেওয়ার জন্য এমন কোন কাজ নেই সে করতো না !
.
পরে সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ভর্তি হয় সেখান থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ২০০৬ সালে এ+ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাংকিংয়ে চান্স পেলে ওখানে পড়াশুনা শুরু করে !
.
পরিবেশ সৎসঙ্গ এবং একটু অনুপ্রেরণা মানুষের জীবনকে অনেক চেঞ্জ করে দিতে পারে এমন আরো অনেক উদাহরণও আছে !
.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাসে পড়তো মুসলিম ভাই ! আমার ক্যাম্পাস নামে আমাদের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকা ছিলো সেই সুবাধে গল্পটির সাথে পরিচয় !
.
গ্রামে গেলে এক ছেলে ভাইয়ের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতো ! সে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনেছে কিন্তু তা কি তা জানতো না !
.
মুসলিম ভাই তাকে সামান্য একটু পথ দেখিয়ে দিলো তারপর আর তাদের দেখা হয়নি !
.
ভাই এম.এ. করার দীর্ঘ দিন পর ক্যারিয়ারের সন্ধানে আইন কোর্সে ভর্তি হলেন সেখানে একদিন একটি ছেলে এসে তার পা ধরে সালাম করে বললো তার দেখানো পথে সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগ থেকে পাশ করে আজ এডভোকেসি প্যাক্টিস করছে !
.
মানুষ কখনো হারে না সে হয়তো জিতে নয়তো অন্যদের সফলতার পথ দেখানোর যোগ্যতা অর্জন করে ৷
.
আমি হেরেছি এর অর্থ আমি এই কারণে হেরেছি তুমিও একই কারণে হারতে পারো সুতরাং তুমি বরং ঐ পথে যাও তাতে সফলতার সম্ভবনা বাড়াবে !
.
হেরেও সফল হওয়া যায় ! যুগে যুগে এমন অনেক উদাহরণ আছে আমি আমার প্রিয় উদাহরণটি নিম্নে উল্লেখ করেছি,
.
১৯৯২ সালের অলিম্পিক আসর টা হয়েছিল বার্সেলোনাতে।
ডেরেকরেডমন্ড ছিলেন দৌড়বিদ। সে আসরে ৪০০ মিটার দৌড়ের হিটে সেরা টাইমিং করে সেমিফাইনালে উঠেছিলেন তিনি। ছিলেন সোনার পদকের অন্যতম দাবিদার। শুরুটা একটু পিছিয়ে থেকে করলেও ২৫০ মিটারে গিয়ে শুরু করেন গতির ঝড়। হঠাৎ ডান পায়ের পেশিতে টান পড়ল। রেডমন্ড গতি কমাতে বাধ্য হলেন। থমকে বসে বসলেন ট্র্যাকে। ততক্ষণে শেষ হয়ে গেছে দৌড়। শেষ হয়ে গেছে স্বপ্ন।
.
কিন্তু রেডমন্ড আবারো উঠে দাঁড়ালেন। ওই অবস্থায় হাঁটাই সম্ভব না, কিন্তু এক পায়েই লাফিয়ে লাফিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে লাগলেন। কিন্তু এই চেষ্টার তো কোনো মানেই হয় না। একজন কর্মকর্তা এগিয়ে এলেন সাহায্য করতে, ট্র্যাক থেকে নিয়ে যেতে। কিন্তু তিনি নাছোড় বান্দা, দৌড় শেষ করবেনই রেডমন্ড! সে সময় সাদা টি-শার্ট, ক্যাপ পরা মাঝবয়সী এক ভদ্রলোক গ্যালারি থেকে ছুটে এলেন।
.
নিরাপত্তাকর্মীরা আটকাতে চাইলে সেই ভদ্রলোক কী যেন একটা বলতেই পেয়ে গেলেন ছাড়। হঠাৎ রেডমন্ড শুনলেন পাশ থেকে চেনা এক কণ্ঠস্বর, ‘ডেরেক ভয় নেই, আমি আছি তোমার পাশে!’ সাদা টি-শার্ট পরা ওই ভদ্রলোক ছিলেন রেডমন্ডের বাবা। বাবাকে পেয়ে কান্নার দমক আর আটকে রাখতে পারলেন না রেডমন্ড!
.
নিজেকে কিছুটা সামলে বাবার এক কাঁধে ভর দিয়ে বললেন, ‘আমাকে দ্রুত ৫ নম্বর লেনে নিয়ে যাও, আমি দৌড়টা শেষ করব বাবা, দ্রুত দ্রুত।’ কয়েকজন কর্মকর্তা এগিয়ে এলেন পিতা-পুত্রকে এই ‘অর্থহীন’ দৌড় থামানোর জন্য। কিন্তু তাঁরা হাল ছাড়লেন না। ডেরেক খোঁড়াতে খোঁড়াতে এভাবেই ছুঁয়ে ফেললেন ফিনিশিং লাইন। বাইরের কারও সাহায্য নিয়ে দৌড়ানোয় ওই দৌড়ে তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই ‘অযোগ্য’ দৌড়টাই অলিম্পিক ইতিহাসের সেরা মুহূর্তগুলোর একটি হয়ে আছে।
.
সেদিন পুরো গ্যালারি উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান আর অভিবাদন জানিয়েছিল তাঁকে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সেবার ৪০০ মিটার দৌড়ে কে সোনা জিতেছিল, কে পেয়েছিল রুপা বা কে ব্রোঞ্জ জিতেছিলএসব কি কেউ মনে রেখেছে? উঁহু, রাখে নি। সবাই মনে রেখেছে ‘বাতিল’, ‘অযোগ্য’ সেইরেডমন্ডকেই!
.
তুমি বাতিল অযোগ্য ব্যর্থ হতে ভয় পেয়ো না বন্ধু বরং চেষ্টা না করা কে ভয় পেয়ো ! বড্ড ভয় পেয়ো ! মনে থাকবে ?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৩৮