somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্টুডেন্ট অব দি ইয়ার

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি একটি ছোট খাট চাকরি করলেও একটু বড় বড় মানুষদের সাথে কাজ করতে হয়! বলা যায় মিটিং করাটা মূল কাজ!
.
প্রথম যখন জয়েন করি তার কিছুদিন পর আমাকে পাঠানো হলো একটি গার্মেন্টসের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরের সাথে মিটিং করার জন্য! ভদ্রলোক বাঙ্গালী ছিলেন!
.
তার সাথে মিটিং করার আগে আমাকে বেশ কিছুদিন তালিম দেওয়া হলো একজন মালিক পর্যায়ের লোকের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়!
.
কথা শুরু করলাম! স্যারের রুমে আরো আট দশ জন হাতের উপর হাত রেখে ইয়েকে গার্ড দিলে যে অবস্থা হয় সেই অবস্থায় একটু সামনে ঝুঁকে নুয়ে আছেন! কিছুক্ষণ পর ইয়েস স্যার! ইয়েস স্যার! করছেন তারা আর কোন কথা বলছেন না তেমন!
.
আমিও তাদের দেখা দেখি ইয়েস স্যার! ইয়েস স্যার! বলে যাচ্ছিলাম যখন আমার সাথে তিনি বসলেন! তার কার্ড নিলাম ওখানে লেখা একটি বিষয় থেকে অনার্স মাস্টার্স! জিজ্ঞেস করে বসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়? উনি হ্যাঁ বলার পর অফিসিয়াল আলোচনা ভুলে আমরা শুরু করলাম, আবদুর রব হলের পিছনের ঝর্ণাটা কি এখনো আছে?
.
এরপর যতবার দেখা হয়ে ততবার করেছি কতশত খেজুরে আলাপ!
.
যার দুই মিনিট সময় হয়না আমার সাথে দেখা করার জন্য সে সময় জ্ঞান ভুলে স্মৃতি রোমন্থন করছে!
.
আমরা যে কাজটা করি তা হলো বিভিন্ন গার্মেন্টসগুলোর সাথে বিজনেট ডেবলপমেন্ট করা! এই সেক্টরে একটা বিজনেস ডেবলপমেন্ট করতে মাসের পর মাস মেইল চালাচালি থেকে শুরু করে দফায় দফায় মিটিং মিছিল চলতেই থাকে!
.
তবে বলে রাখি কেডিএস এক্সেসোরিজ এই সেক্টরে অন্যতম! যতবড় গার্মেন্টস কোম্পানি হোক না কেনো তাদের সাথে কিছু না কিছু বিজনেস থাকবেই এমন!
.
তো আমি একটি বিজনেস ক্রিয়েট করেছি নিজের চেষ্টায় সেটা হলো ইউনিভোগ গার্মেন্টস লিঃ সিইপিজেড! এর সাথে মিটিং ওর সাথে চ্যাটিং! কোন কাজ ই হচ্ছে না! যেই না একজনকে বললাম চিনা চিনা লাগছে! আপনি কি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট? হ্যাঁ বলার পর সেদিন থেকে অর্ডার শুরু ধুম ধারাক্কা.....!
.
আমি বেশ কিছু একাউন্ট নিয়ে কাজ করি! সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ই গার্মেন্টস লিমিটেডের ডিরেক্টর বিজয় লিঙ্গমের সাথে মিটিং করার জন্য পাঠালো আমাকে! সে ফরেনার(বিদেশী) ! তো আমি সকাল থেকে রেডি করছি কি বলবো, Actually i come here with a hope to develop a new business with your reputed company.....ব্লা ব্লা ব্লা!
.
আমার স্যারের ধারণা আমার ইংলিশেও নাকি চট্টগ্রামের টান আছে এই কারণে নাকি আমার অনেক মিটিং ফ্রুটফুল হয়না! মনে মনে বলি, মূল ব্যাপার হলো ডিরেক্টর সাব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের না! নাইলে.......!
.
আজ গেলাম কেনাপার্কে একটা কাস্টমস সমস্যা নিয়ে!ওদের কোন কমার্সিয়ালকে আমি চিনি না! এনি হাউ কমার্সিয়ালের যে হেড তার রুমে গেলাম! সমস্যা বললাম! চরম ব্যস্ত মানুষ! উপায় না পেয়ে একটা ভিজিটিং কার্ড চাইলাম! ওখানে লেখা ক্যামেস্ট্রি! এক ফাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যামেস্ট্রি? তারপর মিলে যাওয়ায় সুখ দুঃখের কথা নিয়ে ফাক্কা আধা ঘন্টা আমাদের বড় ভাই ছোট ভাইয়ের ক্যামেস্ট্রি চললো! ঐ দিকে অন্যান্যরা সমস্যা সমাধান করছে! ডিপার্টমেন্ট হেডের নির্দেশ!
.
আমার স্যার এর আগে সকালে আমাকে বলে দিয়েছে আমি জানি তুমি এই সমস্যা নিজের যোগ্যতাই সমাধান করতে পারবে না! তবুও দেখি পারো কি না!
.
সম্প্রতি ডেনিম এক্সপার্টে একটি মিটিংয়ে গেছি! পাত্তা নাই! কেমনে কেমনে মিলে গেলো বস ও চঃবিঃ তারপর আবিষ্কার করলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি একটি দীর্ঘ গিরিপথও আছে যা আমি ১৯৯৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত চঃবিঃতে বসবাস করেও আবিষ্কার করতে পারিনি!
.
আমাকে খোঁজ খবর নিয়ে জানাতে হবে! তার বায়ারের শখ গিরিপথ জয় করা! আমাকেও তাদের সহায়তা করতে হবে! চলছে ঘন্টাব্যাপী আড্ডা!
.
এমন অনেক ঘটনা স্বাক্ষী দীর্ঘ এক বছর কারণ আমার কাজ ই এটা! ফলোয়াপ করা! রিলেশন করা! ঐ রিলেশন না আবার!
.
এমনও দেখেছি সময়ের কারণে ৫০ বছর ফূর্তিতে যেতে পারেনি ভদ্রলোক! সিক্স ডিজিটের স্যালারি! গাড়ি বাড়ি বেশ করেছে! সব আছে শুধু সময় নেই! আমার মুখে সে গল্প শুনছে ঐ দিন কি হয়েছিলো! আমি গল্প বলছি ঐদিকে আবেগে তার চোখ ছলছল করছে!
.
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিও অদ্ভুত এক টান আছে! মায়া আছে! সেই টান বুঝতে হলে তোমাকে এসব কিছু ফেলে আসতে হবে বহুদূর!
.
জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় সেই দিনগুলো! তুলনাহীন! এটা আগে বড় ভাইয়েরা বললে বিশ্বাস করতাম না! মনে মনে হাসতাম! এখন অনুভব করি!
.
বিলিভ মি ছাত্র জীবনে সব মানুষ ই সেরা ছাত্র! স্টুডেন্ট অব দি ইয়ার হতে রেজাল্ট লাগে না রে পাগলা! কিছু বন্ধু ই যথেষ্ট!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৪৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×