পৃথিবীতে সবচেয়ে সম্মানজনক পেশা হলো মুচি কারণ সে উপার্জনের জন্য মানুষের পা ধরতে ও দ্বিধা করে না!
.
আমরা যে মুখে মুখে চিল্লাচিল্লি করে বলি কোন কাজ ই অসম্মানজনক নয় ঠিক সে মুহূর্তে কোন মুচি তা বাস্তবায়ন করে দেখায়!
.
পৃথিবীর সবচেয়ে অহংকারবিহীন মানুষটিও সেই মুচি! জুতোর ধূলো মোচতে মোচতে কখন যে তার অহংকারও ধূলোয় মিশে যায় সে নিজেও জানতে পারে না!
.
মাত্র কয়েক বছর আগে একজন মুচি থেকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা!
.
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন যাকে বলা হয় সর্বকালের সেরা শাসকদের মধ্যে অন্যতম তার বাবা মুচি ছিলেন! তিনি মুচির ছেলে বলে গর্ববোধ করতেন!
.
ভারতের লোকসভাব হরিয়ানা রাজ্যের সংসদ আম্বালা আসনের বাবা এখনো মুচির কাজ করে! ছেলে বাবাকে এবং বাবা ছেলেকে নিয়ে গর্ব করেন!
.
আপনি হয়তো ভাবছেন আবদুর রব শরীফ ভাই এতোকিছু থাকতে মুচি নিয়ে লেখা শুরু করলেন! আসলে সত্যি কথা বলতে ওদের নিয়ে লেখার মতো যোগ্যতা আমার নেই!
.
শুনেছি আমাদের সমাজে নিচুজাত বলে তাদের বিবাহের কোন নথি বা রেজিষ্ট্রেশন হয় না!
.
আমাদের সন্দ্বীপে দেখেছি, এলাকায় নির্বাচন এলে প্রার্থী যাকে সামনে দেখে তাকে অকাতরে একশ পাঁচশ টাকার নোট বিলি করে! তো লঞ্চঘাট থেকে নামতে গিয়ে প্রার্থীর জুতোয় ময়লা লাগে! সে গেলো মুচির কাছে! মুচি সুন্দর করে পালিশ করে দিলো! পালিশ করার পর সে পাঁচশ টাকা বের করে দিয়ে বললো, চাচা মার্কাটা মনে রাখিয়েন! তো মুচি খুশিতে গদগদ হয়ে পুরো জুতো এক্সট্রা বোনাস হিসেবে সেলাই করে পুরনো জুতো বানিয়ে দিলো!
.
পাকিস্তানের একজন মুচি মুনাওয়ার শাকিল যার পাঁচটি বই পুরস্কৃত হয়েছে সে কি না বাপের পেশা ছাড়বে না বলে মনস্থির করেছে! তারা দুটো কাজ, কবিতা লেখা আর জুতো সেলাই করা!
.
৮৫ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা কাজী আব্দুল বারিকের কথা মনে আছে? যার ইচ্ছা ছিলো মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট নয় অন্তত কফিনের সাদা কাপড়ের উপর জড়ানো থাকবে একটি লাল সবুজের পতাকা! খুব আক্ষেপ করে বলেছিলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা নই, একজন মুচি!
.
আমরা গর্ব করে বলতে চাই, আপনি মুচি নন বরং দূর্নীতিগ্রস্থ মানুষদের গালে একটি চপেটাঘাত!
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১৭ রাত ১২:৩০