somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

করিমের মার শান্তি নাই!

২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাত্রাতিরিক্ত গরম! পাতলা টি শার্ট ভিজে গায়ের সাথে লেগে গেছে অন্যদিকে বাসে বের হওয়ার জায়গাও নেই! ঠাসাঠাসি! তার মধ্যে পাশের সিট থেকে একজন উঠে নেমে গেলে টাই টুই পরিহিত আরেকজন বসেছে!
.
গলার সাথে টাই এমন করে বেঁধেছে আল্লাহ না করুক কেউ লেঞ্জা ধরে জোরে টান দিলে গলায় ফাঁস পড়ে যাবে!
.
ভদ্রলোককে দেখে আরো গরম বেশী লাগছে আমার! বুঝতে পারলাম শীতের মতো গরমও সংক্রামক!
.
সকল প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়ে একমাত্র বাসে সেই লোক খোশ মেজাজে আছে! মাথার ঘাম টাই বেয়ে পড়ছে!
.
কিছুক্ষণ পর জিজ্ঞেস করলো ভাইকে কোথায় যেনো দেখছি মনে হচ্ছে! হারিয়ে যাওয়া নেতা ফিরে এলে আগের দিনে একটি স্লোগান দিতো কর্মীরা 'কে বলে ভাই কোথাও নাই, ভাই আছে বাংলায়' তেমনি স্লোগান শুনতে ইচ্ছে হলো হঠাৎ
.
তারপর এদিক ওদিক তাকিয়ে আরেকটু আরামছে বসে বললো, ভাই আপনি বিয়ে করেছেন? দুঃখের কথা আরো দুঃখের সহিত বললাম, না তো ভাই! তারপর 'আমি পাইলাম! আমি ইহাকে পাইলাম!' মর্মে বলতে থাকলো, 'এখন তো সময় সঞ্চয় করার! দুটি টাকা জমিয়ে ফেলার! তুমিও একা সে ও একা কি হবে পকেটে টাকা না থাকলে ভবিষ্যত প্রজন্মের!'
.
আমি মেট লাইফ ইন্সুরেন্সে আছি! মেট লাইফ ইন্সুরেন্সে একটা পলিসি করে নিতে পারেন! আপনার নাম্বারটা দেন! সময় করে একদিন আপনার সাথে কথা বলে সব বুঝিয়ে বলবো!
.
এই নেন আমার কার্ড! আল্লাহর রহমতে ফ্লাট কিনেছি একটা! আফমি প্লাজায় দুটো দোকান ভাড়া! ব্লা ব্লা ব্লা......! থামিয়ে বললাম ভাই আস্তে আশে পাশে দুদক কিংবা ইনকাম টেক্স কর্মকর্তা থাকলে আপনার খবর আছে!
.
সেদিন তাকে দেখলাম চট্টগ্রাম দুই নং গেইট পাবলিক টয়লেট থেকে বের হচ্ছে সেখানেও টাই পড়া!
.
হান্ড্রেড পার্সেন্ট প্রফেশনাল! তো ইন্সুরেন্স কোম্পানীর এক ভদ্রলোকের বউ বললো তুমি আমাকে কেমন ভালবাসো? সে বললো, টাইয়ের মতো! বউ বললো, ওটা আবার কেমন? সে বললো, 'একবার গলায় লাগাবো আর কখনো খুলবো না! কখনো হতাশ হলে সিলিং ফ্যানের সাথে ওটা গিট্টু দিয়ে.....!'
.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে পড়তাম! অনার্সের রেজাল্ট দিলো! মাথায় চাকরি ঘুরছে! পার্ট টাইম চাকরি! হঠাৎ এক বড় ভাই ফোন দিয়ে বললো, তোমার জন্য ফুল টাইম জব একটা পেয়েছি! পার্ট টাইম করে কি হবে!
.
অফিসে ডাকলো! চেয়ারে বসে আছি অন্যদিকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে! সংবর্ধনা শেষে একটি ফাইল বের করলো! পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্সের এমডি থেকে শুরু করে তার টিমের কোন জন গত মাসে বিশ হাজার টাকা পুরস্কার পেয়েছে তার ছবিও দেখালো!
.
বুঝলাম পপুলার ইন্সুরেন্স নিউজের পত্রিকার কাটিংগুলো কেটে ফাইল করা ওনার কাজ!
.
তারপর বিভিন্ন মেয়াদী বীমা থেকে শুরু করে জীবনে বীমা যে কি প্রয়োজন তার উপর লেকচার দিয়ে বললো চাকরি হয়ে গেছে! তোমার কাজ হবে পাঁচজন ক্লায়েন্ট খুঁজে বের করা বাকীটা আমি দেখবো!
.
আমার মতো অনেকে এসেছিলো ওখানে! ঐদিন সংবর্ধনা ছিলো ওনাদের! নাস্তা করে বের হওয়ার পর দেখি জুতো খুঁজে পাচ্ছি না! সাদা কেটস পড়ে গিয়েছিলাম! বের হওয়ার সময় লোকে এত দ্রুত বের হয়েছিলো যে জুতোগুলো সাদা থেকে কালো হয়ে গেছে! কাইন্দা বাঁচি অবস্থা!
.
বাসায় আসার পর আব্বু জিজ্ঞেস করে, জবের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দিছে? অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার আগামীকাল দেখাচ্ছি এখন টুল টেনে বসেন আপনাকে আজকে চার কিস্তি বীমার প্লানটা বুঝিয়ে দিই! মাথায় রাখবেন! :p
.
ইন্সুরেন্স চ্যাপ্টারের আগে এমএলএম চ্যাপ্টারে ছিলাম অনেক দিন! এগুলো ছাত্র জীবনের এক একটি শিক্ষা!
.
সবচেয়ে বড় কথা পকেটে টাকা না থাকলে জীবন আপনাকে অনেক কিছু করতে তাড়া দিবে!
.
রোদ ঝড় বৃষ্টি অপমান ক্লেশ কষ্ট সবকিছু ভুলে হয়তো কোন একদিন নিজেকে আবিষ্কার করবেন মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলছেন, 'কাইত অই খাইলে চিৎ হই মরে, লাফাইয়া খাইলে ঝাঁপাইয়া মরে, করিমের মার শান্তি নাই! আমাগো ঔষুধ ছাড়া উপায় নাই! আলমের এক নম্বর ইদুরের ঔষুধ!
.
এক সময় অনেক পেশাকে ঘৃণার চোখে দেখতাম! এখন সব পেশাকে সম্মান করি!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:১৬
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×