মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহ আলমকে দেখানোর পর আম্মুকে রেখে এলাম চট্টগ্রাম মনরোগ ক্লিনিকে,
.
কত দিন থাকতে হবে জানি না তবে ওখানে দেখলাম অন্যান্য মহিলাদের সাথে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ুয়া এক ভদ্রমহিলা প্রায় সাত মাস ধরে আছেন!
.
প্রতি দিন থাকা খাওয়া সেবাসহ আড়াই হাজার টাকা হিসেব করলে ওনার কেবিন খরচ এসেছে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা,
.
এই মুহুর্তে আপনি সুস্থ সুন্দরভাবে আচরণ করছেন এর মানে প্রতিদিন কমপক্ষে আপনার তিন হাজার টাকা ব্যয় কমে গেছে!
.
একটা সময় ছিলো আমি সকাল বিকাল রোজ করে ঔষুধ খাওয়াতাম যেখানে থাকিনা কেন দিনশেষে আমাকে বাসায় ফিরতে হতো,
.
মনোরোগ ক্লিনিকগুলো অদ্ভুত
.
কেবিন চুজ করতে গিয়ে দেখলাম কি স্মার্ট মহিলারা চুপচাপ বসে আছে যেনো তাদের পৃথিবী থমকে আছে! কোথাও যেনো এক বোবা কান্না!
.
স্বজনরা চাইলেও সপ্তাহ অন্তর প্রতিদিন যোগাযোগ করতে পারে না! আমি বাসায় আসলাম যখন দেখলাম আম্মুর রুমটা খালি পড়ে আছে আমারও তখন মনে হলো এই পৃথিবীর পরতে পরতে কেবলি শূন্যতা বিরাজমান!
.
ক্লিনিকে একটা ছেলেকে দেখলাম রোজ করে ক্রিকেট প্যাকটিস করতেছে! তার হৃদয়েও ক্রিকেট খেলা করছে!!!
.
সবচেয়ে যে বিষয়টা হৃদয় বিদারক সেটা হলো প্রত্যেকটা মানসিক ক্লিনিকের ঠিক সামনের রাস্তায় কিছু মানুষ বসে থাকে! স্বজনরা ওদের খোঁজ নেয়না কিংবা বুকে আগলে রাখার মতো ওদের কেউ নেই,
.
যারা বলে পৃথিবীতে টাকার কি দরকার তারা আসলেই শিশু কারণ টাকা না থাকলে আপনি শান্তিতে মরতেও পারবেন না!
.
যে লোকটা ক্যান্সারের কেমোথেরাপির সাথে লড়াই করে বেঁচে আছে সে অনেক ভাগ্যবান কারণ তার মতো অনেক মানুষ ক্যান্সার হয়েছে জেনেও চিকিৎসা নিতে পারছে না বরং দুই বেলা দু মুঠো খেয়ে আরো কিছুদিন বাঁচার জন্য রাস্তার মোড়ে শুয়ে ভিক্ষা করছে!
.
হয়তো এক সময় সব ইচ্ছে শেষ হয়ে গেলে তবুও মানুষের একটা শেষ ইচ্ছে থাকে আর কয়েক দিন একটু খেয়ে দেয়ে মরি!
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:০৬