ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৫ শুরু হতে এখনও সাত মাসের মতো বাকি। তবে ইতিমধ্যে ট্রফিটির বিশ্বভ্রমণ শুরু হয়ে গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ট্রফিটি গতকাল রাতে শ্রীলংকা হয়ে বাংলাদেশে আসে।তবে প্রদর্শনী শুরু হয় আজ। প্রথমে তা রাখা হয় মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে(সকাল ৯ টা থেকে ১০টা), সেখান থেকে তা যায় গণভবনে(১০টা থেকে ১২টা) এবং সবশেষে নগরীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে। এগুলোর মধ্যে কেবল শেরে বাংলা স্টেডিয়াম ও বসুন্ধরা সিটিতে ট্রফিটি সর্বসাধারণের জন্য আনা হয়।প্রদর্শনী শেষে ট্রফিটি আগামীকাল সকালেই ফিরে যাবে দুবাইয়ে।
গণমাধ্যমের সুবাদে বসুন্ধরা সিটিতে ট্রফিটির প্রদর্শনীর খবর পাই গতকালকে।খবর পেয়ে আমার মাকে ট্রফি দেখতে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে উনি বললেন যে, যাওয়া যায়।তো আমরা ট্রফি দেখার উদ্দেশ্যে উচ্চমূল্যে রিকশা ভাড়া খরচ করে দুপুর ১২ টার দিকে ফাঁকা রাস্তা দিয়ে বসুন্ধরা সিটিতে পৌঁছাই । সেখানে দেখি সারিবদ্ধ দু জোড়া চলন্ত সিঁড়ির সামনে জনসাধারণের প্রচণ্ড ভীড় ।এঁরা সবাই এসেছেন ট্রফি দেখতে।ভীড় ঠেলে সামনে এগিয়ে দেখি ট্রফিটি দেখার জন্য দুটি লাইনওয়ে রয়েছে। সারিপথগুলোর উভয়পাশে নিরাপত্তাকর্মীরা নিয়োজিত।তবে তখনও ট্রফিটি আসেনি বিধায় তাঁরা গণমাধ্যমের কর্মী ছাড়া আর কাউকে ট্রফির বক্স পর্যন্তই যেতে দিচ্ছিলেন না এবং সর্বসাধারণের ভীড় সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন। ট্রফি আসতে দেরি হচ্ছে দেখে মা আশেপাশের দোকানগুলোতে ঘুরতে গেলেন।যাই হোক, নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুক্ষণ পর ট্রফিটি আসতেই সর্বসাধারণের অনেকেই চিৎকারের মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে লাগলেন। উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি ভীড়ও বাড়তে লাগলো যা সামলাতে নিরাপত্তা কর্মীদের হিমশিম খেতে হয়।এই ভীড়ের মধ্যে ট্রফি দেখতে ঝামেলা হওয়ায় মা দোতালায় চলে গেলেন।সেখান থেকে তিনি আমাকে ফোন দিয়ে দোতালায় চলে আসতে বললেন যাতে ট্রফি দেখতে সুবিধা হয়। ফোন পেয়ে ভীড় ঠেলে দোতালায় গিয়ে মা 'আশেপাশেই আছেন' ভেবেই ট্রফি বরাবর দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে থাকলাম ।ফটোসেশন চলাকালেই মার ফোন পেয়েই মাকে খুজতে লাগলাম। উদ্দেশ্য ট্রফি ভালো করে দেখা। তবে মাকে যেখানে পেলাম সেখানে গিয়ে বুঝতে পারলাম যে আগের জায়গাটাই ট্রফি দেখার জন্য তুলনামূলকভাবে উপযুক্ত ছিলো ।যাই হোক, দোতালায় থাকাকালেই সর্বসাধারণের কয়েকজনকে ট্রফির কাছে যেতে দেখলাম।সেটা দেখে মাকে প্রস্তাব দিলাম ট্রফিটি কাছে থেকে দেখার জন্য। উনি এভাবে ট্রফি দেখার চেয়ে দোকানগুলো ঘুরে দেখাকেই প্রাধান্য দিলেন। অগত্যা আমাকেই ট্রফি কাছ থেকে দেখতে নীচতলায় নামতে হয়। সেখানে গিয়ে দেখলাম সারিপথদুটোর প্রত্যেকটিতে লোকজনগুলোর লম্বা সিরিয়াল।তবে এ সিরিয়ালে লোকজন লাইন নয়, প্যারাবোলা করে দাঁড়িয়েছিলো ।যাই হোক, আমিও একটা সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে গেলাম।দুর্ভাগ্যবশত, আমার সিরিয়ালটাই বড় ছিলো । সিরিয়ালে যতক্ষণ ছিলাম আমার কাছে মনে হচ্ছিল প্রতিটা মিনিট যেন ৬০ সেকেণ্ডের নয়, ৩০ সেকেণ্ডের। সিরিয়ালে দাঁড়ানো থাকতেই একজনকে নিয়ম ভেঙ্গে সিরিয়ালে দাঁড়াতে দেখলাম যার জন্য নিরাপত্তাকর্মীদের একজন অসন্তোষ প্রকাশ করেন। আমারও মনে মনে রাগ উঠেছিলো । যাইহোক আমার সামনের দু তিনজন লোক ট্রফিটির খুব কাছাকাছি থাকতেই কথা বলার জন্য মাকে আমার কাছে আসতে দেখলাম। তখন যে যায়গায় দাঁড়িয়েছিলাম সেখানে লোকজনের ভীড় ছিলোনা বিধায় সিরিয়ালে না থাকা সত্ত্বেও মাকে সাথে নিয়েই ট্রফিটির কাছে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম । এটার জন্য পরে নিয়ম ভঙ্গকারী লোকটার উপর মনে মনে রাগ হওয়ার জন্য অনুতপ্ত বোধ করলাম । যাই হোক ট্রফিটির কাছে গিয়েই ট্রফিটির ছবি তুললাম । ছবি তোলা শেষ করে, মাকে নিয়েই বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে মার্কেট থেকে বেরিয়ে গেলাম।
[আমি তেমন একটা লেখালেখি করি না বিধায় এই লেখায় কিছু অসঙ্গতি থাকতে পারে।পাঠকগণকে সেগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।]