somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কচকচে টেকার ঠিকুচি

২১ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে ৪২০ টাকা দিতে বাধ্য থাকবে”
কথাটার মানে এটি একটি প্রিন্টেড কাগজ। যখন এর বাহক মুল্য দিতে ইচ্ছুক এমন কারো কাছে উপস্থাপন করে বিনিময় দাবী করবে তখন সে কাগজ আর কাগজ থাকবে না সে টাকা/মানি/কারেন্সি হয়ে যাবে। যেমন মুদি দোকানে গিয়ে ১০০ টাকার নোট উপস্থাপন করে বিনিময় হিসাবে দুই লিটারের সেভেন আপের একটা বোতল দাবী করলেন(যার দাম ১০০ টাকা) মুদি দোকানদার ঐ প্রিন্টেট কাগজের বিনিময়ে তা দিতে বাধ্য থাকবে।

এ টাকা ঔরফে প্রিন্টেট কাগজের কোন ইনটেনসিক ভ্যালু নেই। যদি থাকত তবে ছিঁড়ে গেলে/পুড়ে গেল/ডুবে গেলে/ময়লা লাগলে/গু লাগলেও এর নিজস্ব দাম থাকত। একশত টাকা কেজি দরে কাগজ হিসাবে বাজারে বিক্রি করলেও ১০০ টাকা পাওয়া যেত। সেক্ষেত্রে চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে ৪২০ টাকা দিতে বাধ্য থাকিবে লেখার দরকার হত না। প্রিন্টেড কাগজ টাকায় রুপান্তরিত হয় অনডিমান্ডে অর্থাৎ যখন টাকাটা আপনার ড্রয়ারে তখন সেটা শুধুই কাগজ কিন্তু যখন ড্রয়ার থেকে বের করে মাছওয়ালাকে দিলেন তখন সেটা ইনটেনসিক ভ্যালু ছাড়াই শুধুমাত্র আস্থায় কারেন্সিতে রুপান্তরিত হল কারন মাছওয়ালার আস্থা আছে ঐ প্রিন্টেট কাগজে যে সে যখন ঐ টাকা মুদি দোকানদার কে দিয়ে বিনিময়ে সমমূল্যের চাল দাবী করবে মুদি দোকানী তাকে চাল দিয়ে দেবে।

ইনটেনসিক ভ্যালু কি? গোল্ড কয়েন/সিলভার কয়েন যার অর্ন্তনিহিত নিজস্ব দাম রয়েছে। এটাই ইনটেনসিক ভ্যালু। তাই যে আমলে গোল্ড কয়েন ব্যবহার করা হত সে আমলে এমনতর কথা লেখার কোন দরকার হত না। এ আমলেও গোল্ড কয়েন সিলভার কয়েন ব্যবহার করলে এমন কথা লেখার দরকার হবে না বা টাকার বিপরীতে সমমূল্যের গোল্ড এ্যাসেট ব্যাকআপ রেখে টাকা ছাপালেও এমনতর কথা লেখার দরকার হবে না।

ব্যাকআপ হিসাবে ডলার রেখে এমনতর কথা লিখে কাগজকে টাকায়/মুদ্রায়/মানি/কারেন্সিতে রুপান্তর করা মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চুরি।

মনেকরি আপনার এক বিঘা জমি আছে যা আপনার সম্পদ। তা ছিঁড়ে গেলে/পুড়ে গেল/ডুবে গেলে/ময়লা লাগলে/গু লাগলেও তা আপনার সম্পদ।
এ সম্পদ আপনি বিক্রি করে বিনিময়ে কতকগুলো কাগজের নোট পাবেন বা কম্পিউটারে টাকার সংখ্যা পাবেন।
টাকা গুলো প্রকৃত প্রস্তাবে সম্পদ নয় কারন ভিজে গেলে বা পুড়ে গেলে আপনার টাকা শেষ।
আবার ২০০০ সালের ১০ টাকায় এক কেজি চাল পাওয়া যেত আজ ৬৫ টাকা লাগে।
এক আউন্স গোল্ড ২০০০ সালে এক আউন্স ছিল আজও এক আউন্স আছে।
২০০০ সালের এক বিঘা জমি আজো এক বিঘা জমিই আছে কিন্তু ২০০০ সালের ১০ টাকার ভ্যালু আজকের ৬৫ টাকার মানে রুপান্তরিত হয়েছে। সম্পদ হলে তো এমন হওয়ার কথা ছিল না।

আর এ ঠগবাজির মুলে ঐ কথাটা আছে “চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে ৪২০ টাকা দিতে বাধ্য থাকবে”। ব্যাকআপ হিসাবে ডলার রেখে টাকা ছাপাতে সমস্যা হল ডলার একটি ফিয়াট কারেন্সি যার বিপরীতে শুধুমাত্র আস্থা ছাড়া আর কোন এ্যাসেট ব্যাক নেই। রাজা কনডম যেমন চাহিদার প্রেক্ষিতে উৎপাদিত হয় ডলার ও তেমন সারা দুনিয়ায় ডলারের চাহিদার প্রেক্ষিতে ছাপা হয়!!!!!!!!!!!!!!
মুদ্রাস্ফিতি/মূল্যস্ফিতি ঘটেছে। আপনার বেতন ১০০ থেকে ২০০ টাকা হয়েছে। আপনি তো খুব খুশি। আনন্দে বগল বাজাচ্ছেন। আপনি এক ভরি গোল্ড বেচে সিন্দুকে বা ব্যাংকে যে ৪০০০০ হাজার টাকা রেখেছিলেন তার প্রকৃত মূল্য কিন্তু ২০০০০ টাকায় রুপান্তরিত হয়েছে সংঙ্গে সংঙ্গে। বুঝতে পারছেন না? যখন ৪০০০০ হাজার টাকা সিন্দুকে রেখেছিলেন তখন ঐ টাকায় ২০টা ২০ কেজির ছাগল কিনতে পাওয়া যেত আর এখন ঐ ৪০০০০ হাজার টাকায় ১০টা ২০ কেজির ছাগল কিনতে পাওয়া যায়। কি আপনার টাকা কর্পূর নাকি???? মান উড়ে অর্ধেক হয়ে গেল যে??????

বাকী ২০০০০ হাজার টাকা কোথাই গেল? কোথাই আর যাবে আপনার কাছ থেকে চুরি করা হয়েছে আপনার অজান্তে। প্রকৃত সম্পদ সৃষ্টি ব্যতিরেকে ২০০০০ টাকার নতুন নোট তৈরী করে বাজারে ছাড়া হয়েছে। আপনি টের ও পান নাই। এর চেয়ে আর বড় চুরি কি মানব সভ্যতার ইতিহাসে আগে কখনও হয়েছে?????? এটাকে বৈধতা দেওয়ার জন্যই লিখতে হয় চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে ৪২০ টাকা দিতে বাধ্য থাকিবেন।
বিশ্বাস/আস্থা চলে গেলেই জিম্বাবুয়ের ডলারের মত টয়লেট পেপার হয়ে যাবে আপনার টাকা।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:০৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×