প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে শৈশবের বিটিভির কথা মনে পড়ে-
'সুপ্রিয় দর্শকমণ্ডলী, এখন আপনাদের জন্য রয়েছে অমুক পরিচালিত পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি অমুক, শ্রেষ্ঠাংশে রয়েছেন জসিম, শাবানা, রাজীব, দিলদারসহ আরো অনেকে।
সেইসময়ের বিজ্ঞাপন বিরতি অনেক দীর্ঘ হতো। আমরা গুনতাম- ৩১ নাম্বার চলছে, ৩২..। বিজ্ঞাপন বিরতিগুলোও ছিলো বেশ মজার। কয়েকটা বিজ্ঞাপনের উদাহরণ দিতে পারি, যেমন-
'শরীফ ভাই, আপনার দোকানে কি খাবার স্যালাইন আছে? প্রত্তুত্বরে দোকানদার বলতেন-
'আছে মানে, smc র ওরস্যালাইন আছে...। হৃষ্টতার দীর্ঘ হাসি হেসে তখন তিনি বলতেন;
'আহ, জীবনডা বাঁচাইলা, জলদি তিন প্যাকেট দেও'।।
এই ফাঁকে কেউ একজন আবার টিনের এড নিয়ে হাজির। গানের সুরে নায়িকা বলতেছেন-
'একশর্তে করতে পারি বিয়া, আমাগো ঘরবানাও যদি এপোলো টিন দিয়া'
পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর সেই এডটার কথা মনে আছে?
'আমার স্বামী তো একটা কিস্তি দিয়াই মইরা গেছে, তয় আমি কি পুরা টাকা পামু?
-অবশ্যই পাবেন....
কবিরাজ বেসে এবার একজন হাজির। আর তার সেই নাটিকা-
সব গাছ কাইট্টা ফালাইতাছে, আমি ঔষধ বানামু কি দিয়া'
সন্ধ্যা থেকেই অপেক্ষায় থাকা ; কখন বাজবে আটটা। তখন রাত আটটার সংবাদের পর আলিফ লায়লা দেখাতো। এই ফাকে প্যারাশুট নারিকেল তেলের এড দেখা হয়ে যেত- 'আমার মন এখন হারায়' গানের সুরে সুরে।
কিংবা তিব্বত কদুর তেলের সেই এড- 'চল্লিশ বছর ধরে মাখছি, মাথা ঠান্ডা রেখে আজো কাজ করছে'!
এসবের সব আজ স্মৃতি। কালের বিবর্তনে বদলে গেছে মিডিয়া আর বিজ্ঞাপন জগত। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া আর রুচিশীল ও সময়োপযোগী সব বিজ্ঞাপন। তবে এতসবের মাঝেও আমরা একটুখানি ফিরে দেখতে চাই অতীত। আফসোস- সময় আমাদের জন্যে দাঁড়িয়ে নেই।
হায় বিটিভি! হায় প্রিয় শৈশব! হায় উৎকন্ঠা !
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:৩৪