আজকাল হিড়িক পড়ে গেছে এ কথা বলার যে বিজ্ঞান যা আজ বলছে ১৫০০ বছর আগে কুরআন তা বলে গেছে।শুধু কুরআন নয় অন্য ধর্ম গ্রন্থের ব্যপারেও এ ধরণের কথা বলা হচ্ছে৤ কিন্তু আমার মনে হয় এ দ্বারা ধর্মের আরো ক্ষতি করা হচ্ছে, কারণ-

বিজ্ঞান হচ্ছে আপেক্ষিক একটি জ্ঞান,বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে আজ যা সত্য কাল তা মিথ্যা হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বলা হয় ধর্মের বাণী হল চিরন্তন সত্য। কাজেই একটি চিরন্তন সত্যের সাথে একটি পরিবর্তনশীল সত্য কিভাবে মিলানো যায়?

অনেক আগে মানুষ জানতো সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘৃরে, আর এখন মানুষ জানে পৃখিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরে।অর্থাৎ বিজ্ঞানের তত্ত্ব একেবারে উল্টিযে গেছে, আবার বর্তমানে যা বিশ্বাস করা হচ্ছে ভবিষৎ তা হয়তো পরিবর্তন হয়ে যাবে।কাজেই এখন বিজ্ঞান অনেক বিষয়ে যা বলছে কুরআন ১৫০০ বছর আগে তা বলে গেছে যদি এ কথা বলেন আর ১০০ বা ৫০০ বছর পরে বিজ্ঞান যদি বলে তখনকার তত্ত্বটি ভুল ছিল তখন কুরআনের আয়াতের সাথে বিজ্ঞানের কথাকে আজ যারা মিলাচ্ছেন তারা কি বলবেন?

একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
ছোট বেলায় আমার মনে আছে বিভিন্ন আলেম কুরআনের( লুকমান ৩১-৩৪ "....তিনিই জানেন যা গর্ভশযে আছে.....".)আয়াত উল্লেখ করে বলতেন, গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে তার খবর কেবল আল্লাহ জানেন মানুষের পক্ষে এটা জানা সম্ভব না। তখন সব হুজুর বা আলেমকে এই একই কথা বলতে শুনতাম।ডাক্তাররাও সে রকমই বিশ্বাস করতেন। এখন আলট্রাসনোগ্রাম আবিস্কার হওয়ার ফলে শিশু জন্ম নেবার আগেই মানুষ জানতে পারছে শিশুটি ছেলে, না মেয়ে। এখন জাকির নায়েক (লেকচার সমগ্র-১, পৃ ২২৯)সাহেব এ আয়াতের ব্যখ্যা দিচ্ছেন এভাবে যে -আল্লাহ আসলে এ আয়াত দ্বারা গর্ভের শিশুর স্বভাব চরিত্রের কথা বলেছেন, লিঙ্গের কথা বলেন নি। তখন কিন্ত কোন হুজুর বা আলেমকে এ আয়াতটিকে এভাবে ব্যখ্যা করতে শুনিনি। বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে একদিন যদি গর্ভের শিশুর স্বভাব চরিত্রের কথা বলা যায়, তখন জাকির নায়েক সাহেবরা কি বলবেন ?

তাই বলি কোন ধর্ম গ্রন্হের বাণীর সাথে বিজ্ঞান কে মিলাতে গেলে বিভ্রান্তি কমবে না, বরং বাড়বে। ধন্যবাদ৤