আমার বড় বোন (ইমিডিয়েট বড়) অত্যন্ত নারীবাদী মানুষ, সেই সাথে বলা যায় পুরুষ বিদ্বেষী। সারাক্ষণই তার মুখে শুনবেন পুরুষদের দোষ ত্রুটি আর অযোগ্যতার কথা। আমি যদি কোন ভুল করি তবু তার ভাগ জুটবে পুরুষ জাতির কপালে। পুরুষদের স্বভাব ভাল না, পুরুষদের রুচি ভাল না, পুরুষরা অযোগ্য ইত্যাদি, ইত্যাদি।
যাহোক একদিন তার ইচ্ছা হল রুপচাঁদা মাছ খাবে। যতই পুরুষ বিদ্বেষী হোক তারপরও বড় বোন বলে কথা। অগত্যে বাজার গিয়ে দরদাম করে ১ কেজি রুপচাঁদা কিনে আনলাম। মাছ দেখে আপা জিজ্ঞাসা করলো কত করে নিল? বললাম, ৮০০ টাকা কেজি। শুনে আমার মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো, কিছু বলল না। বুঝলাম এর মধ্যেও আমার কোন ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে এবং মনে মনে পুরুষ জাতকে উদ্ধার করছে।
দু’তিন দিন পর দেখলাম আপা বাজার থেকে মাছ নিয়ে এসে আমার দিকে তাকিয়ে বিজয়ীর হাসি হাসছে। কিছুক্ষণ পর হাসির রহস্য খোলসা হল। আম্মাকে গামলায় মাছ ঢেলে দেখাচ্ছে আর বলছে, “দেখেন আমি রূপচাঁদা কিনে এনেছি মাত্র ৩৫০/- কেজি।” কথাটার উদ্দেশ্য বুঝলাম । কথাটির তরজমা এরকম আরকি - “বোকা পুরুষ ক‘দিন আগে যে মাছ ৮০০/- টাকায় কিনে এনেছে, বুদ্ধিমতি মহিলা সেই একই মাছ আজ কিনে এনেছে ৩৫০/- টাকায়। ” বাজারে মাছের দাম উঠা নামা করে এটা ঠিক, তাই বলে দু –দিনে মাছের দাম এত কমে গেল! কেমন জানি একটা খটকা লাগলো। কাছে এসে মাছটা ভালভাবে দেখতেই রহস্যটা পরিষ্কার হয়ে গেল।
আমি আপার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম –”এটা রুপচাঁদা?”
আমার দৃড়ভাবে জিজ্ঞেস করা দেখেই হয়তো একটু নরম গলায় বলল –”রূপচাঁদা তবে একটু অন্য জাতের।”
রাগ সামলিয়ে বললাম –” এটা রূপচাঁদা না, এটা হচ্ছে পিরানহা, দক্ষিন আমেরিকার এক হিংস্র মাছ। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এ মাছকে রূপচাঁদা বলে বিক্রি করে। এ মাছ খাওয়াও ঠিক না।”
কিন্তু মাছওয়ালা যে বললো ………………..
কিছুক্ষণ মাছের দিকে তাকিয়ে থাকল। নিজের ভুল বুঝতে পারলো, না পারলো না ঠিক বুঝলাম না।
”ব্যাটা মাছওয়ালা……. আসলে পুরুষ মানেই মিথ্যাবাদী……….” .বিড়বিড় করতে করতে মাছগুলো নিয়ে গিয়ে ময়লা ফেলার বালতিতে ফেলে দিয়ে আসলো।
ব্লগেও ছোট আপার মত দু একজন ব্লগার দেখতে পাই। তাই ঘটানাটি শেয়ার করতে ইচ্ছে করলো।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:০৯