আজ ২২ শ্রাবণ। বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ভাষার শ্রেষ্ঠ স্রষ্টা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৫তম প্রয়াণ দিবস। কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে ১২৬৮ সনের ২৫ বৈশাখ বাংলা সাহিত্যের এই দিকপাল জন্মগ্রহণ করেন। আজ থেকে ৭৫ বছর আগে বাংলা ১৩৪৮ সনের ২২ শ্রাবণ ঠাকুরবাড়ির শ্যামল প্রাঙ্গণে বর্ষণসিক্ত পরিবেশে তিনি পরলোকগমন করেন।
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কনিষ্ঠ পুত্র রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের সব শাখাতেই বিচরণ করেছেন। ‘গীতাঞ্জলি’ লিখে ১৯১৩ সালে জয় করেছিলেন সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার। ১৯১৫ সালে তিনি ব্রিটিশ সরকারের ‘নাইট’ উপাধি লাভ করেন। তবে ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ওই উপাধি ত্যাগ করেন।
.
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে কবি, নাট্যকার, কথাশিল্গী, চিত্রশিল্গী, গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক, ছোট গল্পকার ও ভাষাবিদ। এক কথায় সার্বভৌম লেখক তিনি।
বাংলা সাহিত্য-সংস্কতির বিকাশে যার অফুরন্ত অবদান। সেই কবি প্রকৃতিকে কাঁদিয়ে যখন ইহধাম ত্যাগ করেন সে দিন শোকার্ত বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, বিশ্বকবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে লিখেছিলেন :
‘দুপুরের রবি পড়িয়াছে ঢলে অস্তপারের কোলে,
বাংলার কবি শ্যাম বাংলার হৃদয়ের ছবি তুমি চলে যাবে বলে শ্রাবণের মেঘ ছুটে এলো দলে দলে।’
.
৮০ বছরের জীবন সাধনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জন্ম এবং মৃত্যুকে একাকার করে তুলেছিলেন অমরতার শ্বাশত বার্তায়। তাই নিজ জন্মদিন নিয়ে তিনি লিখেছিলেন- ‘ওই মহামানব আসে
দিকে দিকে জাগে রোমাঞ্চ
মর্তধূলির ঘাসে ঘাসে’।
.
কলকাতায় জন্ম হলেও পৈতৃক জমিদারি দেখভালের জন্য তিনি বাংলাদেশে এসেছেন বহুবার। কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও নওগাঁর পতিসরে জমিদারবাড়ি আজো তার স্মৃতিচিহ্ন বহন করছে। বাংলাদেশের কৃষির সাথে রয়েছে রবীন্দ্রনাথের আত্মিক সম্পর্ক। সমাজের অসঙ্গতি নিয়ে লিখেছেন প্রচুর। তার কবিতা, গান ও গল্প ছুঁয়ে গেছে পাঠক হৃদয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষাকে নিজস্ব ভঙিমায় উপস্থাপন করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।
.
কবিগুরুর ৭৫তম প্রয়াণ দিবসে স্বরণ করছি বিনম্র শ্রদ্ধায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৩৭