বাঙালি হিসেবে নির্ভুল ইংরেজি বলা কিংবা লেখার আগে নির্ভুল বাংলা বলা এবং লেখাটা জরুরি। ডিয়ার প্যারেন্টস, ইংরেজি মাধ্যমে সন্তানকে পড়ানোর পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে যেভাবে ইংরেজি শেখাচ্ছেন সেটা গর্বের নয়।
মাস তিনেক একটা কল সেন্টারে চাকরি করেছিলাম। সেখানে একজন সহকর্মী ছিলেন ইংরেজি মাধ্যমে পড়া। তার হাঁটাচলা, কথা বলায় ছিলো পশ্চিমা ছাপ। মনে পড়ে, অফিস শেষে একদিন লালন শুনছিলাম বলে ভদ্রলোক আমাকে ক্ষ্যাত, ভিনগ্রহের প্রাণি বলে টিটকারি করেছিলো। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ; সে লালন, সত্যজিৎ, উত্তম কুমার, সুকুমারদের চেনে কিনা!? সে চেনে না এবং না চেনাটাকেই স্বাভাবিক, উন্নত মনে করছে।
বলছি না যে ইংরেজি জানা কিংবা বিদেশী সংস্কৃতি জানা খারাপ। সেটা অবশ্যই ভালো। তবে কথা হচ্ছে, সেই ভালোতে পৌঁছানোর আগে নিজের শেকড় জানতে হবে। নিজেকে না জেনে অন্যকে জানতে যাওয়া ভালো তো নয়ই, অপরাধও বটে।
বরিশাল স্বাধীনতা পার্কে একদিন বিকেলে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সামনে থেকে একটা ফুটফুটে বাচ্চা হেঁটে যাচ্ছিলো। পেছনে তার মা। বাচ্চাটা পড়ে গ্যালো। মা বলে উঠলেন ; স্ট্যান্ড আপ অ্যান্ড ওয়াক অ্যাগেইন। কাম অন মম। কাম অন। বাঙালির উচ্চ অপকাঙ্খা দেখে খুব আফসোস করেছিলাম সেদিন। এখনও করি।
বিশ্বাস করেন ; এত সমৃদ্ধ একটা ভাষা, এত সমৃদ্ধ একটা সংস্কৃতি এড়িয়ে আপনারা অন্য ঝিনুকে মুক্তো খুঁজে বেড়ালে আমার খুব কষ্ট লাগে। নিজেকে ছোট মনে হয়। একটু ভাবুন। একটু বুঝুন। নিজের কাছে নিজেকে আর কতো ছোটো করবেন?
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৫০