somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈশ্বরের দুয়ারে গালিব আর খৈয়ামের আরজি

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



স্থান: রোজ হাসর ময়দান

দোজাহানের বাদশাহ, রাজাধিরাজ, মহামহিম ঈশ্বর আরশে আজিমে সমাসীন। বেবাক আদম সন্তানের হাতে তাদের আমলনামা ধরায়া দেয়া হইতেছে। খোদা তাআলা স্বয়ং উপস্থিত থাইকা সব কিছুর তদাকি করতেছেন।

এমন সময় ফিরিশতারা দুই আদমিকে টেনে হিঁচড়ে ঈশ্বরের সামনে নিয়া আসলেন। ঈশ্বরের পায়ে সেজদাবনত হইয়া ফিরিশতারা জানাইলেন,
'হে ঈশ্বর আপনার এই দুই নাদান বান্দা তাদের আমলনামা গ্রহণ করিতেছে না। আপনার কাছে নাকি তাদের ব্যক্তিগত আরজি আছে।'
ঈশ্বর তাদের আরজি জানানোর অনুমতি দিলেন।

এই দুই বান্দার একজন ওমর খৈয়াম, আরেকজন মির্জা গালিব।

ওমর খৈয়াম শুরু করলেন,
"হে মহান ঈশ্বর, আমার আমলনামা নেয়ার আগে আমি আপনার কাছ থেকে কৈফিয়ত দাবি করতেছি।" নাদান বান্দার এহেন উক্তি শুনে ফেরেশতারা চমকায়া উঠলেন। কিন্তু ঈশ্বর তারে চালায়ে যাবার অনুমতি দিলেন।

অনুমতি পাইয়া ওমর খৈয়াম শুরু করলেন। তিনি তার জীবদ্দশায় লেইখা যাওয়া করুণ আকুতির একখান রুবাইয়াৎ তেলাওয়াত করলেন। যার বাংলা করলে দাঁড়ায়

ওগো, আমার চলের পথে তুমি
রাখলে খুঁড়ে পাপের গহর
ব’ইয়ে বিপুল সুরার লহর
ক’রলে পিছল ভুমি!

এখন আমি ঠিক যদি না চ’লতে পারি তালে
শিকল বাঁধা চরণ নিয়ে প্রারব্ধের ওই জালে
ব’লবে না ত’ ক্রুব্ধ অভিশাপে-
পতন আমার হ’লো নিজের পাপে!


খৈয়ামের রুবাঈয়াতের পর থমথমে পরিবেশ। কিন্তু মহামতি ঈশ্বর বিচলিত হইলেন না। তিনি স্মিত হেসে গালিবের দিকে তাকালেন। তার আরজি শুনতে চাইলেন।


মীর্জা গালিব ত্যাঁদড় আদমি। তিনি কইলেন, "আমার পাপের হিসাব নিয়েন না খোদা"
ফেরেশতাগ এইবার ভিমরি খাবার পালা। তারা জিগাইলেন, ক্যান?
গালিব সোজা সাপ্টা জওয়াব দিলেন,
কত না করা পাপের হাহাকার দিলে লয়া ঘুরতাছি, এর থেইকা বড় সাজা আর কি হইবার পারে?

খৈয়ামের রুবাইয়্যাতখানার অনুবাদ নরেন্দ্র দেবের বই থেকে নেয়া
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৩:২৫
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×