somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমাজে প্রচলিত কিছু কুসংস্কারঃ - দুরীভূত করতে সচেতনতার প্রসার অতীব জরুরী।

২৭ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জমজ কলা ভক্ষণে জমজ সন্তান হয়ঃ
সাধারণতঃ দেখা যায়, প্রচলিত উক্তিটির প্রতি অতি বিশ্বাসী কতেক লোক হালাল অর্থ দিয়ে ক্রয়কৃত কলা হতে জমজ কলা গুলো নিজেও খায়না, অপরকেও খেতে দেয়না। কোন কোন ক্ষেত্রে বৃদ্ধমহিলা, যাদের সন্তান প্রসবের যোগ্যতা নেই, তাদেরকে খেতে দেওয়া হয় বা না খেয়ে ফেলে দেয়া হয়। অন্যদিকে এই প্রচলিত কথার কারণে শ্রমের বিনিময়ে অর্জিত অর্থ দিয়ে কলা বিক্রেতা জমজ কলা সহ কলার ছড়া কিনে আনে। আর খুচরা বিক্রি করতে গিয়ে তাকে এ কলাগুলো বাদ দিয়ে বিক্রি করতে হয়। এতে কলা বিক্রেতা সহজেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অথচ বহুল প্রচলিত এ কথাটি বিজ্ঞান বা সামাজিক ক্ষেত্রে তো কোন ভিত্তি নেই শান্তির ধর্ম ইসলামেও এই কুসংস্কারের কোন স্থান নেই। অপরদিকে এই কুসংস্কারে নিমজ্জিত হয়ে মানুষ জমজ কলা না খেয়ে ফেলে দিয়ে অপচয় করছে। অন্যদিকে বিক্রেতাও ক্ষতিগ্রস্থ হবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। আর ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে বলা যায় যে, “অপচয়কারী শয়তানের ভাই”

ডিম খেয়ে পরীক্ষায় গেলে গোল্লা পাওয়া যায় বা অমঙ্গল হয়ঃ

মানুষ যদিও কুসংস্কারে নিমজ্জিত হয় ধর্মের অপব্যাখ্যার কারনে। সমাজে প্রচলিত এই কুসংস্কার “ডিম খেয়ে পরীক্ষায় গেলে গোল্লা পাওয়া যায় বা অমঙ্গল হয়” এরুপ কুসংস্কারের ধর্মীয় দিক থেকে কোন ভিত্তি নেয়।
আসলে দেখতে গেলে ডিম একটি পুষ্টিকর ও হালাল খাদ্য। এতে পরীক্ষায় বা অন্য কোন কাজে অমঙ্গল হওয়ার কথা শরীয়ত সমর্থন করে না। অতএব, এটি কুসংস্কার মাত্র। হ্যা কারো জন্য শারিরীক ভাবে প্রযোজ্য না হলে অন্য কথা।

চালনী হতে খেলে বিয়ে ঘুরেঃ
অনেক সময় দেখা যায়, কারো জন্য বধু নির্ধারণে বিলম্ব হলে ছেলেকে এ বলে দোষারোপ করা হয় “মনে হয় চালনী হতে কিছু খেয়েছে, না হয় তোমার বিয়ে ঠিক হচ্ছে না কেন”। আবার অনেকে সন্তানদেরকে চালনী হতে কিছু খেতে দেখলে বলে “ওখান থেকে কিছু খেওনা বিয়ে ঘুরবে”। আসলে চালনী হতে কিছু খেলে বা আহার করলে বিয়ে ঘুরার বা বিলম্ব হওয়ার কোন কারণ হতে পারে না। শান্তির ধর্ম ইসলামে উক্তিটির কোন যুক্তি বা দলিল নেই। তবে হ্যা যত্রতত্র হতে আহার না করে নিয়ম মত আহার করা ভাল।

রবিবার বাঁশ কাটলে বাঁশঝাড় উজাড় হয়ে যায়ঃ
এ ধরণের একটি গুজব বিভিন্ন গ্রামে পরিলক্ষিত হয়। ফলে রোববার কোন মৃত মানুষকে দাফন করতে হলে অনেকে বাশ দিতে চায় না। বাশঝাড় উজাড় হয়ে যাওযার ভয়ে। এমণ ধ্যাণ- ধারণা সত্যিই মুসলিম সমাজে কলঙ্কজনক। কেননা আল্লাহতায়ালা সকল উদ্ভিদ সৃষ্টি করেছেন মানুষেরই কল্যানার্থে। কুরআনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর সব কিছু তোমাদেরই কল্যাণার্থে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাছাড়া উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতেও এ ধরণের কোন উদ্ভট বিধান আছে বলে আমাদের মনে হয় না।

বুধবার গোলা হতে ধান বের করা ঠিক নয়ঃ
আমাদের গ্রাম বাংলা সমাজে এই কুসংস্কারের প্রভাব অনেক। গোলা হতে বুধবার ধান নামানো উচিত নয় বলে মনে করে থাকে অনেকে। বিক্রি করার জন্য বা ধান ঘষানোর জন্য প্রয়োজনে আগের দিন গোলা হতে ধান নিয়ে রেখে দেয়। একেবারে না থাকলে, কারো থেকে নিয়ে ঐদিন খোরাকী চালায়। তারপরও গোলা হতে ধান বের করেনা বুধবার দিন। আসলে এগুলো সম্পুর্ন অযৌক্তিক ও কুসংস্কার মাত্র যার ধর্মীয় দিক থেকে বিন্দুমাত্র ভিত্তি নাই।

বাম চোখ কাঁপলে মুছিবত আসেঃ
আসলে বাম চোখ কেঁপে উঠা দুর্বলতা বা অন্য কোন রোগের উপসর্গ হতে পারে যা হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রামান্য। কিন্তু আমাদের মাঝে প্রচলিত যে বাম চোখ কাঁপলে নাকি মুছিবত আসে যেটার কোন দিক থেকে যুক্তিসঙ্গত নয়। রোগ জাতীয় কোন মুছিবত ধরা যেতে পারে। তবে প্রাকৃতিক কোন মুছিবত আসার ধারণা অমূলক ও ভিত্তিহীন।

হাতের পাতা চুলকালে টাকা আসেঃ
আরো একটি ভিত্তিহিন বিশ্বাস আমাদের প্রচলিত যে “হাতের পাতা চুলকালে টাকা আসে” যেটিও এক ধরণের অর্থহীন প্রবাদ মাত্র। যা দুই চার জন বসে ফালতু আড্ডা বাজী করার সময় এগুলো বলা হয়। ধর্ম বা জ্ঞান-বিজ্ঞানে এর কোন ভিত্তি নেই। তবে এভাবে হলে, যার হাতে পাতায় খস পাচড়া হয়ে ঘন ঘন চুলকাতে থাকে, চুলকানির কারণে তার নিকট টাকার পাহাড় হয়ে যাবে। (নাউজুবিল্লাহ)

---< ঠিক এভাবে আমাদের সমাজে গ্রাম গঞ্জে অনেক কুসংস্কারে প্রভাব বিস্তার করেছে বেশি করে আমাদের গ্রামের মা-বোনদের মাঝে । আর আমাদের সমাজের মানুষ অনেকটা এইসব বিশ্বাস করে ধর্মের দিক দিয়ে, যেটা ধর্মকে কলুষিত করা ছাড়া আর কিছই নয়। কারন ধর্ম আমরা বিশ্বাস করি মঙ্গল এর কারনে কিন্তু যে বিশ্বাসে শুদু অমঙ্গল নিহিত সেটা ধর্মের অংশ হতে পারে না। আমাদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআন কিংবা দয়াল নবীজির কোন বাণী দ্বারা এসব সত্য সাবস্থ্য নয়। তাই সমাজে বিস্তার করা এসব কুসংস্কার দুরীভুত করতে সচেতনার প্রসার অতীব জরুরী।
৮টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×