somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সম অধিকার

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বহুদিন ধরেই বিষয়টা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। লিখব লিখব করে আর লেখা হয়ে উঠেনি। ভাবনাটা প্রথম আমার মাথায় আসে বাসে মহিলাদের সিট নিয়ে ঝগড়ার মাধ্যমে। মহিলা সিটে বসে থাকা কোন পুরুষকে সিট ছেড়ে উঠতে হলে প্রায়ই তাকে বলতে শোনা যায়- “ একদিকে সম আধিকার এর কথা বলে আবার বাসে উঠলে মহিলা সিট বলে চেচায় কেন?” এখনও লিখতে বসেছি desperately seeking Dhaka এর এমনি একটি বিষয়ের পোষ্ট ও তার কমেন্ট পরে।
প্রসঙ্গে ফিরে আসি। আচ্ছা ভাই, এই যে সম অধিকার কথাটা এইটা দিয়ে প্রকৃত পক্ষে কি বুঝানো হয়েছে তা কি ভেবেছেন? আমার ভাবনাটা একটু বলি, তার আগে একটা ভূমিকা দেই। ৩ দুই ধরনের একটা প্লাস ৩ আর একটা মাইনাস ৩। কিন্তু আপনাকে যদি বলা হয় ৩ তাহলে আপনি মাইনাস ৩ বুঝবেন না, প্লাস ৩ ই বুঝবেন। অর্থাৎ কিছু কথার মধ্যে অন্তর্নিহিত আরও একটা কথা থেকে যায়, যা বলবার প্রয়োজন পড়ে না। আর একটা উদাহরণ দেই, কাউকে যদি বলা হয়, “এদিকে আস” তাহলে প্রকৃত বাক্যটি হল- “তুমি এদিকে আস”। কিন্তু এই তুমি শব্দটি বাক্যে অনুপস্থিত থাকলেও তা বলা হয়ে যায়, যা প্রয়োজন তা হল বাক্যটি একটু ভাবা ও বুঝা দরকার। ‘সম অধিকার’ বলতে ‘সম অধিকার প্রিতিষ্ঠার’ কথা বলা হয়েছে। বর্তমান প্রসঙ্গের প্রেক্ষিতে বলছি নারীর সম অধিকার বলতে আসলে নারীর সম অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। এখন কথা হল, কোন কিছু প্রতিষ্ঠার জন্য একটা পদ্ধতি বা নিয়ম বা এমনই কিছু অবলম্বন করতে হয়। আর এই জন্যই বাসে পুরুষরা যেমন সিট পেয়ে যায়, মহিলারাও যেন পায় তার একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ব্যবস্থা ছাড়াও মহিলারা পুরুষের মত হুড়োহুড়ি করে বাসে উঠে সিট দখলের যুদ্ধে নামতে পারত। কিন্তু তখন আমরাই বলতাম, গেল গেল সমাজটা অধঃপাতে গেল, সামাজিক মানসিকতার অবক্ষয় দেখ, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দিকে না তাকিয়ে কেমন পুরুষের সাথে ধাক্কাধাক্কি করছে দেখ। বলতাম কিন্তু, তাহলে এখন কি তাহলে ব্যবস্থা এটাই যে তারা হয় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকবে নয়ত বাসে উঠে দাঁড়িয়ে থাকবে? তা ত হয় না, তাই না? এখন একটু সহজ করে বলি, বাসে সিট পাওয়াটা মানুষের অধিকার, নারী পুরুষ নির্বিশিষে। কিন্তু আমাদের শহরে পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, সাধারণ ভাবে সবকিছু চলতে দিলে নারীরা আর কোনদিনই বাসে সিট পাবে না। আর তখনই একটা অসম অধিকার এর উপস্থিতি হত। এই অসম অধিকারের উপস্থিতিটাকে বাদ দেয়ার জন্যই সম অধিকার নামক বর্তমান ব্যবস্থার প্রচলন করা হয়েছে। সম অধিকার প্রতিষ্ঠা বলতে কাউকে কোন অধিকার/জিনিস ভোগ করার জন্য সমান যোগ্যতার ব্যবস্থা করা। এমন একটা ব্যবস্থা করা যেন সে যা পাওয়ার কথা তা পায়। আমরা সাধারণ নাগরিকরাও কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালকদের সাথে সম অধিকারে আছি সাংবিধানিক ভাবে। কথাটা বললাম যেন না ভাবেন যে সম অধিকার শব্দটা শুধু নারীরাই ব্যবহার করে। আর একটা কথা, নারীদেরকে শারীরীকভাবে দুর্বল ভাবাটা ইদানিং আমার কেমন যেন উদ্ভট মনে হয়। কারণ এই শহরে রাতের বেলা মাটিকাটা থেকে শুরু করে যাবতীয় শক্তি নির্ভর কাজ করতে বিস্তর নারীকে দেখা যায় পুরুষের পাশাপাশি। কাওরান বাজারে সব্জির বস্তাও টানতে দেখেছি। শক্তির যতটুকু পার্থক্য ততটুকু বোধহয় দৈনন্দিন জীবনে খুব বেশি প্রভাব ফেলে না। নারীর সম অধিকার এর প্রতিষ্ঠা করার জন্যই একদিন “মহিলা সমিতির” দরকার হয়ছিল। কারণ তখনকার সময়ে তারা আইনের আশ্রয়টা কিভাবে নিবে তাও বুঝে উঠতে পারত না। তা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য একটা সাহায্য সংস্থা দরকার। এই সংস্থাটির সাহায্য ছাড়া কিন্তু নারীরা বিচার ব্যবস্থায় পুরুষের সম অধিকার পেত না।
যে কথা বলতে চাই, মহিলা সিটের ব্যবস্থাটি আসলে আমাদের সামাজিক মানসিকতা সুন্দর ও স্থিতিশীল করবার জন্যই দরকার।
ভুল চিন্তায় বসবাসের একটা উদাহরণ দিয়ে শেষ করছিঃ কোন গ্লাসে হাফ গ্লাস পানি আছে। আমরা প্রায়ই বলি, যে যেভাবে দেখে। কেউ দেখবে হাফ গ্লাস খালি আছে, কেউ দেখবে হাফ গ্লাস ভরা আছে। কিন্তু আমি যা বলতে চাই তা হলঃ দু’রকমভাবে’ত দেখা যাবে না, যায় না। সত্য কখনো দু’রকম হয় না। আপনি যখন হাফ গ্লাস পানি দেখছেন তার অভ্যন্তরে এইটাও দেখছেন যে হাফ গ্লাস খালি, আপনি আসলে দুটোই দেখছেন; দুজন ভিন্নভাবে দেখার কোন সুযোগ নেই। (বিষয়টা “এখানে আস” বাক্যের তুমি শব্দটার অনুপস্থিতির মতই অভ্যন্তরে থেকে যাওয়া।)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×