সমাজে প্রথাবিরোধী হইতে পারাটা বিশাল ব্যাপার।লোকে আইডেন্টিটি বোঝে, এলাকায় নামডাক হয়।
সেটা ভাল মন্দ যেদিকেই হোক। বিশ পচিশটা পোলাপানের মধ্যে একটায় গাঞ্জুট্টি হইলে সেইটার মান সম্মান আলাদা tongue emoticon ।ছুডুবেলার কথা,নাইন টেন এ থাকতে সার্কেলের মধ্যে যেইটায় আগে সিগারেট ধরসে, সেইটায় বলে সবচেয়ে ম্যাচুরড ! বোঝলাম !! এরপরে, বছর দেড়েক যাইতে না যাইতে, যেইটায় গার্লফ্রেন্ড ধরসে, ওইটায় বলে সবচেয়ে ম্যাচুরড ! আবারো বোঝলাম !! এর পরে, সার্কেলে যেইটায় ছ্যাক খাইছে, ঐটায় ও বলে ম্যাচুরড !
মা রে !
কেম্নে?
বলে,এক্সপেরিয়েন্স ম্যাচুরিটি না? pacman emoticon
সার্কেলে মাঝামাঝি কোন ক্লাসিফিকেশন নাই,আবার উল্টা ভাবলে,যেইটায় প্রথার বাইরে গিয়া মসজিদে যায়, ওইটারেও মানুষ চেনে। আলাদা কইরা চেনে।টাকা পয়সার লেনদেনে ঝামেলা নাই? ভালো ! চাইন্স পাইয়াও মিছা কথা কয়না? নাহ,ভালো আছে পোলাটা।
মানে ভালো মন্দের মিক্সচারে প্রথার বাইরে লাইফ আসলে সবসময়ই আলাদা।
ছোটবেলা থেকে বড় হইতে হইতে দুই ক্যাটাগরিই দেখলাম।আবার বিবর্তনের ধারায়,কিছু সমীকরন হঠাত বদলে যায়।সবচেয়ে অবাক লাগে তখন।অনেক দিনের চেনা পরিচিত একটা ভালো ছেলেকে,যখন দূর দিয়া সিগারেট খাইতে দেখি, খারাপ লাগে। আবার সবচেয়ে চ্যাংড়া পোলাটায় হঠাত যখন চেঞ্জ হয়,শান্ত শিষ্ট হয়ে যায়, প্রথমে সন্দেহ হয়, ধান্দা নাতো ? tongue emoticon
পরে সত্যি যখন বুঝতে পারি, চেইঞ্জটা স্পিরিচুয়াল, তখন বড় করে একটা নিঃশ্বাস ছাড়া হয়। নাহ,সব সম্ভব।
সবচেয়ে ভালো, সবচেয়ে খারাপ, সবচেয়ে চেইঞ্জ হওয়া ছেলে গুলা,সময়ভেদে সমাজে টপিক হয়। এরাই আইডল।কেউ কথা বলতে গেলে, ওদের দিকেই আংগুলা উচায়, দেখ ! তাকায় দেখ ! কি ছিল , আর কি হৈছে !
এই হঠাত করে খারাপ থেকে ভালো হওয়া, আবার হঠাত করেই ভালো থেকে খারাপ হওয়া ছেলেগুলার পেছনের গল্পটায় আমার দূর্বার আকর্ষণ।কি এমন জিনিস আছে যা তার পুরা ট্র্যাকটারেই চেইঞ্জ করে দেয় ?
এতদিনের এক্সপেরিয়েন্সে যতদূর বুঝলাম যে, মানুষের নেগেটিভ চেইঞ্জ গুলা সবসময় আগ্রাসী সংস্কৃতি,নিজের অরিজিন ভুলে যাওয়া, শিষ্টাচারের প্র্যাকটিস বা নর্মস এন্ড ভ্যালুস থেকে আস্তে আস্তে দূরে সরে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে হয়।সে এমন একটা সার্কেলে বাড়তে থাকে,যেখানে খারাপ হওয়াটাকে ফ্যাশন বলা হয়, প্রথাবিরোধী কোন কাজকে সাহস বলা হয়।আর এটা যখন ঘটতে থাকে, তখন তার অবস্থা হয়, খরস্রোতায় ভেসে যাওয়া কোন খড়কুটার মতন। যাচ্ছে তো যাচ্ছেই।
আর সবচে খারাপ ছেলেগুলার চেইঞ্জ হওয়ারর পেছনের গল্পটা একেবারেই বিপরীত। সে নিজের অরিজিন খুজতে চেষ্টা করে। জাতিগত ভাবে তার গৌরবের ইতিহাস গুলো তার কাছে প্রেরনা হয়ে দাঁড়ায়। আর, তার স্পিরিচুয়াল পরিবর্তন টা এনে দেয় তার ধর্ম! হোয়াটেভার সে হিন্দু,মুসলিম,খ্রিষ্টান বা বৌদ্ধ হোক।
সে মানুষের বিশ্বাসকে ভালোবাসতে শেখে,মানুষের মর্যাদা তার কাছে হয় সবচাইতে মূল্যবান !
সবচে বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, এই ধরনের চেইঞ্জ গুলো কোন সাহিত্যের মধ্যে দিয়ে আসে না।আসে,ভালো মন্দের পার্থক্য, আর তার পরিনাম উপলব্ধি করার মধ্যে দিয়ে!
আর এটাও সবচেয়ে অদ্ভুত এবং সত্য যে,রিলিজিয়ন ঠিক এই জায়গাটাতেই সবসময় পার্থক্য করে দেয়।
এজন্যই বলা হয়, একটা হিন্দু ছেলে,যে তার ধর্ম মেনে চলে, আর যে চলে না, তার থেকে বহুগুনে ভাল।
একটা মুসলমান ছেলে, যে ধর্ম মেনে চলে, আর যে চলে না, তার থেকে অনেক অনেক ভাল।
চরম বাস্তবতা হচ্ছে, জীবনের ঠিক এই জায়গাটাকেই আমরা অবহেলা করে যাচ্ছি সবচেয়ে বেশী।
মনুষ্যত্বের কথা বলছি, কিন্তু মন্যুষত্বের উৎস হতে সরে যাচ্ছি যোজন যোজন দূর।
আমরা প্রগতির কথা বলে যাচ্ছি দিনকে দিন,
কিন্তু আদতে সকল প্রানরস নিঃশেষ করে দিয়ে,
সবচেয়ে বড় বেইমানী টা করে যাচ্ছি নিজেদের সাথেই ।
সিরিয়াসলি,আমাদের কষ্ট পাওয়া উচিত।