খুব কম সিনেমাই আমি একাধিকবার দেখেছি; একটা সিনেমা দুবার দেখার সাধারণত কোনও আগ্রহ পাই না। ভাবি নতুন কিছু তো নেই, এ টু জেড সবই তো আগাগোড়া জানাই, রিপিট না করে বরং এ সময়ে অন্য কোনও সিনেমা দেখতে পারি! কিন্তু এই সিনেমাটা আমি তিন থেকে চারবার দেখেছি। জেল পালানো নিয়ে আমার দেখা শ্রেষ্ঠ সিনেমা। জেন ক্লদ ভ্যান ড্যাম'র মুভি, যথারীতি ধুন্ধুমার একশানে ভরপুর, এর পাশাপাশি মানবিক আবেদনও রয়েছে সম পরিমাণে। জেল জীবনের ভয়াবহতা উঠে এসেছে সুনিপণভাবে। একটি বিশেষ ঘটনার কথা মনে পড়ছে। জেলের ভিতর কর্তব্যরত পুলিশরা তাদের চিত্ত বিনোদনের জন্য কয়েদীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধিয়ে বিকৃত আনন্দ পায়। এরকম এক লড়াইয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ভীষণ শক্তিশালী দৈত্যাকৃতির এক কয়েদীর সাথে মুখোমুখি লড়াইয়ে নামতে বাধ্য হন ভ্যান ড্যাম। খুব মারপিট হয়। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষ দানব লোকটা বুঝতে পারে তাদের অসহায়ত্ব। আসলে কেউ তারা কারও শত্রু নয়, অথচ একে অপরের প্রাণ কেড়ে নিতে উদ্যত হয়েছে অন্যের মনোরঞ্জনের জন্য। দুজন দুজনের অসহায়ত্ব বুঝতে পেরে একে অপরকে আলিঙ্গন করে। এমন অপূর্ব এক আবেগময় দৃশ্যের সৃষ্টি হয়, যা দেখে কিছুতেই আর চোখের পানি ধরে রাখা যায় না। আপনাআপনি চোখ ভিজে আসে।
চিরদিনের ভাল লাগার একটি সিনেমা। সিনেমাটা না দেখে থাকলে অবশ্যই সময় করে দেখে নেবেন। আশা করি সকলেরই ভালো লাগবে। না শুধু ভালো লাগবে না, খুব ভাল লাগবে। লিংক দেয়া হলো। এই সুযোগে বলে রাখি আমি জেন ক্লদ ভ্যান ড্যাম'র দারুণ একজন ভক্ত। সেই ছোটবেলা থেকেই। তাঁর অনেক মুভি দেখেছি। সত্যি দুর্ভাগ্যজনক যে, যোগ্যতা অনুযায়ী তেমন একটা মূল্যায়ন হয়নি তাঁর। অথচ কোনও বিচারেই তিনি সমসাময়িক হলিউডের অন্যান্য একশন হিরো যেমন, আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার, সিলভেস্টার স্ট্যালনের থেকে কম নন। ওঁদেরও প্রচুর সিনেমা দেখেছি। তাঁরাও ভালো, তাঁরাও স্ব স্ব ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ নিঃসন্দেহে। কিন্তু আমার কাছে জেন ক্লদ ভ্যান ড্যাম একজনই। তিনি অদ্বিতীয়। যারা শুধু এটি একটি মারপিটের সিনেমা ভেবে দেখা থেকে বিরত থাকবেন, তারা ভুল করবেন। আগাগোড়া মানবিক আবেদনে ভরপুর। সবমিলিয়ে চমৎকার একটি সিনেমা।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:৪৫