somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধারাবাহিক বড় রহস্য গল্পঃ পৃথিবীর সবচেয়ে কদাকার মানুষের একটি গল্প

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



(পূর্ব প্রকাশের পর)
তাকে দেখে আঁতকে ওঠে মানুষ। শিশুরা ভয়ে মায়ের আচলে মুখ লুকায়; অনেকে কেঁদেও ফেলে। অবশ্য ওরা নিতান্তই শিশু, অবুঝ। ভাবলো সে। ওদের সবকিছুই হাসি মুখে সহ্য করে নেয়া যায়। কিন্তু বড়, পরিণত বয়সের কেউ যদি প্রকাশ্যেই তার চেহারা নিয়ে এমন কদর্য হাসি ঠাট্টায় মেতে ওঠে তখন তা মেনে নেয়া কষ্টকর বৈকি। ওরা তো আর অবুঝ নয়! ফের সেই রহস্যময় মৃদু হাসিতে ভরে উঠলো লোকটার মুখ। বছর দুয়েক আগে একবার এক পুচকে ছোকরাও এই মেয়ে দুটোর মতো ভুল করে বসেছিল। একদিন একটি রেস্টুরেন্টে সবান্ধব খেতে বসে তাকে দেখতে পেয়ে, মুখ বিকৃত করে প্রকাশ্যেই সবাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে একের পর এক যা তা বলে নোংরা রসিকতা করতে লাগলো। এরকম কয়লার মতো কালো মানুষ নাকি এখন আর খোদ আফ্রিকাতেও পাওয়া যাবে না, আমেরিকায় নিগ্রোরাও আস্তে আস্তে শাদা হয়ে যাচ্ছে, মাথার দুদিকে সবুজ রঙ আর টাকটা শাদা করে দিলেই ওটা মিনি ক্রিকেট মাঠ হয়ে যাবে, বিরাট নাকটা নাকি ওর তিনটে নাকের সমান বড় ইত্যাদি। আরও কতো লম্ফঝম্প, কদর্য হাসি মসকারা তার চেহারা নিয়ে।
ছেলেটার কথা ভেবে পুলকিত হলো সে। এই মেয়েগুলোরই বয়সী, বা কিছুটা বড় হবে। সুদর্শন। দীর্ঘ, পেটানো ব্যায়াম করা শরীর। সুশ্রী মুখাবয়ব। দেখলেই মডেল বা অভিনেতা, মানে সিনেমা নাটকের নায়ক বলে মনে হয়। এতো সুন্দর, সুদর্শন ছেলেটা অথচ মন তার কতো অপবিত্র, রাজ্যের কলুষতায় ভরা! আপনমনে মুচকি হাসতে লাগলো লোকটা।
'দেখ দেখ জানোয়ারটা হাসছে কীভাবে!' বিড়বিড় করে বললো রূপা নামের মেয়েটি। গলায় আতঙ্ক। 'কেউ ওকে অমন কুৎসিতভাবে হাসতে নিষেধ করবি প্লিজ। নইলে আমি সত্যি সত্যি কিন্তু বমি করে ফেলবো। বারবার ওভাবে হাসছে কেন ও! হাসির কি হয়েছে এখানে!'
'ঠিক বলেছিস রূপা।' বললো ফারিয়া। তীক্ষ্ণ চোখে রাজ্যের ঘৃণা নিয়ে দেখতে লাগলো লোকটাকে। 'মানুষের হাসি যে এতো কুৎসিত হতে পারে একে না দেখলে জানতাম না কোনদিন। সাক্ষাত শয়তান একটা। নরক থেকে নেমে এসেছে যেন।'
'দয়া করে এবার চুপ কর তো তোরা।' বিরক্তির সাথে বললো মনিকা। 'সেই কখন থেকে দেখছি শুধু শুধু ভদ্রলোকের পিছনে লেগে আছিস! এবার অন্য কোনও বিষয়ে কথা বল প্লিজ। উনি নির্ঘাত তোদের কথা শুনতে পাচ্ছে। বেচারা নিশ্চয়ই কষ্ট পাচ্ছে এতে। সেও তো মানুষ আমাদের মতো। আর সবচেয়ে বড় কথা সে তো আমাদের কোনও ক্ষতি করেনি। নিজের মতো বসে আছে, একবার ফিরেও তাকায়নি আমাদের দিকে। তোরা কেন শুধু শুধু তাকে নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছিস!'
'আবার ভাষণ শুরু করলি তুই!' বিরক্তির সাথে মনিকাকে লক্ষ্য করে বললো ফারিয়া। 'আমাদের কিছু বলার আগে ওই লোকটাকে ওভাবে হাসতে নিষেধ কর। কী বিশ্রী হাসি! দেখলেই বমি আসে।'
'হ্যা, বেশ কিছুক্ষণ ধরে লক্ষ্য করছি,' বললো রূপা। 'থেকে থেকে কেমন কুৎসিতভাবে হাসছে লোকটা। এখানে ওর অমন হাসির কি ঘটেছে শুনি! ছি, মানুষের হাসি এতো কুৎসিত হতে পারে!' মুখ বিকৃত করলো রূপা। 'ইচ্ছে করে আমাদের ভয় দেখাচ্ছে ও। আস্ত শয়তান একটা। নয়তো ওর ওভাবে বারবার হাসির কি উপলক্ষ ঘটেছে এখানে!'
'ওর দিকে তাকানোর দরকার নেই তোদের।' বললো মনিকা। 'আরেক দিকে তাকিয়ে থাক। ব্যাপারটা এখানেই শেষ কর প্লিজ।'
(চলবে)

আগের পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫০
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×