somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাবা খেলার জন্য চমৎকার একটি এ্যাপ

২২ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দাবা খেলার জন্য চেস বাই পোস্ট (Chess by post) দারুণ একটি এ্যাপ। এতে আপনি অনলাইনে সারা বিশ্বের শখের দাবাড়ুদের সাথে দাবা খেলতে পারবেন। আন্তর্জাতিক দাবা ফেডারেশন যে রেটিং পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রতিযোগিতা করে থাকে, এখানেও সেই একই রেটিং পদ্ধতি অনুসরণ করে র্যাঙ্কিং সিস্টেমে খেলা হয়। খেলায় আপনার সাফল্য ব্যর্থতা অনুযায়ী আপনার র্যঙ্কিং ওঠানামা করবে। স্মার্ট ফোনের সব প্লাটফর্মেই বিনামূল্যে এ্যাপটি পাওয়া যাবে। এর একটা পেইড ভার্সনও আছে। কিন্তু সেটা আমি কখনও ব্যবহার করিনি, বিধায় কোনও ধারণা নেই। যাই হোক ছোট সাইজের ফ্রি ভার্সনটি আপনার স্মার্ট ফোনে সহজেই ইন্সটল করে, এই এ্যাপের সাহায্যে অনলাইনে দাবা খেলতে পারবেন বিশ্বজুড়ে আরও অজস্র এ্যাপ ব্যবহারকারী অন্যান্য দাবাড়ুদের সাথে।
এ্যাপটা ব্যবহার করা খুব সহজ ও আরামদায়কও, কোনরকম বাগ নেই, লাইট ওয়েটের কারণে ফোন হ্যাঙ হয় না কখনও। একেবারে নিট এন্ড ক্লিন একটি এ্যাপ। এ্যাপটিতে র্যাঙ্কিং গ্যামের পাশাপাশি ফ্রি হ্যান্ডে নিজের সাথে নিজে, এ্যাপ ব্যবহারকারী অন্য যে কারও সাথে, এমনকি ফেসবুক বন্ধু ও আপনার ফোনবুকে থাকা কন্টাক্টের সাথেও অনলাইনে যুক্ত হয়ে দাবা খেলতে পারেন। তবে একমাত্র র্যঙ্কিং গেম ছাড়া বাকি সবগুলোই হবে নন রেটিং গেম। এ্যাপটিতে খেলার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের সাথে বার্তা আদানপ্রদান করারও ব্যবস্থা আছে। রেটিং গেম খেলতে এখানে মাঝেমাঝে এক্ষেত্রে একটু বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় মেজাজ হারিয়ে অনেকেই প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করে বসে। মানে অনেক সময় ভুল বোঝাবুঝি, গালাগালি হয়ে থাকে খেলোয়াড়দের মাঝে। হাতের পাঁচটা আঙুল সমান হয় না, পৃথিবীর নানান দেশের হাজার হাজার মানুষ ব্যবহার করে থাকে এ্যাপটি, এর মধ্যে অনেকেই আছে বিপদ জনক স্বভাবের। উল্টাপাল্টা কথায় আক্রমণ করে বসে প্রতিপক্ষকে।
এ্যাপটির একটাই মাত্র খারাপ দিক, তা হলো, এতে প্রত্যেক মুভের জন্য একজন খেলোয়াড় সর্বোচ্চ চারদিন পর্যন্ত সময় নিতে পারে। এর মধ্যে মুভ না করলে, অপর পক্ষ জয়ী হবে। সময়টা খুব দীর্ঘ। এখানে দাবা খেলতে যেয়ে অনেক ত্যাদোড় স্বভাবের খেলোয়াড়কে দেখেছি, যখনই তারা দেখে যে খেলায় তাদের আর জয় বা ড্র-র কোনও সম্ভাবনা নেই, তখনই তারা ইচ্ছে করে মুভ করতে দেরি করে। মানে মুভ করা বন্ধ করে দেয়। অনেকে তো এরকম সময় প্রত্যেকটা চালের জন্য তিন থেকে চার দিন পর্যন্ত সময় নিয়ে প্রতিপক্ষকে ইচ্ছে করে জ্বালায়। নিচু মন মানসিকতার নিচু র্যঙ্কের খেলোয়াড়রাই এরকম হীন স্বভাবের হয়ে থাকে। মানে এরা খেলোয়াড় হিসেবেও যেমন খারাপ, তেমনি এদের মনও ছোট। তেইশ শ'র ওপর রেটিংপ্রাপ্ত খেলোয়াড়রা আবার এরকম কখনও করে না। সুতরাং শুরুর দিকে নানান ঝঞ্জাটে উল্টা পাল্টা খেলোয়াড়দেরকে ডিঙিয়ে আসতে হবে। প্রথমে একটু ধৈর্য ধরে খেলা চালিয়ে যেতে হবে। তারপর একবার তেইশ শত'র ওপরে রেটিং উঠলে এক্সপার্ট লেভেলের দাবাড়ুদের সাথে খেলতে পারবেন। তখন তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন প্রতিপক্ষের সাথে খেলাটা দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠবে।
সবমিলিয়ে অনলাইনে দাবা খেলার জন্য চমৎকার একটি এ্যাপ, 'চেস বাই পোস্ট'। আমার অনেক মজার মজার ঘটনা ঘটেছে এখানে দাবা খেলতে যেয়ে। একবার চিটাগাং যাবার পথে খেলায় আমার একটু খারাপ পরিস্থিতিতে আমি একজনকে অনুরোধ করেছিলাম যে, 'আমি এখন ট্রাভেলে আছি। খেলাটা আমি ড্র করতে চাচ্ছি?' ও হ্যা বলা হয়নি, এখানে আপনি চাইলে একবার প্রতিপক্ষকে ড্রয়েরও অফার করতে পারেন। যাই হোক সেই খেলোয়াড় সেদিন আমার ড্রয়ের অফারটা মুখের ওপর না বলে ফিরিয়ে দিয়েছিল। বলেছিল, 'ভালভাবে চারপাশ দেখে গাড়ি চালাতে।' পরে সেই খেলায় একটা পাওয়ার লস অবস্থা থেকে জিতে ওকে আমি বলেছিলাম, 'আসো বন্ধু আরেকটা র্যঙ্ক গেম খেলি। এবার আমি একটা রুক (নৌকা) ছাড়া খেলবো।'

Azoress777 বা এরকম নিকের এক তুখোড় জার্মান দাবাড়ুর টানা ৩০-৩২ ম্যাচের উইনিং স্ট্রিং আমি ভেঙেছিলাম। চমৎকার জমজমাট একটা গেম ছিল সেটা। শতাধিক চাল লেগেছিল শেষ হতে। বেশ ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ওর সাথে। যদিও ওর নামটা আজ আর মনে নেই। আলেজান্দ্রো বা এরকম কিছু একটা হবে!

খেলতে খেলতে আমার রেটিং চব্বিশ শত'র কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিছু খেলা পেন্ডিং রেখে একবার হুট করে ভারত যাই। তারপর ফিরে এসে দেখি, সবগুলো গেম হেরে আমার রেটিং আঠার থেকে উনিশ শত'র মধ্যে চলে এসেছে। কী আর করা!

যারা অনলাইনে একটা ভালো প্রতিযোগিতামূলক দাবা খেলার এ্যাপ খুঁজছেন। তাদেরকে বলবো, এ্যাই এ্যাপটি মাস্ট ইন্সটল করতে। অবসর সময়ে প্রতিযোগিতামূলক দাবা খেলার দারুণ উপভোগ্য একটি এ্যাপ। এ্যাপ বা দাবা খেলা সম্পর্কে কারও কোনও প্রশ্ন থাকলে সানন্দে এখানে করতে পারেন। এ্যাপটি ব্যবহারের পর কেমন লাগছে তা জানালেও খুব খুশি হবো। এই মুহূর্তে আমার রেটিং ২১৭০+। খুব শীঘ্রই আরও কিছু রেটিং বাড়বে। কিছু গেম আমি জয়ের কাছে অবস্থান করছি।

সবাইকে ধন্যবাদ।


এটা আমি। দাবা খেলে নয় বিশ কিলোমিটার দৌড়ানোর পর। চরম টায়ার্ড। এখন থেকে রাজিব নূর ভাইয়ের মতো পোস্টে নিয়মিত নিজের ছবি দিবো। রাতের সেল্ফি নয়জি দেখে সাদাকালোয় এডিট করে দিলাম।

এই যে ডেভেলপারেরর ওয়েব। এখান থেকে ডাউনলোড করতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:০২
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×