একবার পশ্চিম বাংলার ক্যানিংয়ে বেড়াতে গিয়েছিলাম। দুতিন বছর আগের কথা। ক্যানিং দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার অন্তর্গত। ভালো মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা। রেল স্টেশন থেকে নেমে প্রধান সড়কে দেখলাম আমাদের দেশের মতোই লাল কাপড় দিয়ে মোড়ানো বিরিয়ানির হাড়ি হোটেলগুলোর সামনে। অল্প দূরত্বে পাশাপাশি বেশ ক’টি বিরিয়ানির দোকান। বেশিরভাগই মুসলিম মালিকানাধীন। এছাড়াও অন্যান্য রকমারি দোকানও মুসলিম নামাঙ্কিত। বিস্তর দাড়ি টুপি পরা লোকজন রাস্তাঘাট ও দোকানপাটে। না, হিন্দু মুসলিম পরিসংখ্যান বের করা তো আর আমার লক্ষ্য ছিল না। বাইরের এক দেশ থেকে গিয়ে দেখে মনে হয়েছে, ভালো মুসলিম অধ্যুষিত জেলা, পশ্চিম বাংলার এই দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলা। ব্যস এটুকুই, আর কিছু নয়।
এক হোটেলে চিকেন বিরিয়ানি নিয়ে বসলাম। ৭৫ রুপি হয়তো দাম ছিল, সাথে একটা ডিম। সালাদ মেখে খাওয়া শুরু করার খানিকক্ষণ পর চোখে পড়লো, দেয়ালে সাইনবোর্ডে বড় বড় করে পরিষ্কার লেখা, ‘স্যালাড দশ রুপি’! গেল মেজাজটা খারাপ হয়ে। দুই স্লাইস শসা, টমেটো, দুটো কাঁচামরিচ, পিয়াজ, দাম দশ রুপি! এখন! খাওয়া তো শুরু করেছি! এখন সাইনবোর্ড দেখে আর কী হবে! মনে মনে গুষ্ঠি উদ্ধার করলাম সেই হোটেল কর্তৃপক্ষ ও স্টাফদের। পিচ্চি ওয়েটার মাতব্বরি করে সালাদ দিতে গেল কেন! বাপরে বাপ, কতো দাম ওদের এই মার্কামারা সালাদের! বিরিয়ানি সত্তর রুপি আর সালাদ দশ রুপি! ‘তোরা আসিস কোনওদিন বাংলাদেশে। তোদের সামান্য পুড়ি আর ঝোল দিয়ে বিনা পয়সায় এক বাটি করে সালাদ খাওয়াবো সবগুলোকে। অমানুষের দল আবার কায়দা করে লিখেছিস, ‘স্যালাড’! হা হা হা। কিঞ্চিত মজা করলাম আরকি। আশি রুপিতে ডিম সহ ওরকম এক প্লেট উপচে পড়া বিরিয়ানি বাংলাদেশের কোথাও একশ’ বিশ ত্রিশ টাকার নিচে পাওয়া যাবে না। সালাদের দাম যোগ করেও তা বাংলাদেশের তিন ভাগের দুভাগের সমান।
যাই হোক তৃপ্তিভরে বিরিয়ানি খেয়ে বেরিয়ে এলাম। হাটতে লাগলাম সড়কে। চমৎকার আবহাওয়া। অসম্ভব সুন্দর একটা ঝলমলে হলুদ বিকেলবেলা।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:৫৬