somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৌভাগ্যময় জীবনের পূর্ণাঙ্গ উপায়

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ড. আবদুল্লাহ ইবন আহমদ আল-যায়েদ
১. ঈমান ও সrকর্ম: সৌভাগ্যময় জীবন লাভের অন্যতম প্রধান ও আসল উপায় হল ঈমান ও সrকর্ম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ مَنۡ عَمِلَ صَٰلِحٗا مِّن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤۡمِنٞ فَلَنُحۡيِيَنَّهُۥ حَيَوٰةٗ طَيِّبَةٗۖ وَلَنَجۡزِيَنَّهُمۡ أَجۡرَهُم بِأَحۡسَنِ مَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ﴾ [النحل:97]
মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, তাকে আমি নিশ্চয়ই পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।”— (সূরা আন-নাহল: ৯৭)
সুতরাং যে ব্যক্তি ঈমান ও সৎ আমলের সমন্বয় সাধন করতে পারবে, তার জন্য আল্লাহ তা‘আলা ইহকালে পবিত্রময় জীবনের এবং ইহকালে ও পরকালে উত্তম প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আর এর কারণ সুস্পষ্ট। কেননা, মুমিনগণ আল্লাহর প্রতি বিশুদ্ধ ঈমানের ফলে সৎকাজ করে এবং দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য মন-মানসিকতা ও নৈতিক চরিত্রকে সংশোধন করে। তাদের সাথে মৌলিক নীতিমালা রয়েছে, যার দ্বারা তারা তাদের নিকট উপস্থাপিত সকল প্রকার হাসি-আনন্দ, অস্থিরতা ও দুঃখ-বেদনার কারণসমূহ উপলব্ধি করতে পারে।
এই নীতিমালা গ্রহণ, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও উপকারী ক্ষেত্রে তার যথাযথ ব্যবহার দ্বারা তারা রাগ-বিরাগ ও অন্যায়-অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারে। সুতরাং এই দৃষ্টিকোণ থেকে তারা যখন তার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করবে, তখন এর দ্বারা তাদের জন্য আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হবে, তার স্থায়িত্ব ও বরকতের ব্যাপারে আশা জাগবে এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারীদের সাওয়াবের প্রত্যাশা তৈরি হবে। এর ফলে সৃষ্ট এই আনন্দের কল্যাণ ও বরকতের দ্বারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রতিষ্ঠিত হবে।
আর তারা উপলব্ধি করতে পারবে দুঃখ-কষ্ট, ক্ষয়-ক্ষতি ও দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে। এ ক্ষেত্রে তাদের পক্ষে প্রতিরোধ করা সম্ভব হলে পরিপূর্ণ প্রতিরোধ করবে; তার কিছুটা লাঘব করা সম্ভব হলে লাঘব করবে এবং প্রতিরোধের কোন উপায় না থাকলে সর্বোত্তম ধৈর্য ধারণ করবে। আর এর দ্বারা তাদের দুঃখ-কষ্টের প্রভাব বলয় থেকে বের হয়ে আসার যথাযথ প্রতিরোধ গড়ে তোলার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও শক্তি-সামর্থ সঞ্চয় হবে। ধৈর্য এবং প্রতিদান ও সওয়াবের আশা পোষণ করা বড় মর্যাদাপূর্ণ কাজ, যার সাথে দুঃখ-কষ্ট মিশে আছে। আর তার থেকে উত্তরণের উপায় হল আনন্দে থাকা, উত্তম আশা-আকাঙ্খা পোষণ করা এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও সওয়াবের প্রত্যাশা করা। যেমন বিশুদ্ধ হাদিসে রয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
« عَجَبًا لأَمْرِ الْمُؤْمِنِ إِنَّ أَمْرَهُ كُلَّهُ خَيْرٌ وَلَيْسَ ذَاكَ لأَحَدٍ إِلاَّ لِلْمُؤْمِنِ إِنْ أَصَابَتْهُ سَرَّاءُ شَكَرَ فَكَانَ خَيْرًا لَهُ وَإِنْ أَصَابَتْهُ ضَرَّاءُ صَبَرَ فَكَانَ خَيْرًا لَهُ ».
“মুমিনের কর্ম-কাণ্ডে অবাক হওয়ার বিষয় হল তার সকল কাজই মঙ্গলজনক। সে সুখ-শান্তি লাভ করলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে; ফলে তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর দুঃখ-কষ্টে পতিত হলে সে ধৈর্য ধারণ করে; ফলে তাও তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর এই সুযোগ মুমিন ব্যতীত অন্য কারও ভাগ্যে জুটে না।”— (মুসলিম, যুহুদ, বাব-১৪, হাদিস নং-৭৬৯২)
সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়ে দিলেন যে, মুমিনের প্রাপ্তি ও কল্যাণ দিগুণ। হাসি-আনন্দ ও দুঃখ-কষ্ট সকল অবস্থায়ই সে তার কর্ম-কাণ্ডের সুফল ভোগ করবে। এ জন্যই আপনি দু’টি জিনিস পাবেন, যেগুলো কল্যাণ বা অকল্যাণের প্রতিনিধিত্ব করে। আবার উভয়ের অর্জন পদ্ধতির মধ্যে ব্যবধানও অনেক। আর এই ব্যবধানটি হবে ঈমান ও সৎকর্মের ক্ষেত্রে উভয়ের পার্থক্য অনুযায়ী। এই গুণের অধিকারী ব্যক্তি এ দু’টি গুণ দ্বারা কল্যাণ ও অকল্যাণ লাভ করে, যা আমরা আলোচনা করেছি; যেমন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, ধৈর্য ধারণ ইত্যাদি। এতে করে তার জন্য আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হবে; দূর হয়ে যাবে দুশ্চিন্তা, অস্থিরতা, হৃদয়ের সংকীর্ণতা ও জীবনের দুঃখ-কষ্ট এবং ইহজগতে তার জীবন হয়ে উঠবে অর্থবহ ও সুখময়।
আর অপর ব্যক্তি অপকর্ম, দাম্ভিকতা ও স্বেচ্ছাচারিতা দ্বারা অপরাধ প্রবণ হয়ে উঠে। ফলে তার নৈতিকতা বিনষ্ট হয় এবং অধৈর্য ও অতি লোভের কারণে তার নৈতিক চরিত্র পশুর চরিত্রের মত গড়ে উঠে। এতদ্ব সত্ত্বেও সে মানসিকাবে অশান্ত ও অস্হির। তার এই অস্থিরতার পিছনে বহুবিধ কারণ রয়েছে; যেমন তার প্রিয়াদেরকে হারানোর আশঙ্কা ও তাদের পক্ষ থেকে নতুন নতুন বহু দ্বন্দ্ব-সংঘাতের আশঙ্কা; আরও একটি কারণ হচ্ছে নফসের অস্থিরতা, যা অর্জন করুক আর নাই করুক সার্বক্ষণিক আরও কিছু পেতে আগ্রহবোধ করে। সে যদি নির্ধারিত অংশ পেয়েও যায়, তবুও সে উল্লেখিত কারণে (নতুন নতুন পেতে) অস্থির হয়ে উঠে। আর এসব উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, আতঙ্ক ও অসন্তুষ্টির কারণে সে দুঃখ-কষ্ট অনুভব করে। সুতরাং তার দুর্ভাগ্যময় জীবন, স্বজনপ্রীতি ও চিন্তারোগ এবং ভয়-ভীতি যা তাকে খারাপ অবস্থা ও বীভৎস কষ্টের দিকে ঠেলে দিয়েছে; তার এমন পরিণতি নিয়ে প্রশ্ন করো না। কারণ, সে সওয়াবের আশা করে না। আর তার নিকট ধৈর্যের মত এমন সম্পদও নেই যা তাকে শান্তনা ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য দেবে।
আর এ ধরনের প্রত্যেকটি বর্ণনাই অভিজ্ঞতালব্ধ বাস্তব উদাহরণ। যেমন এই শ্রেণীর একটি বিষয়কে নিয়ে যখন আপনি চিন্তা-ভাবনা করবেনে এবং তাকে মানুষের বাস্তব অবস্থার সম্মুখে উপস্থাপন করবেন, তখন ঈমানের দাবি অনুযায়ী আমলকারী মুমিন ব্যক্তি ও যে ব্যক্তি এমন কাজ করেনি তাদের উভয়ের মধ্যে অনেক বড় ব্যবধান দেখতে পাবেন। আর সে বিষয়টি হল, আল্লাহ প্রদত্ত রিযিক ও তিনি তাঁর বান্দাদেরকে বিভিন্ন প্রকারের যেসব অনুগ্রহ ও সম্মান দান করেছেন, তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকতে দীন-শরীয়ত অনেক বেশি উৎসাহ প্রধান করেছে।
 
সুতরাং মুমিন যখন অসুস্থতা অথবা দারিদ্র অথবা অনুরূপ কোন মান-সম্মান বিনষ্টকারী বিপদ-মুসিবত দ্বারা পরীক্ষার সম্মুখীন হয়, তখন তার ঈমান ও আল্লাহ প্রদত্ত রিযিকের প্রতি সন্তুষ্ট থাকার কারণে আপনি তার চোখে-মুখে আনন্দের ঝলক দেখতে পাবেন এবং সে আন্তরিকভাবে এমন কিছু চাইবে না, যা তার ভাগ্যে নেই। এ অবস্থায় সে তার চেয়ে খারাপ অবস্থাশালী ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে শান্তনা অনুভব করে; তার চেয়ে ভাল অবস্থাশালী ব্যক্তির দিকে তাকায় না। কোন কোন সময় তার আনন্দ-ফুর্তি ও মনের প্রফুল্লতা আরও বৃদ্ধি পায় ঐ ব্যক্তির অবস্থা দেখে, যে ব্যক্তি দুনিয়াবী সকল উদ্দেশ্য হাসিল করেও পরিতৃপ্ত হতে পারেনি।
অনুরূপভাবে যে ব্যক্তির নিকট ঈমানের দাবি অনুযায়ী আমল নেই, তাকে যখন অভাব-অনটন দ্বারা অথবা দুনিয়াবী চাওয়া-পাওয়ার কিছু থেকে বঞ্চিত করার দ্বারা পরীক্ষায় ফেলা হয়, তখন তাকে আপনি দুঃখ-কষ্টে চরম বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে পাবেন।
অপর আরেকটি দৃষ্টন্ত হল: যখন ভয় ও আতঙ্কের কারণসমূহ প্রকাশ পায় এবং মানুষ নানান অসুবিধা দ্বারা কষ্ট অনুভব করে, তখন তার মধ্যে বিশুদ্ধ ঈমান, দৃঢ় মনোবল, মানসিক প্রশান্তি এবং উদ্ভূত এই সঙ্কট মোকাবিলায় চিন্তায়, কথায় ও কাজে সামর্থবান হওয়ার মত গুণাবলী বিদ্যমান থাকে, তবে সে নিজেকে এই সঙ্কটময় পরিস্থিতিতেও প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। আর এই পরিস্থিতি মানুষকে আনন্দ দেবে এবং তার হৃদয়কে মজবুত করবে।
অনুরূপভাবে আপনি ঈমান হারা ব্যক্তিকে পাবেন সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থায়। যখন সে ভয় ও আতঙ্কের অবস্থায় পতিত হবে, তখন তার হৃদয় অস্বস্তি অনুভব করবে; স্নায়ুতন্ত্রগুলো দুশ্চিন্তায় উত্তেজিত হয়ে উঠবে; তার অভ্যন্তরে বিরাজ করবে ভয় ও আতঙ্ক এবং তার মধ্যে বিরাজ করবে বাহ্যিক আতঙ্ক ও অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা। ফলে তার বাস্তব অবস্থা উদ্ঘাটন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। আর এ শ্রেণীর মানুষের যদি স্বভাবগত উপায়-উপকরণ বা উদ্দেশ্যসমূহ হাসিল না হয়, যা অর্জনে অনেক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন; তবে তাদের শক্তি-সামর্থ ভেঙ্গে পড়বে এবং স্নায়ুতন্ত্রগুলো উত্তেজিত হয়ে উঠবে। আর এরূপ হবে ঈমানের ঘাটতির কারণে, যা ধৈর্যধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রখে। বিশেষ করে সঙ্কটকালে ও দুঃখ-দুর্দশার সময়ে।
সুতরাং পুণ্যবান ও পাপী, মুমিন ও কাফির উভয়ে অর্জনীয় বীরত্ব অর্জনে অংশগ্রহণ করে। আরও অংশীদারিত্ব রয়েছে এমন স্বভাব-চরিত্রে, যা ভয়ানক পরিস্থিতিতে সদয় হয় এবং বষয়টিকে সহজ করে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মুমিন ব্যতিক্রম তার ঈমানী শক্তি, ধৈর্য, আল্লাহর উপড় ভরসা ও নির্ভরশীলতা এবং তার সওয়াবের প্রত্যাশার কারণে। এসব বিষয়ের কারণে তার সাহস ও বীরত্ব আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে, আতঙ্কের চাপ কমতে থাকে এবং তার নিকট কঠিন কাজগুলো সহজ হতে থাকে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ إِن تَكُونُواْ تَأۡلَمُونَ فَإِنَّهُمۡ يَأۡلَمُونَ كَمَا تَأۡلَمُونَۖ وَتَرۡجُونَ مِنَ ٱللَّهِ مَا لَا يَرۡجُونَۗ ﴾ [النساء:104]
“যদি তোমরা যন্ত্রণা পাও, তবে তারও তো তোমাদের মতই যন্ত্রণা পায় এবং আল্লাহর নিকট তোমরা যা আশা কর, তারা তা আশা করে না।” —(সূরা আন-নিসা: ১০৪)
আর তারা আল্লাহর বিশেষ সাহায্য লাভ করে এবং তার সাহায্য সকল প্রকার ভয়-ভীতিকে ওলট-পালট করে দেয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ وَٱصۡبِرُوٓاْۚ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلصَّٰبِرِينَ ﴾ [الأنفال:46]
“তোমরা ধৈর্যধারণ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” —(সূরা আল-আনফাল: ৪৬)
 
২. সৃষ্টির প্রতি ইহসান: উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা দূর করার অন্যতম উপায় হচ্ছে কথা, কাজ ও বিভিন্ন প্রকারের সদ্ব্যবহার দ্বার সৃষ্টির প্রতি ইহসান করা। উল্লেখিত প্রতিটি কাজই উত্তম ও ইহসান। এর দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা পুণ্যবান ও পাপীর কর্ম-কাণ্ড অনুসারে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও দুশ্চিন্তা দূর করেন। কিন্তু তার থেকে মুমিনের জন্যই পরিপূর্ণ অংশ রয়েছে। আর সে ব্যতিক্রম এই জন্য যে, তার ইহসানের কার্যক্রম পরিচালিত হয় ইখলাসের সাথে সওয়াবের প্রত্যাশায়। ফলে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য সহজ করে দেন তার প্রত্যাশিত কল্যাণকর কাজের মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করতে। আর তিনি তার ইখলাস ও আন্তরিকতার কারণে সকল দুঃখ-কষ্ট দূর করে দেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ لَّا خَيۡرَ فِي كَثِيرٖ مِّن نَّجۡوَىٰهُمۡ إِلَّا مَنۡ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوۡ مَعۡرُوفٍ أَوۡ إِصۡلَٰحِۢ بَيۡنَ ٱلنَّاسِۚ وَمَن يَفۡعَلۡ ذَٰلِكَ ٱبۡتِغَآءَ مَرۡضَاتِ ٱللَّهِ فَسَوۡفَ نُؤۡتِيهِ أَجۡرًا عَظِيمٗا ﴾ [النساء:114]
“তাদের অধিকাংশ গোপন পরামর্শে কোন কল্যাণ নেই, তবে কল্যাণ আছে যে নির্দেশ দেয় দান-খয়রাত, সৎকাজ ও মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের; আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় কেউ তা করলে তাকে অবশ্যই আমি মহাপুরস্কার দান করব।” —(সূরা আন-নিসা: ১১৪)
সুতরাং তার থেকে সংঘটিত এ ধরনের সকল কর্মকাণ্ডকে আল্লাহ তা‘আলা কল্যাণময় বলে ঘোষণা করেছেন। আর কল্যাণ মানেই কল্যাণকে স্বাগত জানায় এবং অকল্যাণকে প্রতিরোধ করে। আর সওয়াবের প্রত্যাশী মুমিনকে আল্লাহ মহাপুরস্কার দান করবেন। আর সকল প্রকার বড় পুরস্কারের মধ্যে অন্যতম পুরস্কার হচ্ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, দুঃখ-কষ্ট ইত্যাদি দূর করে দেয়া।
 
৩. কাজ-কর্ম ও উপকারী জ্ঞান অর্জনে ব্যস্ত থাকা: স্নায়ুতন্ত্রের উত্তেজনা জনিত অস্থিরতা ও পাপ-পঙ্কিলতার মধ্যে ডুবে থাকা মনকে দূরে রাখার অন্যতম উপায় হচ্ছে কাজ-কর্ম ও উপকারী জ্ঞান অর্জনে ব্যস্ত থাকা। কেননা, তা মনকে ঐসব কর্ম-কাণ্ড থেকে বিরত রাখে, যা তাকে অস্থির করে তোলে। এ কারণে সে কোন কোন সময় ঐসব কারণকে ভুলে থাকবে, যা তাকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে বাধ্য করে। ফলে সে মানসিকভাবে আনন্দ অনুভব করবে এবং তার মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু মুমিন অন্যান্যদের থেকে ব্যতিক্রম তার ঈমান ও ইখলাসের সাথে সওয়াবের প্রত্যাশায় জ্ঞান অর্জন ও শিক্ষাদান ব্যবস্থায় কর্মতৎপর হওয়ার পাশাপাশি উত্তম আমল করার কারণে। যদি তা ইবাদত কেন্দ্রিক হয়, তবে তা ইবাদত হিসেবেই গণ্য হবে। আর তা যদি দুনিয়াবী অথবা প্রকৃতিগত কোন কর্ম-কাণ্ড হয়ে থাকে, তবে তার ফলাফল নিয়তের বিশুদ্ধতার উপর নির্ভর করবে। আর সে যদি এর দ্বারা আল্লাহর আনুগত্যের ব্যাপারে সাহায্য কামনা করে, তবে তার এ কাজের প্রভাবে দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা দূর হবে। সুতরাং মনের অস্থিরতা ও পাপ-পঙ্কিলতা দ্বারা পরীক্ষা করা হয়; অতঃপর এর কারণে সে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়, তখন তার প্রতিষেধক ঔষধ হচ্ছে: “ঐ কারণটিকে ভুলে থাকা, যা তাকে পাপ-পঙ্কিলতা ও অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে এবং নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত রাখা।”
 
৪. সকল চিন্তাকে দৈনন্দিন কাজের গুরুত্বের উপর ঐক্যবদ্ধ করা: দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা দূর করার অন্যতম আরও একটি উপায় হল সকল চিন্তাকে চলমান (বর্তমান) দিনের কাজের গুরুত্বের উপর ঐক্যবদ্ধ করা এবং ভবিষ্যতকালীন ও অতীতকালীন কর্ম-কাণ্ড নিয়ে বেশি চিন্তা-ভাবনা বন্ধ করা। এ জন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নিকট সকল প্রকার দুশ্চিন্তা থেকে আশ্রয় চেয়েছেন, যা ইমাম বুখারী ও মুসলিম র. বর্ণিত হাদিসে রয়েছে। সুতরাং অতীতের কোন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করে লাভ নেই, যা কোন দিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আর ভবিষ্যতকালে কোন দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় মগ্ন থাকাও ক্ষতিকর। অতএব বান্দার দায়িত্ব ও কর্তব্য হল তার আজকের দিন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা এবং তার সকল চেষ্টা-প্রচেষ্টা ঐ দিন তথা বর্তমান সময়কে ভাল করার কাজে ব্যয় করা। কারণ, এই দিকে মনোযোগ দিলেই তার কর্ম-কাণ্ডসমূহ পরিপূর্ণ ও পরিশুদ্ধ হবে এবং তার দ্বারা বান্দা দুশ্চিন্তা মুক্ত হয়ে শান্তি লাভ করতে পারবে। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন দো‘আ করতেন অথবা তাঁর উম্মতকে দো‘আ করতে বলতেন, তখন তিনি আল্লাহর সাহায্য ও অনুগ্রহ কামনার সাথে সাথে যা পাওয়ার জন্য দো‘আ করা হয়, তা অর্জনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা-প্রচেষ্টা চালানোর জন্য উৎসাহ প্রদান করতেন। আর যা দূর করার জন্য দো‘আ করা হত, তা থেকে দূরে সরে থাকতে উৎসাহ দিতেন। কারণ, দো‘আ আমলের মতই। সুতরাং বান্দা দীন ও দুনিয়ার ক্ষেত্রে তার উপকারী বিষয় নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করবে এবং তার উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তার প্রতিপালকের নিকট প্রার্থনা করবে। আর এই ব্যাপারে তাঁর নিকট সাহায্য চাইবে। যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
« الْمُؤْمِنُ الْقَوِىُّ خَيْرٌ وَأَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنَ الْمُؤْمِنِ الضَّعِيفِ وَفِى كُلٍّ خَيْرٌ احْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ وَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ وَلاَ تَعْجِزْ وَإِنْ أَصَابَكَ شَىْءٌ فَلاَ تَقُلْ لَوْ أَنِّى فَعَلْتُ كَانَ كَذَا وَكَذَا. وَلَكِنْ قُلْ قَدَرُ اللَّهِ وَمَا شَاءَ فَعَلَ فَإِنَّ لَوْ تَفْتَحُ عَمَلَ الشَّيْطَانِ ».
“দূর্বল মুমিনের চেয়ে শক্তিশালী মুমিন উত্তম এবং আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়। প্রত্যেক বস্তুর মধ্যেই কল্যাণ রয়েছে; যা তোমার জন্য উপকারী, তা তুমি কামনা কর এবং আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা কর। আর অক্ষমতা প্রকাশ করো না। কোন বস্তু অর্জন করার পর এ কথা বলো না যে, যদি আমি এরূপ এরূপ কাজ করতাম। বরং বল, আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত এবং তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন; যদি তুমি শয়তানের কাজের উপর বিজয় লাভ করতে চাও।” —(মুসলিম, কদর, বাব-৮, হাদিস নং- ৬৯৪৫)
সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক অবস্থায় উপকারী কর্মের কামনা করতে আদেশ করেছেন। তিনি আরও নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহর সাহায্য চাইতে এবং দূর্বলতা ও অক্ষমতার নিকট আত্মসমর্পন না করতে, যা ক্ষতিকারক অলসতা। তিনি আরও আদেশ করেছেন অতীতকালের বাস্তবায়িত বিষয় এবং আল্লাহর ফয়সালা ও তার নির্ধারিত ভাগ্যকে মেনে নেয়ার জন্য।
আর তিনি সকল কর্ম-কাণ্ডকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন: এক প্রকার কাজ হল বান্দা তা পুরাপুরি বা অংশবিশেষ অর্জনের চেষ্টা-প্রচেষ্টায় অথবা তা প্রতিরোধ করতে বা কিছুটা লাঘব করতে সক্ষম। সুতরাং এই ক্ষেত্রে বান্দা তার চেষ্টা-প্রচেষ্টার শুরু করবে এবং মাবুদের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করবে। আরেক প্রকারের কাজ হল, এই ব্যাপারে তার ক্ষমতা নেই। সতরাং তার ব্যাপারে শান্ত ও সন্তুষ্ট থাকবে এবং তা মেনে নেবে। আর কোন সন্দেহ নেই যে, কোন বান্দা এই নীতি মেনে চললে, তা তার আনন্দ অনুভব করা ও দুশ্চিন্তা দূরের কারণ হবে।

৫. বেশি বেশি আল্লাহর যিকির: হৃদয়ের উদারতা ও মনের প্রশান্তির বড় উপায় হল বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা। কারণ, হৃদয়ের প্রশস্ততা ও মনের প্রশান্তি কায়েম করতে এবং তার দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা দূর করতে যিকিরের আশ্চর্য ধরনের প্রভাব রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ أَلَا بِذِكۡرِ ٱللَّهِ تَطۡمَئِنُّ ٱلۡقُلُوبُ ﴾ [الرعد: 28]
“জেনে রাখ, আল্লাহর স্মরণেই চিত্ত প্রশান্ত হয়।” —(সূরা আর-রা‘দ: ২৮)
সুতরাং বান্দার স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যের লক্ষ্য অর্জন ও তার প্রত্যাশিত সওয়াব ও প্রতিদান পেতে আল্লাহর যিকির বা স্মরণের বিরাট প্রভাব রয়েছে।
 
৬. আল্লাহর নিয়ামতের আলোচনা: অনুরূপভাবে (সৌভাগ্যময় জীবনের অন্যতম উপায় হল) আল্লাহর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল প্রকার নিয়ামতের আলোচনা করা। কারণ, তাঁর নিয়ামত সম্পর্কে জানা এবং তার আলোচনা দ্বারা তিনি বান্দার দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা দূর করেন। আর তিনি বান্দাকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য উৎসাহিত করেন; যেহেতু বান্দা সর্বোচ্চ মরতবা ও মর্যাদার অধিকারী, যদিও সে অভাব-অনটন, অসুস্থতা প্রভৃতি প্রকারের বালা-মুসিবতে থাকে। কারণ, বান্দা যখন তার উপর আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামতের মুখোমুখি হয়, তখন তা গণনা বা হিসাব করা সম্ভব হবে না। আর তিনি সাধারণত বান্দা যেসব অপছন্দনীয় ও কষ্টকর কর্ম-কাণ্ডের শিকার হয়, তাও বর্ণনা করে দিয়েছেন; যে অপছন্দনীয় বস্তু বা বিষয়ের সাথে নিয়ামতের কোন সম্পর্ক নেই। বরং বিপদ-মুসিবত দ্বারা যখন আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাকে পরীক্ষা করেন; বান্দও সেই ব্যাপারে ধৈর্য, সন্তুষ্টি ও মেনে নেয়ার মত দায়িত্ব পালন করে, তখন বিপদের সেই চাপটি সহ্য করা সহজ হয়ে যায়। আর বান্দার সওয়াব ও প্রতিদানের আশা এবং ধৈর্য ও সন্তুষ্টির কর্তব্য পালন করার মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত করার দ্বারা সে তিক্ত বস্তুকে মিষ্টি বস্তু মনে করে। ফলে প্রতিদানের স্বাদ তাকে ধৈর্যের তিক্ততার কথা ভুলিয়ে দেয়।
 
৭. জীবন উপকরেণর ক্ষেত্রে নিম্নমানের ব্যক্তির প্রতি লক্ষ্য করা: এই বিষয়ে সবচেয়ে উপকারী বস্তু হল বিশুদ্ধ হাদিসে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিক নির্দেশনার বাস্তবায়ন করা। তিনি বলেন:
« انْظُرُوا إِلَى مَنْ أَسْفَلَ مِنْكُمْ وَلاَ تَنْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَكُمْ فَهُوَ أَجْدَرُ أَنْ لاَ تَزْدَرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ ».
“তোমরা তোমাদের চেয়ে নিম্নমানের ব্যক্তির দিকে তাকাও। আর তোমাদের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তির দিকে তাকিও না। কারণ, সে উপযুক্ত ও যোগ্যব্যক্তি। আর তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামতকে তুচ্ছ মনে করো না।” —(বুখারী ও মুসলিম)
সুতরাং বান্দার কপালে যখন গৌরবময় ভাগ্যরেখা অঙ্কিত হয়, তখন সে নিজেকে সুস্থতা ও তার সাথে সংশ্লিষ্ট আনুসাঙ্গিক বিষয়ে এবং রিজিক ও তার সাথে সংশ্লিষ্ট আনুসাঙ্গিক বিষয়ের ক্ষেত্রে আল্লাহর সৃষ্ট বান্দাদের অনেকের চেয়ে উন্নত মনে করে। ফলে তার অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা দূর হয় এবং তার আনন্দ ও আল্লাহর নিয়ামতের প্রতি তার সন্তুষ্টি বৃদ্ধি পেতে থাকে।
যখনই আল্লাহর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য, দীনী ও দুনিয়াবী নিয়ামতের প্রতি বান্দার আশা-আকাঙ্খা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে, তখনই সে তার রবকে দেখে যে, তিনি তাকে অনেক কল্যাণ দান করেছেন এবং তারে থেকে বহু অকল্যাণ দূর করেছেন। কোন সন্দেহ নেই যে, তার এই আশা-আকাঙ্খা দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনাসমূহ দূর করবে এবং হাসি-খুশি ও আনন্দকে আবশ্যক করে তুলবে।
৮. দুশ্চিন্তার কারণ দূরকরণে ও সুখ-শান্তি অর্জনের উপায় অবলম্বনে সচেষ্ট হওয়া: দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা দূর করার এবং সুখ-শান্তি অর্জন করার অন্যতম উপায় হচ্ছে দুশ্চিন্তার কারণ দূরকরণে ও সুখ-শান্তি অর্জনের উপায় অবলম্বনে সচেষ্ট হওয়া। আর তা হচ্ছে ব্যক্তি তার অতীতে ঘটে যাওয়া দুঃখ-কষ্ট ভুলে যাবে, যা তার পক্ষে ফিরিয়ে আনা অসম্ভব এবং তাকে বুঝতে হবে যে, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা অনর্থক কাজ। আর এ ধরনের কাজ আহাম্মকী ও পাগলামী যে, তার মন অতীতে ঘটে যাওয়া দুঃখ-কষ্ট নিয়ে চিন্তা-ভাবনায় ব্যস্ত হয়ে উঠবে এবং ঠিক একইভাবে তার মন ভবিষ্যৎ জীবনের কাল্পনিক অভাব-অনটন, ভয়-ভীতি ইত্যাদি ধরনের দুঃখ-কষ্টের চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠবে।
সুতরাং তাকে জানতে হবে যে, ভবিষ্যতকালীন বিষয়াদি অজ্ঞাত ও অস্পষ্ট; তার মধ্যে ভাল, মন্দ আশা-হতাশা এবং দুঃখ-বেদনা সবই থাকতে পারে। আর তা মহাপরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময় আল্লাহর হাতে। তার কোন কিছুই বান্দাদের হাতে নয়। বান্দা শুধু তা থেকে কল্যাণসমূহ অর্জনে এবং অকল্যাণসমূহ থেকে আত্মরক্ষায় সচেষ্ট থাকবে। আর বন্দাকে আরও জানতে হবে যে, সে যখন ভবিষ্যতকালীন বিষয় নিয়ে তার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও চিন্তা-ভাবনা থেকে ফিরে আসবে; তার ভাল-মন্দের ব্যাপারে তার প্রতিপালকের উপর ভরসা করবে এবং এই ব্যাপারে তার প্রতি আস্থাশীল হবে, তখন তার অন্তর শান্তি অনুভব করবে; তার অবস্থার উন্নতি হবে এবং তার সকল দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর হয়ে যাবে।
 
৯. দীন, দুনিয়া ও আখেরাতকে সুন্দর করার জন্য প্রার্থনা: ভবিষ্যৎ বিষয়ে মনোযোগ দেয়ার সবচেয়ে উপকারী পন্থা হল এই দো‘আটি যার দ্বারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রার্থনা করতেন। তিনি বলতেন:
« اللَّهُمَّ أَصْلِحْ لِى دِينِىَ الَّذِى هُوَ عِصْمَةُ أَمْرِى وَأَصْلِحْ لِى دُنْيَاىَ الَّتِى فِيهَا مَعَاشِى وَأَصْلِحْ لِى آخِرَتِى الَّتِى فِيهَا مَعَادِى وَاجْعَلِ الْحَيَاةَ زِيَادَةً لِى فِى كُلِّ خَيْرٍ وَاجْعَلِ الْمَوْتَ رَاحَةً لِى مِنْ كُلِّ شَرٍّ ».
“হে আল্লাহ! তুমি আমার দীনকে সংশোধন করে দাও, যা আমার কর্ম-কাণ্ডকে পাপমুক্ত রাখবে; তুমি আমার দুনিয়াকে সংশোধন করে দাও, যার মধ্যে আমার জীবন-জীবিকা রয়েছ এবং তুমি আমার আখেরাতকে সংশোধন করে দাও, যেখানে আমাকে ফিরে যেতে হবে। আর তুমি প্রতিটি কল্যাণের জন্য আমার হায়াতকে বাড়িয়ে দাও এবং খারাপ বা অকল্যাণের চেয়ে আমার জন্য মৃত্যুকে আনন্দদায়ক করে দাও।” —(মুসলিম, যিকির, দো‘আ ও তাওবা, বাব নং- ১৮, হাদিস নং- ৭০৭৮)
অনুরূপভাবে তিনি আরও বলেন:
« اللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو فَلاَ تَكِلْنِى إِلَى نَفْسِى طَرْفَةَ عَيْنٍ وَأَصْلِحْ لِى شَأْنِى كُلَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ ».
“হে আল্লাহ! আমি শুধু তোমার রহমতেরই প্রত্যাশা করি, সুতরাং তুমি এক মুহূর্তের জন্যও আমাকে আমার দায়িত্বে ছেড়ে দিয়ো না। আর তুমি আমার সকল বিষয় সংশোধন করে দাও; তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই।” —(আবু দাউদ, আদব, বাব নং- ১১০, হাদিস নং- ৫০৯২; আলবানী হাদিসটির সনদকে হাসান বলেছেন)
সুতরাং বান্দা যখন এই দো‘আটি বিশুদ্ধ নিয়তে মনোযোগ দিয়ে তার বাস্তব দিক নিয়ে চিন্তা-গবেষণাসহ পাঠ করবে, যার মধ্যে তার দীনী ও দুনিয়াবী ভবিষ্যৎ কল্যাণ নিহিত রয়েছে, তখন আল্লাহ তার প্রার্থনা, প্রত্যাশা ও সে জন্য তার কাজ করাকে বাস্তবে রূপ দেবেন এবং তার দুশ্চিন্তাকে খুশি ও আনন্দে রূপান্তরিত করবেন।
১০. বিপদ-মুসিবত লাঘব করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা-সাধনা করা: বান্দা যখন দুর্ঘটনা কবলিত হয়, তখন তার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও দুশ্চিন্তা দূর করার অন্যতম কার্যকারী উপায় হল তা লাঘব করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা-সাধনা করা এবং তার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নেয়া। সুতরাং সে যখন এ জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে, তখন তার কর্তব্য হল সম্ভাব্যতার আলোকে যতটুকু লাঘব করা সম্ভব ততটুকু লাঘবের জন্য চেষ্টা-সাধনা করা। অতএব তার এই প্রস্তুতি ও ফলপ্রসু চেষ্টা-সাধনার দ্বারা তার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও দুশ্চিন্তাসমূহ দূর হবে। আর এই চেষ্টা-সাধনার বিনিময়ে বান্দর জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা আসবে এবং বহু ক্ষয়-ক্ষতি প্রতিরোধে হবে।
সুতরাং যখন তাকে ভয়-ভীতি, রোগ-ব্যাধি, অভাব-অনটন ও বিভিন্ন প্রকার পছন্দনীয় বস্তুর ঘাটতির কারণসমূহ আচ্ছন্ন করে ফেলবে, তখন সে যেন এতেই প্রশান্তি লাভ করে এবং নিজের জন্য এই পরিবেশকে অথবা তার চেয়ে আরও কঠিন পরিবেশকে বাসস্থান হিসেবে গ্রহণ করে। কারণ, দুঃখ-কষ্টের সম্ভাবনাময় পরিবেশে কোন ব্যক্তি বসবাস করলে তার জন্য তা থেকে উত্তরণ সহজ হয় এবং তার ভয়াবহতা দূর হতে থাকে। বিশেষ করে যখন সে নিজেকে তার সাধ্যানুযায়ী দুঃখ-কষ্ট প্রতিরোধে ব্যস্ত রাখে, তখন সে বিপদ-মুসিবত দূর করার জন্য ফলপ্রসু চেষ্টা-সাধনার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে বসবাস করতে থাকে এবং দুঃখ-কষ্ট মূলোৎপাটনে আল্লাহর উপর ভরসা ও সুন্দর আস্থা রেখে নতুন নতুন শক্তি ও কৌশল প্রয়োগে নিজেকে ব্যতিব্যস্ত রাখে। কোন সন্দেহ নেই যে, বান্দার ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন প্রতিদান লাভের আশা-আকাঙ্খার সাথে সাথে সুখ-শান্তি ও হৃদয়ের প্রসারতা ও উদারতার গুণ অর্জনে এসব কর্ম-কাণ্ডের বিরাট উপকারিতা রয়েছে। আর এটা অভিজ্ঞতালব্ধ দৃশ্য বা দৃষ্টান্ত, যা সংঘটিত হয় অনেক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তির পক্ষ থেকে।
১১. মনোবল বৃদ্ধি এবং কল্পনাপ্রসূত অস্বস্তি ও আবেগ-উত্তেজনা বর্জন করা: মানসিক ও শারীরিক রোগ চিকিৎসার অন্যতম উপায় হচ্ছে মনোবল বৃদ্ধি এবং কল্পনাপ্রসূত অস্বস্তি ও আবেগ-উত্তেজনা বর্জন করা, যা দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনার জন্ম দেয়। কারণ, মানুষ যখন কল্পনার নিকট আত্মসমর্পন করে এবং তার মন যখন রোগ-ব্যাধি, ক্রোধ, বেদনাদায়ক কারণে বিশৃঙ্খলা, দুঃখ-কষ্টে নিপতিত হওয়া ইত্যাদির প্রভাবে উত্তেজিত হয়ে উঠে, এসব তখন তাকে দুশ্চিন্তা, দুর্ভাবনা, মানসিক ও শারীরিক রোগ এবং স্নায়ুবিক দুর্বলতার দিকে ঠেলে দেয়; তার এমন অনেক কুপ্রভাব রয়েছে, যার বহু ক্ষতিকারক দিক সাধারণ মানুষ প্রত্যক্ষ করে।
১২. আল্লাহর উপর ভরসা করা: যখন বন্দার অন্তর আল্লাহ নির্ভরশীল হয়, সে নিজেও তার (আল্লাহর) উপর ভরসা করে, আন্দাজ-অনুমান ও কল্পনার নিকট আত্মসমর্পন না করে, দুশ্চিন্তা ও খারাপ কল্পনার অধিকারী না হয়, আল্লাহর প্রতি আস্থাশীল হয় এবং তার অনুগ্রহের আশা-আকাঙ্খা পোষণ করে, এসব দ্বারা তখন তার দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনাসমূহ প্রতিরোধ হবে এবং তার মানসিক ও শারীরিক রোগসমূহ দূর হয়ে যাবে। আর মানসিক শক্তি, উদারতা ও প্রফুল্লতা অর্জিত হবে। সুতরাং অনেক হাসপাতাল ভরপুর হয়েছে দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনাগ্রস্ত মানসিক রোগীদের দ্বারা। আর এসবের কারণে দুর্বল ব্যক্তি ছাড়াও অনেক শক্তিশালী লোকের মনের উপর প্রভাব বিস্তার করেছে এবং আহাম্মক ও পাগলে পরিণত করেছে। তার প্রভাব থেকে শুধু ঐ ব্যক্তিই বেঁচে গেছে, যাকে আল্লাহ ক্ষমা করেছেন এবং মানসিক শক্তি বৃদ্ধি ও মনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর করার ফলপ্রসু উপায় অবলম্বনের যথাযথ চেষ্টা-প্রচেষ্টা করার তাওফিক দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ وَمَن يَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِ فَهُوَ حَسۡبُهُ ﴾ [الطلاق:3]
“যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট।” —(সূরা আত-তালাক: ৩)
সুতরাং আল্লাহর উপর ভরসাকারী ব্যক্তি মানসিকভাবে শক্তিশালী, যাকে কোন কুধারনা ও দুশ্চিন্তা- দুর্ভাবনা প্রভাবিত করতে পারে না। আর তাকে কোন ঘটনা-দুর্ঘটনা বিরক্ত করতে পারে না তার এই জ্ঞান থাকার কারণে যে, নিশ্চয় এটা মানসিক দুর্বলতা এবং অবাস্তব ভয়-ভীতির কারণে সংঘটিত হয়েছে। এতদসত্ত্বেও সে জানে যে, যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে, তিনি তার সকল দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ফলে সে আল্লাহর প্রতি আস্থাশীল হয় এবং তাঁর প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে নিশ্চিত হয়। এতে তার দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা দূর হয়; দুঃখ সুখে পরিণত হয়; দুঃখ-কষ্ট আনন্দে রূপান্তর হয় এবং ভয়-ভীতি পরিণত হয় নিরাপত্তায়। সুতরাং আমরা আল্লাহ তা‘আলার নিকট সুস্থতা কামনা করছি এবং আরও প্রার্থনা করছি তিনি যেন আমাদের উপর অনুগ্রহ করেন মানসিক শক্তি ও তাঁর উপর পূর্ণ ভরসায় অটল থাকার দ্বারা, যে ভরসার কারণে আল্লাহ তার সকল কল্যাণের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন এবং সকল অকল্যাণ ও ক্ষয়-ক্ষতির প্রতিরোধ করবেন।
১৩. মন্দ আচরণের পরিবর্তে ইহসান করা: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী:
« لاَ يَفْرَكْ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً إِنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا رَضِىَ مِنْهَا آخَرَ ».
“কোন মুমিন বান্দা কোন মুমিন বান্দীকে ঘৃণা করবে না। তার কোন আচরণকে সে অপছন্দ করলেও তার কোন কোন আচরণকে সে পছন্দ করবে।” —(মুসলিম, রিদা‘, বাব-১৮, হাদিস নং- ৩৭২১)—এর মধ্যে দুইটি বড় ফায়দা রয়েছে:
ফায়দা-১: স্ত্রী, নিকটাত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও কর্মচারীর সাথে আচার-ব্যবহারের দিকনির্দেশনা; এদের প্রত্যেকের সাথে তোমার একটা ভাল সম্পর্ক রয়েছে। আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য এমন হওয়া উচিত যে, ব্যক্তির মধ্যে দোষ-ত্রুটি অথবা এমন কোন বিষয় রয়েছে যা আপনি অপছন্দ করেন; সুতরাং আপনি যখন তাকে এই অবস্থায় পাবেন, তখন আপনি বর্তমান পরিস্থিতি ও আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে তুলনামূলক পর্যালোচনা করুন। আপনার উচিৎ হবে তার মধ্যকার ভাল দিকগুলো ও বিশেষ ও সাধারণ উদ্দেশ্যসমূহের উল্লেখ করে সম্পর্ককে সুদৃঢ় করা এবং ভালবাসাকে স্থায়ী রূপ দেয়া। আর এভাবে মন্দ দিকগুলোকে উপেক্ষা করে এবং ভাল দিকগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বন্ধুত্ব ও সম্পর্ক অব্যাহত রাখা এবং তার জন্য শান্তি ও আনন্দকে পরিপূর্ণ করা।
ফায়দা-২: দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা দূর করা; হৃদ্যতা বজায় রাখা; ওয়াজিব ও মুস্তাহাব অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা অব্যহত রাখা এবং উভয় দিক তথা ইহকালীন ও পরকালীন জগতে শান্তি অর্জন করা। আর যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন, তা পথনির্দেশ হিসেবে গ্রহণ করে না; বরং তার বিপরীত বিষয়কে পথনির্দেশ হিসেবে গ্রহণ করে; অতঃপর খারাপ ও মন্দসমূহের দিকে দৃষ্টি দেয় এবং উত্তম ও সুন্দর বিষয়ের ক্ষেত্রে অন্ধের ভূমিকা পালন করে। ফলে সে নিশ্চিতভাবে অস্থিরতা অনুভব করে; তার মধ্যে ও যিনি তার সাথে ভালবাসার সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চান, তাদের উভয়ের মধ্যকার সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় এবং তাদের উপর পরস্পরের অধিকার সংরক্ষণের যে দায়িত্ব রয়েছে, তার সিংহভাগ দায়িত্ব পালন সঙ্কোচিত হয়ে যায়।
চরম দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ব্যক্তিদের অনেকেই বিভিন্ন প্রকার দুর্যোগ ও বিপদ-মুসিবতের সময় নিজেদেরকে ধৈর্যধারণ ও শান্ত থাকার প্রবোধ দিয়ে থাকে; কিন্তু তারাই আবার অনেক তুচ্ছ বিষয়ে অস্থির হয়ে উঠে এবং পরিচ্ছন্নতাকে পঙ্কিলতায় পরিণত করে। এর একমাত্র কারণ হল, তারা বড় বড় বিষয়ের ক্ষেত্রে নিজেদেরকে দায়িত্ববান মনে করে এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ের ক্ষেত্রে তেমন দায়িত্ববান মনে করে না। ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তাদের শান্তি ও নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটে। সুতরাং বুদ্ধিমান লোক নিজেকে ছোট ও বড় সকল বিষয়েই দায়িত্ববান মনে করে এবং এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলার নিকট সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করে। এক মুহূর্তের জন্যও সে নিজেকে দায়িত্বহীন মনে করে না। ফলে তার নিকট ছোট-বড় সকল সমস্যাই সহজ হয়ে যায় এবং প্রশান্ত হৃদয়ে বহাল তবিয়তে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে থাকে।
১৪. বুদ্ধিমান ব্যক্তি জানেন যে, তার সঠিক জীবনটাই সৌভাগ্যময় ও শান্তিময় জীবন। আর এটা খুবই সংক্ষিপ্ত। সুতরাং তার জন্য উচিত হবে না যে, দুশ্চিন্তা ও পাপ-পঙ্কিলতায় জড়িয়ে সে জীবনকে নষ্ট করা। অপরদিকে সঠিক জীবনের বিপরীত জীবনব্যবস্থা তার হায়াতকে সঙ্কুচিত করে দেয় এইভাবে যে, দুশ্চিন্তা ও পাপ-পঙ্কিলতার প্রস্তুতির কারণেই তার জীবন থেকে বহু সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। আর এ ক্ষেত্রে পুণ্যবান ও পাপীর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। কিন্তু এই গুণটি (সৎগুণটি) প্রতিষ্ঠিত থাকার করণে মুমিন ব্যক্তির জন্য ইহকালে ও পরকালে পরিপূর্ণ ও উপকারী অংশ বরাদ্ধ রয়েছে।
১৫. বুদ্ধিমান ব্যক্তির আরও কর্তব্য হল, যখন সে দুঃখ-কষ্ট পাবে অথবা ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা করবে, তখন সে দীনী ও দুনিয়াবী অর্জিত অপরাপর নিয়ামতসমূহ ও আক্রান্ত দুঃখ-কষ্টের মধ্যে তুলনামূলক পর্যালোচনা করবে। অতঃপর পর্যালোচনার সময় তার নিকট এ কথা পরিষ্
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×