ক্লাস নাইনে থাকতে একদিন খুব ঝাপিয়ে বৃষ্টি পড়ছিল। ্ওমন বৃষ্টি দেখে যে কারো বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছা করবে। আর্ও কি, ঠিক টিফিন টাইমে ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়েছে। মুশকিল হলো কামরুননেসা আপা কঠিন ভাবে না করে দিয়েছেন বৃষ্টিতে ভিজতে। বাইরে এত্তো সুন্দর বৃষ্টি, কিছুতেই না শুনতে ইচ্ছা করছিল না। রাশার টিফিন ছিল না, টাকা এনেছিল। ্ওর সাথে টিফিন কেনার ছুতো করে আমরা পাঁচ বান্ধবী বেরিয়ে পড়েছিলাম। আকাশ থেকে গ্যালনকে গ্যালন পানি আমাদের উপর পড়ছিল, কাপড়ের জ ুতোর ভিতর পানি ঢুকে অস্বস্তিকর অবস্থা। কাপড়ের একটু্ও শুকনো ছিল না। তবু, একটু পরে কি হবে না হবে কিচ্ছু না ভেবে আমরা পাঁচ জন কিশোরী প্রচন্ড বৃষ্টিতে হাত ধরাধরি করে শ্রাবনের ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম। হাঁটছিলাম। গানের ব্যপারে টুম্পা আমার গুরু, ্ওর থেকেই রবীন্দ্র সংগীতের প্রতি ভালবাসাটা গড়ে উঠেছিল। মনে আছে সেদিন গান গাচ্ছিলাম... আজি রিমিঝিমি ঘন ঘন রে, বরষে...
বৃষ্টিতে রিকশা চড়াতো অসাধারণ অভিজ্ঞতা, এখন আমার জন্য অনেক দূরের এক সুখময় স্মৃতি। একদিন একা একা কোচিং থেকে ফেরার পথে ঝুম বৃষ্টিতে হুড ফেলে দিয়ে, ম্যাট ছাড়া রিকশায় উঠলাম। রিকশা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢুকতেই ফাঁকা রাস্তা পেয়ে ্উড়া শুরু করলো। আমি চোখ বন্ধ করলাম। পাগলা বাতাস আর বৃষ্টি আমার চোখে, মুখে, ঠোঁটে এসে পড়ছিল... সে কি ভীষণ ভালো লাগা...
একই অনুভূতি পেতে আজ অনেক দিন পরে আকাশের দিকে চোখ বন্ধ করে মুখ তুললাম। আমার স্কার্ট, কালো কোট, হিজাব ভিজে গিয়েছিল। কানে তখন এম পি থ্রি প্লেয়ার থেকে শ্রীকান্ত গেয়ে যাচ্ছিল বিষন্ন গলায়... "আজ শ্রাবনের আমন্ত্রনে..."
স্যরি একটু বেশি কাব্যিক কাব্যিক হয়ে গেছে... কি করবো, সব বৃষ্টির দোষ...
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০