somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ শ্রাবনের আমন্ত্রনে...

১৬ ই মার্চ, ২০০৬ সকাল ৮:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উইলো গাছের নিচে কাঠের বেঞ্চিতে বসে প্রোগ্রামিঙের খটমটে ভাষায় ডুবে যা্ওয়ার চেষ্টা করছিলাম। ঠিক, ঠিক তখনই দুষ্টু পানির ফোঁটাটা গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে জায়গা করে নিয়ে আমার বইয়ের পাতায় টুপ করে পড়লো... আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি কাল হয়ে এসেছে, প্রচন্ড অভিমানে একটু একটু কান্না শুরু করেছে। আমি শ্রাবনের আমন্ত্রন উপেক্ষা করতে পারলাম না। বই খাতা গুটিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। তখন্ চারটা বাজে। তিন ঘন্টার ল্যাবটা শুরু হয় পাঁচটায়। আমি একা একা টিপটিপ বৃষ্টিতে হাঁটা শুরু করলাম ছবির রাস্তাটা ধরে। শুধুই টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছিল। অথচ সবাই কেমন ব্যস্ত হয়ে হাঁটছিল। এক ছাতার নিচে ঢোকার জন্য গুঁতোগুঁতি, হাতের ফাইলটাকে ছাতা বানানোর প্রয়াশ... একজন দেখি জুতা খুলে হাঁটছে। সবুজ ভিজা লনে একটা দৃশ্য দেখে দাঁড়িয়ে পড়লাম। আমাদের বয়সী তিনজন ছেলে ভিজা ঘাসে খালি পা ডুবিয়ে ছুটাছুটি করছিল। ্ওদের পায়ের চাপে ভেজা ঘাস দুমড়ে যাচ্ছে, ঘাস থেকে পানি ছিটকে উঠছে। দৃশ্যটায় একটা স্বাভাবিক, কেয়ার ফ্রি, স্বাধীন ভাব ছিল, যেটা দেখার জন্যই দাঁড়িয়ে গেলাম।
ক্লাস নাইনে থাকতে একদিন খুব ঝাপিয়ে বৃষ্টি পড়ছিল। ্ওমন বৃষ্টি দেখে যে কারো বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছা করবে। আর্ও কি, ঠিক টিফিন টাইমে ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়েছে। মুশকিল হলো কামরুননেসা আপা কঠিন ভাবে না করে দিয়েছেন বৃষ্টিতে ভিজতে। বাইরে এত্তো সুন্দর বৃষ্টি, কিছুতেই না শুনতে ইচ্ছা করছিল না। রাশার টিফিন ছিল না, টাকা এনেছিল। ্ওর সাথে টিফিন কেনার ছুতো করে আমরা পাঁচ বান্ধবী বেরিয়ে পড়েছিলাম। আকাশ থেকে গ্যালনকে গ্যালন পানি আমাদের উপর পড়ছিল, কাপড়ের জ ুতোর ভিতর পানি ঢুকে অস্বস্তিকর অবস্থা। কাপড়ের একটু্ও শুকনো ছিল না। তবু, একটু পরে কি হবে না হবে কিচ্ছু না ভেবে আমরা পাঁচ জন কিশোরী প্রচন্ড বৃষ্টিতে হাত ধরাধরি করে শ্রাবনের ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম। হাঁটছিলাম। গানের ব্যপারে টুম্পা আমার গুরু, ্ওর থেকেই রবীন্দ্র সংগীতের প্রতি ভালবাসাটা গড়ে উঠেছিল। মনে আছে সেদিন গান গাচ্ছিলাম... আজি রিমিঝিমি ঘন ঘন রে, বরষে...
বৃষ্টিতে রিকশা চড়াতো অসাধারণ অভিজ্ঞতা, এখন আমার জন্য অনেক দূরের এক সুখময় স্মৃতি। একদিন একা একা কোচিং থেকে ফেরার পথে ঝুম বৃষ্টিতে হুড ফেলে দিয়ে, ম্যাট ছাড়া রিকশায় উঠলাম। রিকশা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢুকতেই ফাঁকা রাস্তা পেয়ে ্উড়া শুরু করলো। আমি চোখ বন্ধ করলাম। পাগলা বাতাস আর বৃষ্টি আমার চোখে, মুখে, ঠোঁটে এসে পড়ছিল... সে কি ভীষণ ভালো লাগা...
একই অনুভূতি পেতে আজ অনেক দিন পরে আকাশের দিকে চোখ বন্ধ করে মুখ তুললাম। আমার স্কার্ট, কালো কোট, হিজাব ভিজে গিয়েছিল। কানে তখন এম পি থ্রি প্লেয়ার থেকে শ্রীকান্ত গেয়ে যাচ্ছিল বিষন্ন গলায়... "আজ শ্রাবনের আমন্ত্রনে..."

স্যরি একটু বেশি কাব্যিক কাব্যিক হয়ে গেছে... কি করবো, সব বৃষ্টির দোষ...
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
২১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×