গত ২০ নভেম্বর ২০১৩ দৈনিক দেশেরপত্র পত্রিকার ৫জন হকার বি.বাড়ীয়ার রেলগেইট এলাকায় পত্রিকা বিক্রয়ের সময় পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা জামিয়া ইসলামীয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসার ৭০/৮০ জন ছাত্র ও শিক্ষক দেশীয় তৈরী ধারালো অস্ত্র রামদা, তলোয়ার, চা-পাতি, ক্রিজ ইত্যাদি নিয়ে নিরস্ত্র পত্রিকা বিক্রেতাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। কুপিয়ে ৫জনকে মারাত্মকভাবে আহত করে। কারও কারও হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়। -
৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বি.বাড়ীয়া সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাস্তায় প্রতিপক্ষের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় পুলিশ প্রহরায় পাঠানো হয়। ৪ জন কনস্টেবল তাদেরকে বি.বাড়ীয়া সদর হাসপাতাল থেকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চলে যায়। আহতদের মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে ধারালো অস্ত্রের গভীর আঘাত পরিলক্ষিত হয়। তাদের হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে। হাত পায়ের আঘাতের নমুনা দেখে বোঝা যায় হাত ও পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা চেষ্টা করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে জানা যায়, হকাররা পত্রিকা বিক্রয়ের সময় জামিয়া ইসলামীয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসার ৭০/৮০ জন ছাত্র ও শিক্ষক এবং তাদের ভাড়া করা কিছু অস্ত্রধারী লোক একে একে ৫ জন হকারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করলে ৪ জনই সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। মাটিতে পড়ে থাকা অজ্ঞান হকারদের শরীরের বিভিন্নস্থানে কোপানো হয় এবং হাত ও পা কেটে দেওয়া হয়। পুলিস এসে মাদ্রাসাশিক্ষক ও তাদের অস্ত্রধারীদের কবল থেকে ৪ জন হকারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তাদের বিরুদ্ধে মোল্লাদের ফতোয়া হচ্ছে এরা কাদিয়ানী। সুতরাং তাদেরকে দমন করতে তাদেরকে নির্মমভাবে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে এভাবে চড়াও হয়। প্রশ্ন হচ্ছে যদি তারা কাদিয়ানী না হয়ে থাকে এবং তাদের ফতোয়া যদি ভুল হয় তবে এই ধর্মজীবীদের শাস্তি কী হওয়া উচিত?
আপডেট: অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের সভাপতি বিশিষ্ট আইনজীবি মনজিল মোরশেদ এক বিবৃতিতে বলেন যে, ইসলামের মতো শান্তিপূর্ণ ধর্মের নামে অশান্তি সৃষ্টি করা কোন ধার্মিক লোকের কাজ নয়। যারা এমনটি করেছে তারা যেমন ধর্মের শত্র“ তেমনি আইনের শত্র“, রাষ্ট্রের শত্র“। ধর্মজীবীদের এহেন হীন কার্যকলাপের কঠোর সমালোচনা করে মানবাধিকার সংগঠনের সভাপতি সাবেক বিচারপতি শিকদার মুকবুল হক বলেন, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় হামলাকারী উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। ফ্রিডম জার্নালিস্ট এন্ড রাইটার্স ফাউন্ডেশনের সভাপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, এই হামলা সংবাদ পত্রের উপরে হামলা, সাংবাদিক সমাজের উপরে হামলা। এই বর্বরোচিত হামলা সাংবাদিক সমাজ কখনো মেনে নিবে না। এহেন বর্বরচিত ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে গ্রেফতার পূর্বক আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দৈনিক দেশেরপত্রের প্রধান উপদেষ্টা মসীহ উর রহমান আহবান করেছেন। তিনি আরো বলেন একটি দৈনিক পত্রিকা হচ্ছে গণমাধ্যম। এখানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদের পাশাপাশি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ, নিবন্ধ, সাহিত্যকর্ম ইত্যাদি প্রকাশিত হয়। কোন গবেষণা কর্মের বিপক্ষে কারো মত থাকলে সে নিজেও একটা প্রবন্ধ লিখে পাঠাতে পারে, প্রতিবাদ পাঠাতে পারে, প্রেস কাউন্সিলে যেতে পারে, আইনের আশ্রয় নিতে পারে। সে সকল বৈধ পন্থা অবলম্বন না করে প্রকাশ্যে পত্রিকা পুড়িয়ে দেওয়া, কাদিয়ানীর পত্রিকা বলে অপপ্রচার চালিয়ে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করে হত্যার প্রচেষ্টা চলানো কোন ধরণের মানসিকতা? হীনমন্য, কূপমণ্ডুক ধর্মব্যবসায়ীদের এইরকম মধ্যযুগীয় জঘণ্য বর্বর কর্মকাণ্ডের জন্য আজ দুনিয়াময় এসলামের বদনাম হচ্ছে। - See more at: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫০