মেয়ে,
আমি আগে ডায়েরি লেখতাম। তবে এখন বলতে গেলে লেখাই হয়না। খুব কম ই বলা চলে। তবে মাঝে মাঝে ডায়েরির উপর আলতো করে হাতটুকু বুলিয়ে বুকের মাঝে জড়িয়ে নেই।
অনেক সময় অনেক কথা চাইলেও কারো সাথে শেয়ার করা যায়না। যা আমি এই ডায়েরির সাথে করতাম। ডায়েরিটা খুললে কোনোদিনই এক বা দু পৃষ্ঠার বেশী পড়া হয়না। এতোটুকু পড়ার আগেই দু চোখ হতে জল ঝরে পড়ে।
ছেলেদের তো আবার কাঁদতে নেই। তাই থেমে যাই। হয়তোবা বোবা কান্নাই কেঁদে বেড়াই।
ডায়েরিটা সুখ আর দুঃখের স্মৃতির সংমিশ্রণে গঠিত। কি আজব! আগে আমি ভাবতাম শুধুমাত্র দুঃখের স্মৃতি রোমন্থন করলেই বুকের বাম পাশে চিনচিন ব্যাথা অনুভব হয়। কিন্তু এখন তো দেখছি সুখের স্মৃতি হাতরিয়ে বেড়ালেও এমনটা হয়।
.
একদিন ডায়েরিটা আগুনে পুড়িয়ে ফেলবো। আচ্ছা আগুনে পোড়ার সাথে সাথে কাগজ যেভাবে ছাই এ পরিণত হয়। তেমনি স্মৃতিগুলো ও কি পুড়ে ছাই এর মতো হয়ে যাবে?
হঠাৎই দমকা বাতাসে ছাইগুলো একত্রে মিলিত হয়ে আকাশে উড়ে বেড়াবে। পৃথিবীর আরেক প্রান্তে মেয়েটি একাকি দাড়িয়ে থাকবে। ছাইগুলো মেয়েটির উপর উড়ে বসবে। মেয়েটির স্পর্শে ছাইগুলো আবার কাগজে পরিণত হবে। আর কাগজে পরিণত হলেই তো আবার। উহু! আর ভাবতে পারছিনা। এভাবে হবেনা।
.
এর চেয়ে বরং আমি আমার সেই চিরচেনা জায়গাটায় চলে যাবো। যেখানে আমি আমার মন খারাপ হলে প্রায়সময়ই চলে যেতাম। জনমানবহিন সমুদ্রতটে আমি একটা একটা করে ডায়েরির পাতাগুলো ছিড়বো। আর নৌকা বানিয়ে ভাসিয়ে দিবো।
পৃথিবীর কোনো এক সমুদ্রের আরেক প্রান্তে মেয়েটি হেটে বেড়াবে। হঠাৎ সে দেখবে দূর হতে ভেসে আসবে হালকা নীল বর্ণের ওই কাগজের নৌকোটি। মেয়েটি নৌকোটি উঠিয়ে নিবে। মেয়েটির স্পর্শে ভেজা নৌকোটি শুকনো কাগজে পরিণত হবে। আর তারপর....
.
নাহ। আর ভাবতে পারছিনা আমি। সব কথা জানতে নেই। কিছু কিছু কথা অপ্রক্যাশিত থেকে যায়। কিছু কথা গোপনেই থেকে যাকনা। ক্ষতি কি!
ছেলেটি জানে মেয়েটি ঠিকই জেনে যাবে। ঠিকই বুঝে নিবে তাকে। আকাশে দুটো শুভ্র নীলাভ মেঘ একসাথে ভেসে বেড়াবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৭