somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শবে বরাতকে বিদাত, হারাম ফতোয়াদানকারী কট্টরপন্থী ওহাবীদের গালে দলিলের থাপ্পড়

২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ৮:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পবিত্র শবে বরাত অস্বীকারকারী মাথায় বোরকা এবং গোলায় দড়ি লটকানো সকল জোকার নালায়েক নামকাওয়াস্তে মুসলমান তথা ওহাবী আহলে হাদিস সম্প্রদায়কে প্রকাশে চ্যালেঞ্জ করলাম। যদি তাদের মধ্যে কেউ প্রমান করতে পারে যে শবে বরাত পালন করা বিদাত এটা কুরআন হাদিসে নাই। তাহলে rastar মোড়ে তাদের সেন্ডেল হবে আর আমার গাল থাকবে।

অনেক নামকাওয়াস্তে মুসলমানরুপী কিছু কাফের লোক ইতিহাসে যারা ওহাবী আহলে হাদিস জোকার নালায়েকরা বলে বেড়ায় যে পবিত্র শবে বরাত নাকি বিদাত, কুরআন হাদিসে এটা নাই। যা ডাহা মিথ্যা ছাড়া আর কিছু নাই। যারা বলে শবে বরাত কুরআন/হাদিসে নাই তাদেরকে বলবো কুরআন হাদিসে নামাজ, রোজাও কথাও নাই, দেখাতে পারলে আপনার গোলাম আমি।

আসলে “শবে বরাত” হচ্ছে ফারসী শব্দ যা আরবী “শাবান” থেকে আগত। তাহলে শবে বরাত ফারসী শব্দ হয়ে কি কোরআনে পাওয়া যাবে..? এই হচ্ছে খলনায়কদের ছলচাতুরী। এবার কান ধরে দেখায় কোথায় কোথায় পবিত্র শবে বরাতের আলোচনা করা হয়েছে। শবের বরাতের আলোচনা সিহা সিত্তার সহি মুসলিম, সহি ইবনে দাউদ, সহি নাসাই, শুনানে ইবনে মাজা সহ অন্যান্য অনেক অনেক হাদিস গ্রন্থে পবিত্র শবে বরাতের মহিমা আর এর ফজিলত এসেছে। তাহলে পাঠক একটু ভাবুনতো সিহা সিত্তার সব হাদিসে পবিত্র শবে বরাতের ফজিলত বর্ণনা থাকার পরেও এই নামকাওয়াস্তে মুসলমানরা কেন এর বিরোধীতা করে আর অপপ্রচার চালাই যে শবে বরাত বিদাত, হারাম..?
আসলে ঘরে বসে বরে রিয়াল আর ডোলারে প্রেমে বিভোর এরা কি না করতে পারে রিয়াল আর ডোলারের জন্য।

সম্মানিত পাঠক! মিথ্যার একটু সীমা থাকা দরকার। অথচ এ বিষয়ে অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে, যা লেখাটি দীর্ঘায়িত হওয়ার আশংকায় আমি পুরোপুরি উল্লেখ করতে ইচ্ছুক নই। তারপরেও বলে রাখি এখানে আহলে হাদিস সম্প্রদায়ের অপপ্রচার তথা তাদের গালে দলিলের থাপ্পড় মারতে আমি এখানে খুবই সংক্ষিপ্ত আকারে দলিল পেশ করছি। কারন পুরো দলিল আর রেফারেন্স হয়তো জোকার তথা আহলে হাদিস সম্প্রদায় হার্ট এটাক করতে পারে।

দলিল নং-০১
(তিরমিজি শরিফ,খন্ড:-০২,হাদিস-৭৩৯)
হযরত আয়েশা(রাদ্বিয়াল্লাহ আনহা) হতে বর্ণিত------এক রাত্রিতে আমি হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)কে না পেযে খুজতে খুজতে জান্নাতুল বাকীতে পেলাম, এবং হুযুর ফরমালেন-আয়েশা তুমি কি জানো.? আজ ১৫ই শাবান এর রাত্রি এবং এই রাত্রিতে আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি আহবান করতে থাকেন যে, কেউ কি আছো যে আমার থেকে কিছু আশা কর, আমি আজকে তা প্রদান করিব । এবং হুযুর আরো বলিলেন যে এই রাত্রিতে আল্লাহ বানু ক্বাল্ব গোত্রের বকরির লোম এর চেয়ে বেশি পরিমান গুনাহগার লোক কে ক্ষমা করে থাকেন.......
(তিরমিজি শরিফ,খন্ড:-০২,হাদিস-৭৩৯)

দলিল নং-০২
(সুনানে তিরমিযী, ২য় খন্ড, ১৮২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৭৩৬, দারুল ফিক্‌র, বৈরুত)
উম্মুল মুমিনীন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়িশা সিদ্দিকা বর্ণনা করেন: হুযুর আকরাম, নূরে মুজাস্‌সম, শাহে বনী আদম, রাসুলে মুহতাশাম, শফিয়ে উমাম কে আমি শাবান মাসের চেয়ে বেশী রোযা অন্য কোন মাসে রাখতে দেখিনি। তিনি কিছু দিন ব্যতীত সম্পূর্ণ মাসই রোযা রাখতেন।
(সুনানে তিরমিযী, ২য় খন্ড, ১৮২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৭৩৬, দারুল ফিক্‌র, বৈরুত)

দলিল নং-০৩—
(সুনানে আবু দাউদ, খন্ড-০২, হাদিস-২৪৩১)
হযরত সাইয়েদনা আব্দুল্লাহ বিন আবু কাইস হতে বর্নিত- আমি হযরত আয়েশা (রাদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহা)থেকে শুনেছি যে, হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)এর সবচেয়ে পছন্দময় মাস ছিল শাবান মাস। কারন এই মাসে তিনি সব চেয়ে বেশি রোজা রাখতেন এবং এই মাসকে তিনি রমজানের সাথে মিলিয়ে দিতেন....
(সুনানে আবু দাউদ, খন্ড-০২, হাদিস-২৪৩১, ২৪৩১, পৃষ্ঠা-৪৭৬)

দালিল নং-০৪-
(সুনান-ই-ইবনে মাজাহ, খন্ড-০২,পৃষ্ঠা-১৬০, হাদিস-১৩৮৮ এবং মিশকাত শরিফ-১১৫)
হযরত আলী হে বর্ণিত - হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ফরমালেন- যখন তোমাদের সামনে শাবান মাসের ১৫ই রাত্রির আগমন হয়, তাহলে তোমরা এই মাসে অনেক অনেক ইবাদত কর, রোজা রাখ।কারন আল্লাহ এই রাতে বিশেষ নজর দিয়ে থাকেন এবং বলে থাকেন কেউ কি আছো যে ক্ষমা চাচ্ছো তাকে আমি ক্ষমা করব, যে রিযিক চাও তার রিজিকে বরকত দান করব, কেউ মসিবতে থাকলে তার মুসিবত দুর করব..................
(সুনান-ই-ইবনে মাজাহ, খন্ড-০২,পৃষ্ঠা-১৬০, হাদিস-১৩৮৮ এবং মিশকাত শরিফ-১১৫)

দলিল নং- ০৫
(সুনানে নাসায়ী, ৩৮৭ পৃষ্ঠা, হাদীন নং- ২৩৫৪)
হযরত সায়্যিদুনা ওসামা বিন যায়দ বলেন: আমি আরয করলাম: হে আল্লাহর রাসুল আমি দেখেছি,
যেভাবে আপনি শাবান মাসে রোযা রাখেন সেভাবে অন্য কোন মাসে (রোযা) রাখেন না? তিনি ইরশাদ করলেন: রজব ও রমযান এর মধ্যবর্তী এ মাস রয়েছে। লোকেরা এটার থেকে উদসীন। এ মাসে মানুষের আমল সমূহ আল্লাহ তাআলার কাছে নেয়া হয় আর আমি এটা পছন্দ করি যে,
আমার আমল এ অবস্থাতে উঠানো হোক যখন আমি রোযা অবস্থায় থাকি।
(সুনানে নাসায়ী, ৩৮৭ পৃষ্ঠা, হাদীন নং- ২৩৫৪)

দলিল নং-০৬
(সহীহ বুখারী, ১ম খন্ড, ৬৪৮ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৯৭০)
হযরত আয়েশা(রাদ্বিয়াল্লাহ আনহা) হতে বর্ণিত------ হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) শাবান মাস থেকে বেশি রোজা আর কোন মাসে রাখতেন না, তাছাড়া হুযুর পুরো শাবান মাস রোজা রাখতেন এবং বলতেন নিজের নিজের যোগ্যতানুসারে এই মাসে আমল কর। কারন আল্লাহ ঔ সময় পর্যন্ত নিজের রহমত বন্দ করেন না যখন পর্যন্ত তোমরা নিজে থেকে ক্লান্ত না হয়ে যাও।.....
(সহীহ বুখারী, ১ম খন্ড, ৬৪৮ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৯৭০)

দলিল নং-০৭
(মুসনাদে আবু ইয়ালা, খন্ড-০৪, হাদিস-৪৮৯০)
হযরত আয়েশা(রাদ্বিয়াল্লাহ আনহা) হতে বর্ণিত--হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি কি পছন্দ কি শাবান মাসের রোজা..? হুযুর ফামালেন আল্লাহ এই মাসে বছরে মারা যাওয়া ব্যক্তির রুহ এর নাম লিখে থাকেন এবং আমি পছন্দ করি যে, আমি যেন ওফাতের সময় রোজা অবস্থায় থাকি.........
(মুসনাদে আবু ইয়ালা, খন্ড-০৪, হাদিস-৪৮৯০)

দলিল নং- ০৮
(শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ৩৮১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৮৩০, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত)
হযরত সায়্যিদুনা কাছির বিন মুররাহ্‌ থেকে বর্ণিত; নবীকুল সুলতান, সরদারে দোজাহান, মাহবুবে রহমান ইরশাদ করেছেন: “আল্লাহ তাআলা শাবানের ১৫তম রাতে সমগ্র যমীনের অধিবাসীদেরকে ক্ষমা করে দেন, (শুধু মাত্র) কাফির ও শত্রুতা পোষণকারীদের ছাড়া।
(শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ৩৮১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৮৩০, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত)

দলিল নং-০৯
(মুসনাদে ইমাম আহমাদ, খন্ড-০২, পৃষ্ঠা-৫৮৯, হাদিস-৬৬৫৬,/ শুবুল ইমান, খন্ড-০৩, পৃষ্ঠা-৩৮৩)
হযরত আয়েশা(রাদ্বিয়াল্লাহ আনহা) হতে বর্ণিত- হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ফরমালেন-আমার কাছে জিবরাইল এসে ফরমালেন শাবান মাসের ১৫ রাতে আল্লাহ বানু কাল্ব এর বকরির লোম এর চেয়ে বেশি মানুষকে জাহান্নাম থেকে শিফা দান করে থাকেন...............
(মুসনাদে ইমাম আহমাদ, খন্ড-০২, পৃষ্ঠা-৫৮৯, হাদিস-৬৬৫৬,/ শুবুল ইমান, খন্ড-০৩, পৃষ্ঠা-৩৮৩)

দলিল নং- ১০
(মুকাশাফাতুল কুলুব, ৩০৩ পৃষ্ঠা)
হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ গাযালী বলেন: উল্লেখিত হাদীস শরীফে সম্পূর্ণ শাবানুল মুয়ায্‌যম মাসের রোযা দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, শাবানুল
মুয়ায্‌যম মাসের অধিকাংশ রোযা (অর্থাৎ মাসের অর্ধেক থেকে বেশী দিন)।
(মুকাশাফাতুল কুলুব, ৩০৩ পৃষ্ঠা)


দলিল নং-১১
(আল মুতাজ্জুর রিবাহ, পৃষ্ঠা-৩৭৬, হাদিস-৭৬৯)
হযরত মুররাহ রাদ্বিয়াল্লাহ হতে বর্নিত----- হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ফরমালেন- আল্লাহ ফরমায়েছেন যে, শাবান মাসের ১৫তারিখের রাতে জমিনে থাকা মানুষদের ক্ষমা করে থাকেন কিন্তু কাফির এবং হিংসাপোসনকারীকে ক্ষমা করেন না.....
(আল মুতাজ্জুর রিবাহ, পৃষ্ঠা-৩৭৬, হাদিস-৭৬৯)

দলিল নং-১২
(তাফসীরে দূররে মানসুর, ৭ম খন্ড, ৪০২ পৃষ্ঠা)
উম্মুল মুমিনীন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়িশা সিদ্দিকা বলেন: আমি রাসুলে করীম, রউফুর রহীম, হুযুর পুরনূর কে ইরশাদ করতে শুনেছি, আলস্নাহ তাআলা (বিশেষত) চারটি রাতে কল্যাণের দরজা খুলে দেন। (১) কুরবানীর ঈদের রাত, (২) ঈদুল ফিতরের রাত, (৩) শাবানের ১৫তম রাত। এই রাতে মৃত্যুবরণকারীদের নাম ও মানুষের রিয্‌ক (জীবিকা) এবং (এ বৎসর) হজ্ব পালনকারীদের নাম লিখা
হয়, (৪) আরাফাহ (অর্থাৎ যিলহজ্জের ৮ ও ৯ তারিখে) এর রাত (ফজরের) আযান পর্যন্ত।
(তাফসীরে দূররে মানসুর, ৭ম খন্ড, ৪০২ পৃষ্ঠা)

দলিল-১৩
‘ইমাম রাফে’ হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু উল্লেখ করেন, হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে, এ মাসের নাম ‘শা’বান’ এ জন্য রাখা হয়েছে যে, এ মাসে রোযা পালনকারীর সাওয়াব, মঙ্গল ও সৌন্দর্য শাখা-প্রশাখার ন্যায় বিস্তার লাভ করে যাতে রোযাদার জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে। আল্লাহর সৃষ্টি জগতের মাঝে সকল সৃষ্টির একটি বড় আশা-আকাক্সক্ষা ও আরজু থাকে মহানবী হুযূর পুরনূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর প্রিয় হওয়া। মাহে শা’বান এমন এক মর্যাদামণ্ডিত মাস যে মাসকে আল্লাহর প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নিজের মাস বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি বলেছেন ‘‘শা’বান আমার মাস, রমযান আমার উম্মতের মাস।’’
[ফিরদাউসূল আখবার]

দলিল নং-১৪
খোদ শবে বরাত অস্বীকার কারীদের বাপ ওহাবী মতবাদের অন্যতম প্রবর্তক ইবনে তাইমিয়ার মতে-
وقد سئل ابن تيمية عن صلاة ليلة النصف من شعبان فأجاب: اذا صلى الا نسان ليلة النصف وحده اوفى جماعة خاصة كما كان يفعل طوائف من السلف فهو حسن- وقال موضع اخر: واما ليله النصف فقد روى فى
فضلها احاديث واثار ونقل عن طائفة من السلف انهم كانوا يصلون فيها فصلاة الرجل فيها وحده قد تقدمة فيه سلف وله فيه حجة فلا ينكر مثل هذا انتهى-
অর্থাৎ- ‘‘ইবনে তাইমিয়াকে শবে বরাতের রাতে নফল নামায আদায় বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, যদি মানুষ শবে বরাত রাতে একাকী অথবা বিশেষ জামাত সহকারে নফল নামায আদায় করে, মেযনিভাবে সালফে সালেহীনগণের অনেকেই করতেন, তাহলে তা খুবই ভাল কাজ।’’ তিনি অন্যত্র বলেন, শবে বরাতের ফযিলতে অনেক হাদীস ও রিওয়ায়েত বিদ্যমান এবং এটাও প্রমাণিত যে, সালফে সালেহীনগণ এ রাতে বিশেষ নফল নামায আদায় করতেন। সুতরাং একাকীভাবে এরাতে ইবাদতের ক্ষেত্রে সালফে সালেহীনগণ অগ্রগামী এবং এতে নির্ভরযোগ্য প্রমাণও মিলে। সুতরাং এ ধরনের বিষয়ে অস্বীকার করা যায় না।

দলিল নং- ১৫
(গুনইয়াতুত্ব ত্বালিবীন, ১ম খন্ড, ৩৪১ পৃষ্ঠা, বড় পীর আব্দুল কাদির জীলানী রহ:)
হযরত সয়্যিদুনা আনাস বিন মালিক বলেন: শাবান মাসের চাঁদ দৃষ্টি গোচর হতেই সাহাবায়ে কিরাম কুরআনে পাকের তিলাওয়াতের প্রতি খুব বেশী মনোযোগী হতেন, নিজেদের ধন-সম্পদের যাকাত বের করে নিতেন (আদায় করতেন) যাতে অক্ষম ও মিসকীন লোকেরা রমযান মাসে রোযা রাখার জন্য
প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে। শাসকগণ বন্দীদের তলব করে যার উপর শাস্তি কার্যকর করা প্রয়োজন তার উপর শাস্তি কার্যকর করতেন আর অন্যান্যদেরকে মুক্তি দিয়ে দিতেন। ব্যবসায়ীগণ তাদের কর্জ পরিশোধ
করতেন, অন্যান্যদের থেকে বকেয়া টাকা আদায় করে নিতেন (এভাবে রমযান মাসের চাঁদ উদিত হবার পূর্বেই নিজেকে অবসর করে নিতেন) আর রমযান এর চাঁদ দৃষ্টিগোচর হতেই গোসল করে (অনেকে) ইতিকাফে বসে যেতেন।
(গুনইয়াতুত্ব ত্বালিবীন, ১ম খন্ড, ৩৪১ পৃষ্ঠা, বড় পীর আব্দুল কাদির জীলানী রহ:)

এছাড়া পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কিত হাদীসটি যেসব গ্রন্থে এসেছে।
- ইমাম বায়হাকী ‘শুবুল ইমান,৩য়খন্ড, পৃ-৩৮০, ৩৮২, ৩৭৯, হাদিস-৩৮২২, ৩৮২৭)
- মুসনাদে আহমাদ, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৮তম খন্ড-, পৃস্ঠা- ২৩৮, ১১৪, হাদিস-২৫৯৬, ১৬৮২ (২১টি হাদিস রয়েছে)
- ‘ফাজায়েলুল আওকাত পৃষ্ঠা-১৩৩, হাদিস- ২৫
- ‘মিসবাহুজ জুজযাহ, ১ম খন্ড, পৃ-৪৪২, হাদিস-৪৮৭, ৪৮৬
- ‘আত তারগীব ওয়াত তারহীব’ তৃতীয় খন্ড, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা-২৪০ হাদিস-২৭১৮, ২৪, ২৭৬৯
- আহলে হাদিসদের গুরু নাসির উদ্দিন আলবানীর ‘সিলসিলাতুল আহাদিছে ছহিহা’ ৩য় খন্ড, পৃ-১৩১, ১৩৫
- মাছাবাতাবিচ্ছুন্নাহ, পৃ-৩৫৪
- মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, ৮ম খন্ড, পৃষ্ঠা- ৬৫
- মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা- ১০ম খন্ড, পৃষ্ঠা- ৪৩৮, হাদিস- ৯৯০৭।
- শরহুসসুন্নাহ ৪র্থ খন্ড- পৃষ্ঠা-১২৬, হাদিস- ৯৯২,
- আল মুনতাখাব মিনাল
- ইবনে হিব্বান, খন্ড-১৩, পৃস্ঠা-৩৫৫, হাদিস-১৯৮০
- শুয়াবুল ঈমান- ৩য় খন্ড, পৃ-৩৭৯, ৩৮০ হাদিস- ৩৮২২, ৩৮২৭

এছাড়া রয়েছে আরো অনেক অনেক হাদিস- যেখনে পবিত্র শবে বরাতের মহিমা প্রকাশ পেয়েছে। তাহলে আজকের যুগে যুব্বা পড়া এরা কারা, মাথায় ওড়ানা আর গলায় দড়ি ঝুলানো এসব মুসলমানের উদ্দেশ্যবা কি যে তারা এতগুলো অসংখ্য হাদিস থাকার পরেও আজ বিভিন্ন ওয়াজে, টিভিতে বসে কথা উড়াচ্ছে যে ইসলামে শবে বরাত বলে কিছু নাই, শবে বরাত পালন একটি বিদাত, হারাম ইত্যাদি..?
যারা এরুপ বলে সেইসব কাপুরুষ নামকাওয়াস্তে মুসলমানদের প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করলাম। তোরা আয়, প্রমাণ করে দেখা যে শবে বরাত বিদাত। তবে হ্যা প্রকাশ্যে বলতে হবে কারন পিঠ পিছে মানুষদের গোমরাহ করা আপনাদের মত ওহাবী সম্প্রদায় শুদু পিঠ পিছেই ঘেউ ঘেউ করতে যানেন।
পাঠক দেখলেনতো পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে কতগুলো গ্রন্থে, হাদিসে বর্ণিত হয়েছে..! আমি আগেও বলেছি এখানে লেখা দির্ঘায়ূ করার ইচ্ছা না থাকায় আমি সংক্ষিপ্ত আকারে ওহাবীদের আসল চেহরা আপনাদের সামনের তুলে ধরলাম.....

তবে শবে বরাত উপলক্ষে আমাদের মাঝে কিছু আজব রীতি দেখা যায়, যেমন পটকা, আতশবাজী ইত্যাদি, এটা নিসন্ধে এই পবিত্র রাতে ইবাদতে এই আতশবাজী ইবাদতে মারাত্বক বিঘ্ন সৃষ্টি করে। তাই যারা পটকা বাজী করে তাদের মাঝে সচেনতা প্রচার প্রয়োজনে আইনের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী। কারন পবিত্র দিনের সাথে এই বানানো আতশবাজীর কোন সম্পর্ক নেই। পবিত্র দিনে আমাদের যেসব করণীয়.....
* শা’বান মাসকে রাসূল (দ.) নিজের মাস বলেছেন; তাই উম্মতের উচিত এ মাসে বেশী করে দরূদ শরীফ পড়া।
* অসংখ্য হাদীস শরীফে এ মাসে রোযার ফযিলত বর্ণিত হয়েছে, তাই বেশী করে রোযা পালন করা যা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর অধিক প্রিয় আমল ছিল।
* বেশী করে দান সদকা করা যা সাহাবা ও বুযুর্গানেদ্বীন (রহ.)-এর আমল ছিল। হাদীস শরীফেও এ ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
* ‘‘লায়লাতুল মোবারাকা’’ বলতে যেহেতু শবে বরাতকে বুঝানো হযেছে তাই এরাতে অধিক ক্বোরআন তিলাওয়াত করা।
* সূরা ইয়াসিন তিন বার পাঠ করলে রিযিক বৃদ্ধি পায় বলে অভিমত রয়েছে।
* হাদীস শরীফে রাত্রি জাগরণ থেকে ইবাদতের কথা বলা হয়েছে, তাই সারা রাত নফল নামাযের মাধ্যমে রাত্রি যাপন করা।
*সহীহ হাদীস দ্বারা শবে বরাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম জান্নাতুল বাকীতে গিয়ে যিয়ারত করার দলিল রয়েছে বিধায় এরাতে কবর যিয়ারত করা।
* সন্ধ্যায় সওয়াবের নিয়তে গোসল করা।
* রোযা রেখে ইফতারের সময় নবীর (দ.) উপর ৩ বার দরূদ শরীফ পড়া।

সবশেষে সবার কাছে দোয়া কামনা করে, নবীর প্রতি অসংখ্য দরুদ সালাম এর মাধ্যমে ইতি টানলাম।
..................
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:০৭
১৪টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×