somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

বাংলাদেশী জিসান
পরিচয় দিতে গেলে শুরু করা সম্ভব, তবে শেষ করা অসম্ভব! আমাকে দেখে আপনার মন যা-তা ভাবতেই পারে! কিন্তু আমি পুরো সাচ্চা, আপনার চিন্তার বাইরে! আমি লিখলে আবেগ, বাস্তবতার নিরিখে লিখতে পছন্দ করি! মাঝে-মাঝে ছন্দ নিয়ে খেলি! শাশ্বতের পক্ষেই আমি! নোংড়ামিকে পিষে চলি!

অমুক তো মা শা আল্লাহ! আর আমি শালা ঘোড়ার আন্ডা!!! :(

২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনেক মানুষ আছেন ছয় ফুট লম্বা কিংবা তাঁর চেয়েও একটু বেশী ! দেখতেও খুব হ্যান্ডসাম !
আবার বডি-বিল্ডারদের মতো শারীরিক গঠন !!
অনেক হালকা-পাতলা কিংবা মাঝারি গড়নেরও অনেক মানুষ দেখতে অনেক হ্যান্ডসাম আবার স্মার্ট হয়ে থাকেন !
এক কথায় অসাধারণ দেখতে !!!
তবুও এদের অনেকেরই দেখা যায়, হাত কিংবা পায়ের আঙ্গুলে সমস্যা !!!!!!!

কোনো প্রয়োজনে সৌন্দর্য্য বিবেচনার ক্ষেত্রে,
আমি যেকোনো মানুষের চেহারার দিকটা পরীক্ষা করার পর তড়িৎ গতিতে তার হাত কিংবা পায়ের আঙ্গুলের দিকে তাকাই।
কেন জানি আঙ্গুল পছন্দ না হলে চেহারার সৌন্দর্য্যকে আমি তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেই !!!

হুমম !!
আমি 'জিসান' দেখতে অনেকের চোখেই পুরাই বেখাপ্পা হলেও আমার হাত-পায়ের আঙ্গুলগুলো কিন্তু মা শা আল্লাহ !!
যদিও হাতের আঙ্গুলগুলো মেয়েলি মেয়েলি ধরনের বলে হাতে মেহেদী দেয়া মোটেই পছন্দ করি না।
তবু অন্যদের হাত-পায়ের আঙ্গুল দেখলে, নিজের দিকে তাকিয়ে আল্লাহর প্রতি প্রশংসা না করে পারি না।
আলহামদুলিল্লাহ !!
এই একই বিষয়টিতে কিন্তু আমার আম্মাজানও খুব স্ট্রিক্ট !!
তিনিও ঠিক আমার মতোই কারো চেহারার পর আঙ্গুল দেখে নিবেন।
মায়ের কাছ থেকে পাওয়া বলে কথা !! ;)

যাই হোক, আমি এখন দুটো বিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলাম :::::::
▬▬১.▬▬
✴✴ মূলত আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কিন্তু সকল মানুষকেই সুন্দর আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন।
সুরা আত-ত্বীনের ৪র্থ আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :
"لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ "
অর্থাৎ : "অবশ্যই আমি মানুষকে অতি সুন্দরতম আকৃতিতে সৃষ্টি করেছি।"

▬▬২.▬▬
✴✴ আর তিনি তাঁর প্রিয় বান্দাদের বিভিন্ন দুর্দশা দিয়ে পরীক্ষাও করে থাকেন।

✴ আমাদের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সবকিছুই পরীক্ষার অন্তর্ভুক্ত।
এ ব্যাপারে আল্লাহ সুরা আল-মুলক এর ২ নং আয়াতে এরশাদ করেন ::
"الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ"
অর্থাৎ : “যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন। যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন, কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।”

✴ এবং যারা ঈমান আনবে তাদেরকে অবশ্যই পরীক্ষা করা হবে।
সুরা আনকাবুত এর ১-৩ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন :
-الم- أَحَسِبَ النَّاسُ أَن يُتْرَكُوا أَن يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ- وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَلَيَعْلَمَنَّ اللَّهُ الَّذِينَ صَدَقُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِينَ

অর্থাৎ : “আলিফ লাম মীম। মানুষ কি মনে করে যে, ‘আমরা বিশ্বাস করি’ (আমরা ঈমান এনেছি) তার একথা বলেই পার পেয়ে যাবে এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না? আমিতো তাদেরকেও পরীক্ষা করেছি, যারা তোমাদের পূর্বে ছিল। আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন কারা সত্যবাদী এবং কারা মিথ্যাবাদী।”

✴ মনে রাখতে হবে, ঈমানদার হওয়া যেমন অনেক মর্যাদার বিষয় তাই পরীক্ষাও অনেক বড় হবে (Greater honor comes with greater sacrifice)।
যেমন সুরা আল-বাক্বারাহ এর ২১৪ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন :
أَمْ حَسِبْتُمْ أَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَأْتِكُمْ مَثَلُ الَّذِينَ خَلَوْا مِنْ قَبْلِكُمْ ۖ مَسَّتْهُمُ الْبَأْسَاءُ وَالضَّرَّاءُ وَزُلْزِلُوا حَتَّىٰ يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ مَتَىٰ نَصْرُ اللَّهِ ۗ أَلَا إِنَّ نَصْرَ اللَّهِ قَرِيبٌ

অর্থাৎ : “তোমাদের কি ধারণা এই যে, তোমরা জান্নাতে চলে যাবে, অথচ সে লোকদের মতো অবস্থা অতিক্রম করোনি, যারা তোমাদের পূর্বে অতীত হয়েছে। তাদের উপর এসেছে বিপদ ও কষ্ট। আর এমনি ভাবে শিহরিত হতে হয়েছে, যাতে নবী ও তাঁর প্রতি যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে পর্যন্ত একথা বলতে হয়েছে যে, কখন আসবে আল্লাহর সাহায্য! তোমরা শোনে নাও, আল্লাহর সাহায্য একান্তই নিকটবর্তী।”

এই দুটি বিষয় আমাদের সব সময় মনে রাখা উচিত।
এখন
"আমি দেখতে খারাপ ! আমার এটা নেই, সেটা নেই !!"
"অমুক দেখতে স্বাস্থ্যবান আর আমি হ্যাংলা-পাতলা চিকনা !!"
"কিংবা অমুক দেখতে কত স্লীম আর আমি আস্ত একটা চাউলের বস্তা !!"
"অমুকের কত্ত কত্ত টাকা আছে, আর আমি শালা ফকির হয়ে জন্ম নিলাম !!!"
"অমুকের পোলা-মাইয়া ডাক্তার-ইঞ্জিয়ার হইয়া গেলো, আমার পোলা-মাইয়া একেকটা বলদ হইছে !! ইচ্ছা হয়, সারাদিন এইগুলান রে ধইরা পিডাইয়া মাইরা ফেলি!!"
"অমুক অনলাইনে আর্নিং কইরা ফাডাইয়া ফেললো, আর আমি সারাদিন অনলাইনে গুতাগুতি কইরা একটা পয়সাও ইনকাম করতে পারলাম না"
"অমুক তো মা শা আল্লাহ ! আর আমি শালা ঘোড়ার আন্ডা !!!" ..... ইত্যাদি

-এমন ভাবা কখনোই ঠিক না !!
উপরের আয়াতগুলো থেকে ইতোমধ্যে অবশ্যই সব কিছু পরিষ্কার হয়ে গেছে।
তবু বলবো, আপনি আপনার চারিদিকে ভালো করে তাকান।
ইন শা আল্লাহ দেখবেন, অন্যের মধ্যে এমন অনেক বিশেষ বিশেষ ভালো গুণ নেই, যা আপনার আছে।
আপনার সেই বিশেষ বিশেষ গুণগুলো বিকশিত করার চেষ্টা করুন।

আবার হতে পারে আপনি দেখতে খুব সুন্দর; আপনার কাড়ি-কাড়ি টাকাসহ আরো অনেক কিছুই আছে।
তবু আপনি কিছু না কিছুর অভাব অনুভব করেন। এমতাবস্থায় হতাশা আপনাকে আচ্ছাদিত করে ফেলে।
তাই বলে নিরাশ হয়ে বিপথগামী হয়ে যাবেন ??
অবশ্যই নাহ ! আল্লাহর পরীক্ষার কথা ভুলে যাবেন না।
আর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তো সুরা যুমার এর ৫৩ নং আয়াতে বলেই দিয়েছেন :
"لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ"
অর্থাৎ :"তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।"

✴ সুতরাং কখনোই হতাশ হওয়া যাবে না। এবং সর্বাবস্থায় আল্লাহর প্রশংসা করা উচিত।

✴✴ পরিশেষে একটি কথাই বলবো, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে সব সময় তাঁর পথে চলার তাওফিক দিন।
তাঁর প্রতিটি পরীক্ষায় সবরের সাথে উত্তীর্ণ হবার তাওফিক দিন। আমীন।
.
লেখার সময়কাল:
১১ই জুলাই, ২০১৫ঈসায়ী
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:২১
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×