বাংলাদেশ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতার যুদ্ধে মেজর জিয়াউর রহমানের যে অবদান তা একে অপরের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। যারা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মেজর জিয়াউর রহমানকে খাটো করে দেখতে চায় বা তাঁর অবদানকে অস্বীকার করতে চায় তারা আসলে বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করতে চাই। মুখে চেতনার কথা বলে আর অন্তরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন যারা সেদিন দেখেছিল তারা আর যাই বলুক দেশের স্বাধীনতা কোন ভাবেই চাইনি। ১৯৭১ সালে শেখ মুজিবর রহমান পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে বন্দি হওয়ার পর প্রায় সব রাজনৈতিক নেতারা আত্নগোপনে চলে যায়। ১৯৭১ সালে ২৫শে মার্চ পাক হানাদার বাহিনীর অতর্কিত হামলা চালায়, জাতি তখন একেবারে দিশেহারা। সেই সময় ছিল না কোন সঠিক দিকনির্দেশনা। সমগ্র জাতি একেবারে অপ্রস্তুত এবং দিশেহারা। একটি জাতির সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্তে জিয়াউর রহমান জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার জন্য মহান স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে সমগ্র জাতি খুজে পান দিশা। ঝাঁপিয়ে পরে মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে। দেশপ্রেমিক, সৎ ও ন্যায়ের প্রতীক সেনাবাহিনী সেদিন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের উপর অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে পারেনি। মেজর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করার সাথে সাথে সদ্য ঘোষিত স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী জনগণকে সাথে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে। মেজর জিয়াউর সেই দুঃসময়ে জাতির কাণ্ডারি হয়ে এগিয়ে না আসলে এবং মহান স্বাধীনতার ঘোষণা না করলে আজও হয়ত দেশ স্বাধীন হত না। তাঁর বক্তব্যে আমরা অনেক সময় শুনেছি, কথায় নয় কাজে তিনি বিশ্বাস করতেন। সব সময় তিনি নিজে কাজ করে প্রমাণ করেছেন তিনি কত বড় মাপের একজন মানুষ। তাই তো মহান মুক্তিযুদ্ধে একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান। কিছু লোক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর, তাঁর পরিবার ও নিজের হাতে গড়া জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে মিথ্যা অপপ্রচার করে থাকে। তারা বলতে চাই জিয়াউর রহমান প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী ছিল। তিনি কোন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না। তাদের স্মরণ করে দিতে চাই সেনাবাহিনী প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী ছিল কিন্তু সেই সময় শেখ মুজিবের কর্মচারী ছিলেন না। ১৯৭১ সালে সেনাবাহিনী ছিল পাকিস্তান সরকারের অধীনে। একটি দেশের অধীনে থেকে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা রাজনীতি করার চেয়ে কোটি কোটি গুণ বিপদজনক। যদি দেশে স্বাধীন না হত শেখ মুজিব হয়ত কয়েক মাস জেল খেটে ছাড়া পেত কিন্তু মেজর জিয়ার কি হত? যারা সেনাবাহিনীর ভেতরের আইন কানুন জানেন বা বুঝেন তারা সহজে উপলব্ধি করতে পারছেন। নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ড। তাই বিষয়টা অত সহজ মনে করার কোন কারণ নেই। নিন্দুকেরা বলে তাদের নেতা শেখ মুজিব স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু কোন প্রমাণ নেই। নিজস্ব গণমাধ্যমে তারা লাগাতার মিথ্যা অপপ্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাই। কিন্তু দেশের মানুষ এত বোকা নয়। শেখ মুজিব কিনা মেজর জিয়ার আগেই স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। তাদের দাবি ১৯৭১ সালে ২৫শে মার্চ পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে বন্দি হওয়ার আগেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। আমার প্রশ্ন হল যদি শেখ মুজিব ২৫শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করে থাকেন তাহলে আমার কেন রাষ্ট্রীয় ভাবে ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন করি? আবার অন্যদিকে জাতীয় চার নেতার অন্যতম নেতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ ২৫শে মার্চ রাতে একটি টেপ রেকর্ডার ও কাগজ কলম নিয়ে তাঁর নেতা শেখ মুজিবকে স্বাধীনতা ঘোষণা করার জন্য বলেছিলেন কিন্তু শেখ মুজিবর রহমান বলেছিলেন, না স্বাধীনতা ঘোষণা করা যাবেনা, এটি তাঁর বিরুদ্ধে রেকর্ড হয়ে থাকবে এবং তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ফাঁসি দিতে পারে। পরে জনাব তাজউদ্দীন আহমেদ অভিমান করে চলে যান। তারপর পরই শেখ মুজিবর রহমান গ্রেফতার হন। অতএব খুব পরিস্কার যে শেখ মুজিরব রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেন নাই। তা ছাড়া শেখ মুজিবর রহমান নিজেই বহুবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেকে বলেছিলেন আমি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চাই। অতএব যতই অপপ্রচার করুক না কেন অবৈধ আওয়ামীলীগ সরকার কোন ভাবেই প্রমাণ করতে পারবে না, যে তাদের নেতা শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।
আবার অন্যদিকে মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন ২৬শে মার্চ ১৯৭১ সালে আর অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল ১০ই এপ্রিল এবং অস্থায়ী সরকার শপথ গ্রহণ করে ১৭ই এপ্রিল ১৯৭১ সাল, তাহলে মাঝখানে এই যে এতগুলো দিন কোন সরকারের অধীনে দেশ ও সেনাবাহিনী ছিল? অতএব আপনাদের বাকশাল অপকর্ম ঢাকার জন্য মিথ্যা অপপ্রচার করে কোন লাভ হবেনা। কারণ মানুষ অনেক সচেতন, শিক্ষিত এবং দেশে ও দেশের অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবে। এখন তথ্য প্রমাণ ছাড়া শুধু গলাবাজি করে আর পার পাওয়া যাবেনা।
চলবে------
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ ভোর ৪:৫৫