somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গুজবে কান দিয়ে ফেঁসে গেলে দায়ী নই!!!

১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৭:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ধানমণ্ডি ৭/এ খুব স্মৃতি বিজড়িত একটি এলাকা। ছাত্রাবস্থায় ব্যাচেলর জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছি এই এলাকায়। নোয়াখালীর কিছু বড়লোক ছেলেদের সাথে থাকতাম এই অভিজাত এলাকায়। যে ব্যাচেলার জীবনে একটি রুম বা সিট ভাড়ার জন্য সারা ঢাকা শহর হন্য হয়ে ঘুরেও যখন থাকার ব্যবস্থা করা যায় না, সেখানে আমরা কিছু ছেলে থাকতাম রাজার হালতে এই অভিজাত পল্লীতে। সম্ভব হয়েছিল আমাদের এক হাউজমেটের আত্মীয়র বাসা বলে। যাইহোক সুখের দিন খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়। আমরা সহসায় ভুলেও যায় কিন্তু দুঃখের দিন কি ভুলবার বিষয়? একটি বাসা বা রুম ভাড়ার জন্য কত কত বাড়ীওয়ালাদের অস্বাভাবিক আচরণের শিকার হয়েছি তা কোন দিনও ভুলিবার নয়। একেক জন বাড়ীওয়ালার কথায় মনে হত যেন তারা মায়ের পেট থেকে বিবাহিত হয়েই জন্মেছিল। তবে বিপরীত চিত্রও ছিল। ব্যাচেলর বাসা পেয়েছিলাম মিরপুরে কিন্তু ইউনিভার্সিটি থেকে দূরে হওয়ায় সেখানে থাকা হয়নি বেশি দিন।
যাইহোক ধানমণ্ডিতে থাকতাম আর রবীন্দ্র সরোবর আর রায়ের বাজার বধ্যভূমি দেখা হবেনা তা তো হয় না। সারাদিন ইউনিভার্সিটি আর বিকেল বেলা বন্ধু বান্ধবের আড্ডায় রবীন্দ্র সরোবর করে তুলতাম সরব।
রোজ নিয়ম করে একেকজন আমরা হাউজমেট বাজার করতাম রায়ের বাজার থেকে। একদিন রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে বন্ধুদের সাথে ঘোরাঘুরি করে বেশ রাতে বাসায় ফিরছিলাম। দেখি রায়ের বাজার এর পাশে বেড়ীবাঁধ দিয়ে দলে দলে মহিষ আনা হচ্ছে সকালের বাজারে মাংস বিক্রির জন্য। খেয়াল করলাম এত এত মহিষ আনা হচ্ছে বাজারে কিন্তু সকাল বেলা বাজার করতে গিয়ে দেখি সব গরুর মাংস। জীবিত থাকতে মহিষ আর জবাই করার পর সব গরুর মাংস হয়ে যায়। হায়! বেচারা মহিষ মরেও শান্তি নাই।

আমাদের কাঁচা বাজার যেমন একই দোকান থেকে আনতাম তেমনি মাছ, মাংস একই মাছের দোকানদার ও মাংস নিয়মিত একই কসায়/ দোকানদারের কাছ থেকে কিনতাম। নিয়মিত আমরা বাজার করি বলে অনেক সময় আমরা বাকীতেও জিনিসপত্র ও কাঁচামাল কিনতে পারতাম।
একদিন আমরা দুই হাউজমেট ফন্দি করে কসাই মামাকে বললাম মামা আজকে আমাদের তো ৫ কেজি মহিষের মাংস লাগবে। বাসায় মহিষের মাংসের পার্টি হবে কিন্তু আপনেরা তো মহিষের মাংস বিক্রি করেন না। এখন কি করা যায়? এক কসাই আমাদের ডেকে নিয়ে আড়ালে বলল মামা এই গুলো আসলে মহিষের মাংস আপনারা নিতে পারেন। আমরা তো এই সুযোগে বললাম মামা গরুর মাংসের চেয়ে তো মহিষের মাংসের দাম কম। কিন্তু আমরা তো গরুর মাংসের দাম দিয়ে তো আর মহিষের মাংস কিনব না? দাম কম হলে আমরা নিব। তারপর থেকে সবসময় আমাদের কাছে মহিষের মাংসের দামই রাখত কিন্তু কখনও আর বলতে হয়নি মামা এটা গরুর মাংস না মহিষের মাংস। তবে গরু আর মহিষ মিশিয়ে এক সাথে বিক্রি করত গরুর মাংস বলে। তবে দাঁড়িপাল্লা যতই গড়িয়ে মেপে দিকনা কেন? বাসায় নিয়ে মাপলে কেজিতে ১০০ গ্রাম কম খুবই সাধারণ বিষয়। কসাইয়ের হাতে চাপাতি দেখে কয়জনই বা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে? বিস্ময়কর হলেও চরম সত্য, গুজব মনে হলেও নির্ঘাত বাস্তবতা যে, এভাবেই শত শত মহিষ রাতের বেলায় ঢাকা শহরে ঢোকে আর দিনের বেলায় গরুর হয়ে বেরিয়ে যায়। দুঃখের বিষয় কেউ দেখারও নেই বলারও নেই।
তবে উল্লেখ্যঃ এখন কিন্ত চাপাতি শুধু কসাইদের হাতেই সীমাবদ্ধ নেই, এটা চাপাতিলীগের হাতেও শোভা পাচ্ছে। তাই প্রতিবাদ করার অবস্থা ভুক্তভোগীদের নেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৮:০৪
১৬টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×