ছবি সেজান ভাইয়ের ফেবু থেকে
ভোগের দুনিয়ায় ভাবুকের কি কোন ফুরসত আছে একটু ভাব প্রকাশ করার। কত কি-ই তো ভাবি। কিন্তু সবই কি প্রকাশ করতে পারি? না সময়ের অভাবে না অসুরের ভয়ে। তারপরেও তো থেমে থাকলে চলেনা। তাই একটু বিলম্ব হলেও একাত্তরের জননী রমা চৌধুরীর স্মরণে দুটি কথা।
মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, শিক্ষক বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরী চিরবিদায় নিলেন আমাদের মাঝ থেকে। উচ্চ শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত একজন মহিলা যিনি জীবনের লম্বা একটি সময় জুতা ছাড়া চলাফেরা করেছেন। সাগর-টগর নামের দুই ছেলেকে হারিয়ে; নিজের সম্ভ্রম হারিয়ে, একাত্তরের জননী আমাদের প্রিয় রমা চৌধুরী বলেন,
“আমার ছেলেদের আমি পোড়াতে দিইনি। এই মাটিতে তারা শুয়ে আছে। আমি কীভাবে জুতা পায়ে হাঁটি। পারলে তো বুক দিয়ে চলতাম–ফিরতাম। তারা কষ্ট পাবে।”
আমরা বস্তুবাদী ভোগ বিলাসী যারা তাদের কাছে এইটা খুবই মামুলি ব্যাপার। কে প্রায় অর্ধ শতাব্দী জুতা পড়ল না আর কে সন্তান হারানোর শোকে আমৃত্যু একটি ভাতের দানা মুখে নিলনা তা যেন অর্থহীন।
শুধু সন্তান জন্ম দিয়েই মা নন, দেশের জন্যে যে মা এতো বড় বড় ত্যাগ করলেন তিনিই তো প্রকৃত জননী। হে জননী, চিরবিদায়। হিন্দু রীতিতে শবদাহ গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষঙ্গ কিন্তু রমা চৌধুরীর ইচ্ছা অনুযায়ী তার দুই ছেলের পাশে তাঁকেও চিরশায়িত করা হয়েছে। হে মহীয়সী জননী এই মাটিতে সাগর-টগরের সঙ্গে আপনিও ঘুমিয়ে থাকুন আমাদের সশ্রদ্ধ অভিবাদন নিয়ে!
রমা চৌধুরীর ত্যাগ, জীবন দর্শন, লেখনী নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য অনুস্মরণ ও অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৮