somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিলির একজোড়া রোমন্টিক ও অ্যান্টিরোমান্টিক অনুগল্প

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১।স্বীকৃতি

আমি যখন তুখোড় কবি নরেন্দ্র তখনো কলম ধরতেই শেখেনি। কলম নামক বস্তুটাকে সম্ভবত খাবার ভাবত সে। তার এমন বোকামি ভীষণ হাসাত আমায়। অথচ কবিতার ঈশ্বর অ্যাপোলোর কাছে ওই নাকি সেরা কবি!!! অসহ্য ব্যাপারটা হজম করতে না পেরে একদিন ঈশ্বরকে বলেই ফেললাম
__ নরেন্দ্র আমার থেকেও বড় কবি!!! আমার কবি সত্তার হন্তারক!!! এও কি সম্ভব??
__“হ্যা এ সম্ভব!! সেই বড় কবি?? সবার থেকে বড়!” কিছুটা ঝাঁঝালো কন্ঠে উত্তর করে কবিতার ঈশ্বর।
__“কিন্তু তাই বলে এমন কেউ আমার থেকে বড় কবি যে কিনা কলমই ধরতে জানে না!!! আমার বড্ড হাসি পাচ্ছে ঈশ্বর।” অনেকটা ন্যাকামির ঢঙেই ঈশ্বরকে বলেদিলাম কথাগুলো।
__“হ্যা নরেন্দ্রই তোমার থেকে বড় কবি যে এখনো কলম ধরতে শেখেনি!” ঈশ্বরের ঝাঁঝালো কন্ঠে আরো আরো কিছুটা ঝাঁঝ মিশ্রিত হয়ে বেড়িয়ে আসে কথাগুলো।

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নরেন্দ্র বড় হতে থাকল। সাথে সাথে মনুষ্য সমাজে বাড়তে থাকলো আমার কবি ক্ষ্যাতি! আর নরেন্দ্র ও কবিতা লিখবে কচু একটা ছড়াই লিখতে পারেনি কোন দিন!
কবিতার ঈশ্বরকে একদিন বাগে পেয়ে তাই ঠিকই প্রশ্ন করে বসলাম,
__“তুমি না বলেছিলে নরেন্দ্র আমার থেকে বড় কবি হবে?? ও কবি হবে ছাই এখনো একটা ছড়াও লিখতে পারেনি??”

নিরুত্তর ঈশ্বরের মৌনতা,( ঈশ্বর সমাজে কবি স্বীকৃতি পেতে) নরেন্দ্রকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে আমাকে বেশ ভালই সাহায্য করেছিল। তবে সিদ্ধান্তটা বাস্তবায়নের আগেই আমার আশ্রয় হলো কয়েদ খানায়।

__নাম কি তোর??? ধমকের সুরে এক প্রবীণ কয়েদির প্রশ্ন।
__“সরফরাজ!” কিছুটা অপ্রস্তুত ও মোলায়েম কন্ঠে উত্তর দেই আমি।
__“কী করস??”কর্কশ কিন্তু ভাবলেশহীন কন্ঠটা আরো একবার বেঁজে ওঠে।
__“কবিতা লেখি কবিতা।” মুখোমন্ডলে আমার গর্ভের আভাটা স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে ওঠে!
__তাই বুঝি!!( অবজ্ঞার সুরে) তাহলে একটা চোরের সাথে আমি সেল ভাগাভাগি করছি!! বিড়বিড় করে আরো কিছু বলতে বলতে একটা খবরের কাগজ আমার হাতে ধরিয়ে দেয় সে!
বেশ বড় করেই সেই খবরের কাগজে লেখা,
ধরা পড়ে গেল বেহায়া কবিতা চোর সরফরাজ।স্বীকৃতি মিলল নরেন্দ্রের চুরি যাওয়া সকল কবিতার!


২।ইউটার্ণ

“তোমার সাথে কথা বলতেই এখন ঘেন্না হচ্ছে, ছিঃ তুমি এত নিচ” বলল তরুণীটি।

“আর এমন হবেনা , একটা বার আমায় সুযোগ দা্‌ও লক্ষিটি”, ছেলেটির করুন প্রার্থনা। “তোমার মতো ছেলেকে এই ৫ বছরে আমার পুরোপুরি চেনা হয়ে গেছে আর নয়”, বলেই অর্ধ যুগের সম্পর্কটি ভেঙে দিলো মেয়েটি।

সামলে নেয়ার হাজার চেষ্টা করেও নিজেকে তেমন সামলাতে পারছিলোনা ছেলেটি। হেয়ার যেলে সাজানো চুলগুলো পাখির বাসা হয়ে উঠতে থাকলো ক্রমশ।বহুদিনের অধোয়া টিশার্টটি বেহায়া গন্ধ বাড়াতে থাকলো অবিরত।পরীক্ষার স্কোর নামতে নামতে ঠেকলো তলানিতে।

সিগারেট ধরি ধরি করা অবস্থায় তরুণীর আরো ঝাঁঝালো মেসেজ,“কাল পার্কে এসো , তোমারকিছু গিফ্ট ছিলো, ফেরত নেবে।”
কোন মতেই যাবেনা বলে পণ ধরা ছেলেটা গেলোই গেলো।

“ইস চুলগুলো কি রকম পাখির বাসা করে রেখেছো ? শার্টে এতো ময়লাই বা কেন? শুনলাম এবারও নাকি প্রমোশন পাওনি? গিফ্টগুলো হাতে ধরিয়ে আরও কতক ধমকি হাকায় মেয়েটি।

গোমরা মুখে ছলছল চোখের নিরব অশ্রু পাতেই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দেয় ছেলেটি।

“কথা বলছোনা কেন?”গর্জে ওঠা মেয়েটির কন্ঠ জড়িয়ে যায় শেষে।
“তোমার মতো একটা নির্বোধ ছেলেকে কেবল কোন বোধহীন মেয়েই ভালো বাসতে পারে। আমার মনে হচ্ছে আমিই সেই বোধহীন মেয়ে।” জরানো গলায় বলতে বলতে কেঁদেই ফেললো মেয়েটি।

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৫৫
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×