somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রশ্ন?

১৮ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ঘটনা-এক।
টোরোন্টো শহরকেন্দ্র বা ডাউনটাউন থেকে সামান্য দূরে ওণ্টারিও লেকের মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তিন চারটে ছোট ছোট দ্বীপ আছে যাদেরকে একসাথে বলা হয় টোরোন্টো আইল্যান্ড। টোরোন্টো আইল্যান্ড গুলোর মধ্যে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটা দ্বীপের নাম হল ওয়ার্ড আইল্যান্ড। গত শনিবার সানশাইন সেন্টারের পক্ষ থেকে হারমনি হল সিনিয়র সেন্টারের সদস্যদের আমন্ত্রন জানানো হয় ওয়ার্ড আইল্যান্ডে। হারমনি হলের সদস্যদের প্রায় সবাই বাংলাদেশী। ওয়ার্ড আইল্যান্ডে সানশাইন সেন্টারের নিজস্ব এলাকা আছে। সানশাইন সেন্টারের সব সদস্য এদেশীয় এবং কানাডার নিয়ম অনুযায়ী সবার বয়সই ৬৫ এর উপরে। যখন ওয়ার্ড আইল্যান্ডে পৌছলাম তখন সকাল এগারোটার কিছু উপরে। বারোটার সময় মিনি লাঞ্চ খেয়ে দ্বীপে ঘোরাফেরা করে ফিরে আসার কথা ছিল দুটোর ফেরীতে। ফেরীঘাটে যখন পৌছলাম তখন ঘড়িতে একটা চল্লিশ। হাতে কিছু সময় থাকায় গল্প করছিলাম ঢাকা ইউনিভার্সিটির প্রানীবিদ্যার প্রাক্তন অধ্যাপক ডঃ খলিলুর রহমান এবং বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্ট্রিস্টির প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ আলেয়ার সাথে।
খলিল ভাইয়ের ছেলে সম্প্রতি বিয়ে করেছেন মরক্কোর এক মেয়েকে। ফেসবুকে তাদের আলাপ থেকে প্রেম এবং অতঃপর বিয়ে। পুত্রবধু আগামী সাতই আগস্ট কানাডাতে আসবেন, ইত্যাদি আলাপ হচ্ছিল। ডাঃ আলেয়া ফেসবুকের প্রশংসা করলেন। তিনি আরো জানালেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা জুকারবার্গের জন্য নামাজ পড়ে তিনি দোয়া করবেন যাতে তিনি মরার আগে হলেও ইসলাম গ্রহন করেন এবং জান্নাতবাসী হন।

ঘটনা দুই।
গত বছরের ঘটনা। দেশে গেছিলাম জমি জমা সংক্রান্ত কিছু কাজ থাকায়। পেনশানের টাকা তুলতে গেছিলাম উত্তরার সোনালী ব্যাঙ্ক শাখায়। প্রায় তিন বছরের পেনশানের টাকা তুলতে সরকারী আদেশের প্রয়োজন ছিল যার জন্য দশ হাজার টাকার “ধুলোপড়া” দিতে হয় সদরঘাটের ডিভিশানাল একাউন্টস অফিসে এবং ব্যাঙ্ক কর্মচারীদের।
তিন বছর আগে দেখা ব্যাঙ্ক ম্যানেজার এখনো একই শাখায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। আগে নিয়মিত যাতায়াত করার সুবাদে ম্যানেজার সাহেব পরিচিত। রুমে গিয়ে বসে চেক দিলে তিনি টাকা আনার জন এক কর্মচারীকে ডেকে আমার চেক তার হাতে দিয়ে দিলেন। এই ফাকে ম্যানেজার সাহেব এবং পাশে বসে থাকা জনৈক ভদ্রলোকের সাথে আলাপ শুরু করলাম। রুমের তৃতীয় ব্যাক্তি একজন অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব। উত্তরাতে নিজের পাঁচতলা বাড়িতেই থাকেন। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাস্ট্র এবং কানাডা বেড়িয়ে দেশে ফিরেছেন। সেই গল্পই করছিলেন তিনি ম্যানেজার সাহেবের সাথে । আমেরিকা কানাডার সভ্যতা, সততা দেখে তিনি মুগ্ধ। তাদের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি যোগ করলেন” সবাই বেহেশতে যেত যদি কিনা কেবল ইসলাম গ্রহন করে নবীজি এবং আল্লাহকে মানত।

ঘটনা তিন।
ঢাকা স্টেডিয়ামের প্রিন্স হোটেল অনেকেই চেনেন বা চিনবেন। ১৯৯২ বা ১৯৯৩ সালের দিকে প্রিন্স হোটেলের মালিক পিজি হাসপাতালে আমাদের রোগী ছিলেন। কয়েকদিন ফিজিওথেরাপী নেওয়ার পর ভদ্রলোক লাপাত্তা হয়ে যান। তার দু’তিন বছর পর একদুপুরে খাওয়ার জন্য প্রিন্স হোটেল ঢুকেছি। মালিক ভদ্রলোক ক্যাশেই বসে ছিলেন কিন্তু আমি চিনতে না পারলেও তিনি ঠিকই চিনলেন। তিনি আমার টেবিলে এসে বসলেন। তাকে জিজ্ঞেস করলাম আমাদের রোগী থাকা কালীন সময়ে হঠাৎ করে তিনি লাপাত্তা হয়ে গেলেন কেন? ভদ্রলোক জানালেন তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ায় তিনি কোলকাতায় চলে যান দেবী শেঠীর হাসপাতালে। ডাঃ দেবী শেঠীর সুনাম এবং প্রসংসা শুনে শুনে তার সম্পর্কে জানতে চাইলাম ভদ্রলোকের কাছে। ভদ্রলোক জানালেন “ বেহশত বা স্বর্গের কথা তিনি অনেক শুনেছেন, তার দেখা লোকদের মধ্যে কেউ যদি বেহেশতে যায় তাহলে তিনি হবেন দেবী শেঠী।
আমি ডাঃ আলেয়াকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী কেবলমাত্র মুসলমানেরাই কি স্বর্গে যাবে? আলেয়ার উত্তর ছিল “ আমরাও যে বেহশ্তে যেতে পারব তার কি ঠিক আছে? ভাল কাজ করলে যে কেউ বেহশতে যেতে পারে।তখন আলেয়াকে প্রশ্ন করি “ আপনি বলছেন জুকারবার্গ মহৎ কাজ করেছেন , তাহলে তো তার এমনিতেই বেহশতে যাওয়ার কথা , আর মুসলমান হলেই বা ইসলাম গ্রহন করলে যে বেহশতে যেতে পারবে তার নিশ্চয়তা নেই। অথচ আপনি চাইছেন জুকারবার্গ ইসলাম গ্রহন করুন। কেন? এ প্রশ্নের উত্তর পাইনি। এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন ডাঃ আলেয়ার মেয়ে ইংরেজীতে “These are sensitive issues, it is better not to talk about religion” যে জিনিস চরম এবং পরম সত্য তা কেন সংবেদনশীল বিষয় হবে? এড়িয়ে গিয়ে কি পবিত্র ধর্মের পবিত্রতা চিরকাল রক্ষা করা যাবে?
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×