somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছুক্ষণ ভ্রমণ (ঢাকার ভিতরেই)

০৩ রা মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বুড়িগঙ্গা এই নিয়ে অনেকবার গিয়েছি..........
মন্দ লাগে না জায়গাটা। ব্রীজে দাঁড়িয়ে নদীর যান চলাচল.........।

পহেলা ফাল্গুন । দিনটি খুব আনন্দময় সবার জন্য । সবাই যে যার মতো আনন্দ করতে বেরিয়ে পরে ঘরের বাইরে। বাসন্তি, হলুদ, লাল রঙের শাড়ি পড়ে মাথায় ফুলের মালা গুঁজে নিজেকে পরীর মতো সাজিয়ে পরীরা সব একত্র হয় আনন্দ নিতে। গালে হাতে আল্পনা আঁকা বাচ্চাগুলোকে দেখলে মন আনন্দে ভরে যায়। পুরো শহর জুড়ে থাকে উৎসবের আমেজ। গান বাজনা এখানে সেখানে....... যান্ত্রিক জীবনে মানুষ খুঁজে পায় একটু আনন্দ।

উৎসবের আনন্দ নিতে আমিও চেয়েছিলাম পহেলা ফাল্গুনে বের হবো । কিন্তু বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে বাচ্চাদের নিয়ে সকালের দিকে আর বের হওয়া সম্ভব হয়নি। তারপরও আমার বরের কাছে বায়না ধরলাম হালকা পাতলা একটা ভ্রমন করাতেই হবে । আশে পাশে যে কোন জায়গাতে।

আমরা থাকি আইজিগেইট ফরিদাবাদ ব্যাংক কলোনীতে (গেন্ডারিয়া আর পোস্তগোলার মাঝে)। এখান থেকে দূরের কোন জায়গাতে ভ্রমণ করা খুবই কষ্টকর। যানবাহন মোটেও পাওয়া যায় না।

শেষ পর্যন্ত ঠিক হলো আচ্ছা তাহলে সেই বুড়িগঙ্গা ব্রিজেই যাওয়া যাক। বড় ছেলে মোটেও রাজি হচ্ছে না বলছে মা প্রতিদিন একই জায়গায় যেতে ভাল লাগছে না । আমি বললাম বাপরে নাই মামুর চেয়ে কানা মামুই ভালা । চল, তারপরও তো একটু বাইরের বাতাস খাওয়া যাবে। বড় ছেলে মন খারাপ নিয়ে অবশেষে বের হলাম ব্রিজে যাওয়ার জন্য । আগে থেকেই কল্পনায় ভেসে উঠে সেই কালো পানি দুগন্ধযুক্ত পানির কাছাকাছি যাচ্ছি। কিন্তু করার কিছুই নাই। অন্তত তো কয়েকটা লঞ্চ স্পীডবোর্ড আর ছোট ডিঙ্গি নৌকা দেখতে পাবো । ভূঁ ভূঁ করে ছুটে যাচ্ছে যে যার গন্তব্যে ।



আমি আমার বর দুই ছেলে আর আমার ছোট ভাইকে নিয়ে রিক্সা করে চলে গেলাম ব্রিজে। বিকেলের মৃদুমন্দ বসন্তের হাওয়া মন্দ লাগছিল না।

তাছাড়া জোড়া কইতর দেখতে তার চেয়ে বেশী মজা লাগছিল। সবার পরনে হলদু লাল অথবা বাসন্তি শাড়ি। মাথায় ফুলের টায়রা। গল্পগুজবে মত্ত ছিল প্রতিটি মুহুর্তই। কেউ কি আর তখন কালো পানির খবর নেয়। ব্রিজে হাত রেখে ভাবছি আর ভাবছি। মাঝে মাঝে দৈত্যের মত গাড়ি গুলো ভাবনায় ছেদ ঘটায়।



ভাবনাটা হলো বুড়িগঙ্গা নদীকে নিয়ে। এত সুন্দর নদীটা আমাদের । যা কিনা ছোট বেলা থেকেই পড়ে আসছি ঢাকা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। তখন ভাবতাম ইশ একদিন যদি নদীর পাড়ে যাওয়া যেতো কত মজাই না হতো। সেই তো আসলাম তবে স্বপ্নের বুড়িগঙ্গা না এ যেন এক মহা দু:স্বপ্ন । পুরো নদী জুড়ে আলকাতরার মতো পানি। নদীর কিনারে বিভিন্ন পাইপ থেকে রঙ বেরঙ্গের পানি এসে পড়ছে নদীতে। দুর্গন্ধযুক্ত পানির উপর দিয়ে চলছে মানুষ বাহিত ডিঙ্গি, লঞ্চ, স্টিমার । কখনো দেখা যায় লঞ্চের উপর থাকা মানুষগুলোর উল্লাস। ব্রীজের উপর থেকে এসব দেখতে মন্দ লাগে না।



বুড়িগঙ্গা নদী মনে হয় আর এ জীবনে তার পূর্ব রূপ ফিরে পাবে না। তারপরও যদি আমাদের প্রশাসনের নজরটা ঠিক মতো পড়তো বুড়িগঙ্গার দিকে তবে হয়তো কিছুটা হলে বেঁচে থাকতে পারতো আমাদের স্বপ্নের বুড়িগঙ্গা।



এই বুড়িগঙ্গার পানি দেখি অনেকেই ব্যবহার করছেন দৈনন্দিন কাজে। আশ্চর্য্য লাগে মানুষ জেনে বুঝেও এ পানিতে গোসল করছে, হাড়িপাতিল ধুচ্ছে, কাপড় চোপড়ও ধোয়া হচ্ছে। আমার মনে হয় এই পানি যারা ব্যবহার করেন তাদের কিছু কিছু রোগ দেখা দেয় বা দিচ্ছে। হয়তো না পেরে প্রয়োজনীয়তার খাতিরে তারা এমন পানি নিত্য নৈমিত্তিক কাজে ব্যবহার করছেন। আমার মনে হয় এই গরীব অসহায় মানুষদের জন্যও কিছু করা উচিত আমাদের প্রশাসনের। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় পানির ব্যবস্থা করে দেওয়া প্রশাসনের দায়িত্ব।



এ কেমন অবস্থার মাঝে আমরা বসবাস করছি। ক্ষমতার দাপাদাপি, লড়াইয়ে পিষ্ট হয়ে আমরা দিনকে দিন অসহায়ত্বের দিকে ছুটে যাচ্ছি। আমাদের দেখার যেন কেউ নেই।



হায় হায় ভ্রমনের আনন্দ ছেড়ে এ কোথায় চলে এলাম সরি ..............



কিছুক্ষন বুড়িগঙ্গার ব্রীজে থাকি কিছু ছবি তুলি ।



পপকর্ণ খাই অবশেষে বরকে বললাম আজকে চাইনিজ খাওয়ান আমাদের । উনি রাজি হলেন তবে আমি বাদে সবাই খাবে কারণ আমার পিত্ত থলি অপারেশনের জন্য আপাতত চাইনিজ খাওয়া হতে বিরত থাকতে হবে। ঠিকাছে বলে চাইনিজের উদ্দেশ্যে আমরা ব্রীজের পাড় ত্যাগ করে রিক্সা করে আরসিন গেইটে একটা চাইনিজে ঢুকলাম।



শেষ পর্যন্ত কারো চাইনিজ খাওয়া হয়নি। সবাই বলে একজনকে রেখে কিভাবে খাবো। শেষ পর্যন্ত সবাই চিকেন সোপ খেলাম এবং চিকেন ফ্রাই খেলাম।



ডিমলাইটের আলোতে সবাই মিলে খাওয়া এ এক অন্য রকম আনন্দ। বাচ্চারাও বেশ খুশি। বাচ্চারা আনন্দ পেলে আমার এমনিতে সব কিছুতেই আনন্দ খুঁজে পাই। শেষে সন্ধ্যার পরে সবাই বাসায় ফিরে আসি। সেদিনের বিকেলটা বেশ আনন্দেই কাটে। জীবনের ছোট খাটো কোন আনন্দই কিন্তু ছোট না। শুধু উপভোগ করতে হয়। উপভোগ করতে জানতে হয়।



সবাইকে বিরক্ত করার জন্য সরি। ভাল থাকুন সবাই আল্লাহ হাফেজ।

বি:দ্র:........ কালো পানি দেখাতে পারলাম না বলে দু:খিত
ছবিগুলো হালকা ফটোশপ টাচ আছে
ক্যামেরা ক্যানন ৬০০ডি

সেই পুরান কাহিনী........আপনারা মজা পাবেন কিনা জানি না

আমার স্মৃতিতে যা জমা হবার মতো সেগুলো আমি এভাবে লিখে রাখি
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×