এক কাঠুরে, স্ত্রীর মৃত্যুর পর ছোট ছেলেটাকে দেখাশোনার জন্যে, আবার বিয়ে করলেন।
বাচ্চা ছেলে মায়ের শোক ভুলতে পারেনি, তাই বাবার নতুন স্ত্রী-কে ছেলেটা সহজভাবে নিতে পারেনি। তবে, কাঠুরের নতুন স্ত্রী কিন্তু স্বামী ও স্বামীর শিশুপুত্রকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন ও ভালবাসতেন। কিন্তু যখনই বাচ্চাটাকে তিনি আদর করতে যেতেন তখনই বাচ্চাটা ট্যাঁ ট্যাঁ করে কাঁদত। আর কাঠুরে বাড়ি ফিরলে বাচ্চাটা এমনভাবে বাবার কাছে এসে লুকাত যে মনে হতো সারাদিন তার খুব কষ্ট গিয়েছে।
দিনের পর দিন এটা দেখে কাঠুরের সন্দেহ হল- তাঁর নতুন স্ত্রী কি আসলেই তাঁর শিশুপুত্রকে স্নেহ করে নাকি পুরোটাই লোক দেখানো?
আস্তে আস্তে সমস্যা ও সন্দেহ দু'টাই প্রকট আকার ধারণ করল। শিশুপুত্রকে তাঁর স্ত্রী অত্যাচার করছে কিনা দেখার জন্যে কাঠুরে প্রায়ই অসময়ে বাড়ি ফিরে আসত। কিন্তু একদিনও স্ত্রীকে হাতেনাতে ধরতে না পেরে তাঁর সন্দেহ আরও বেড়ে গেল।
একদিন, বাচ্চাটা ঘরের ভেতর খেলছিল, হঠাৎ একটা বড় সাপ এসে বাচ্চাটাকে পেঁচিয়ে ধরে, গিলে খাওয়ার উপক্রম করল। বাচ্চার চিৎকারে সৎ মা এসে এই দৃশ্য দেখে হাতের বটি দিয়ে সাপকে কুপিয়ে টুকরো টুকরো করে শিশুপুত্রকে মুক্ত করে ফেলল। এতে সাপের রক্তে সৎ মা ও শিশু দুইজনেই রক্তাক্ত হয়ে গেল। শিশুকে সাপের টুকরো টুকরো দেহ থেকে সরিয়ে এনে সৎ মা উঠানে রাখল। ঘটনার আকস্মিকতায় বা ভয়ে বা সাপের পেঁচিয়ে ধরার কারণে শিশুটি অজ্ঞান হয়ে গেছে ততক্ষণে।
ঠিক তখনই কাঠুরে সন্দেহবশতঃ বাড়ি ফিরে এল। এসে দেখে রক্তাক্ত নিথর শিশু শুয়ে আছে উঠানে, আর সৎ মা রক্ত মাখা হাতে বটি নিয়ে উদ্যত হয়ে আছে। কাঠুরে এই দৃশ্য দেখে এটাই ভাবল যে, সৎ মা বাচ্চাকে হত্যা করেছে। হিতাহিত জ্ঞান শূণ্য হয়ে কাঠুরে হাতের কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলল স্ত্রীকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:০০