আজ থেকে দু মাস আগে কী এক কাজ শেষে রাতে হাইকোর্টের সামনে দিয়ে আসছিলাম বাসার দিকে । বোধহয় এগারোটার মতো বাজে তখন । গতিময় ঢাকাতে এ সময়েও রাত ততোটা গভীর হয় না । রিকশার টুংটাং আর গাড়ির ভেঁপুর শব্দে নীরবতা ভেঙ্গে খানখান হচ্ছে । অধিকাংশ পথিকের ঘরমুখী ভাব সুস্পষ্ট । রাস্তার পাশের ফুটপাতে আর রোড ডিভাইডার গুলোতে অনেক গুলো মানুষ ইতোমধ্যেই দখল নিয়েছে ।কেউ কেউ প্রচন্ড মশার কামড় আর গাড়িঘোড়ার প্রচন্ড শব্দের মাঝেও কর্মক্লান্ত দেহটা ঘুমের কাছে সপে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছে । অসস্থিতে এপাশ ওপাশ করছে বারবার । অনেকে কুন্ডলী পাকিয়ে ঘুমিয়েও পড়েছে । কারো গায়েমাথায় ময়লা চাদর জড়ানো, তাতে যদি মশার প্রকোপ একটু কমানো যায় !
হাঁটতে হাঁটতে অবাক হচ্ছিলাম নিজের অবস্থাটা একটু চিন্তা করে । রুমে ঘুমানোর সময় আলোহীন নিঃশব্দ একটা পরিবেশ আমার চাই । ভবনের উপর তলায় থাকি বলে মশারী না লাগালেও খুব একটা মশার প্রকোপ নেই । ঘুমের মাঝে রাস্তায় গড়িয়ে পড়ার কিংবা কারো লাথি খেয়ে মাঝরাতে ঘুমানোর যায়গা হারানোর সম্ভাবনা তো মোটেও নেই । এই রাস্তার মানুষগুলোর কষ্টের তুলনায় আমার ঘুমের ব্যবস্থা তো রীতিমত রাজকীয় বলা চলে !
কী দারুণ বৈষম্য ! অথচ ওই ফুটপাতের মানুষটা কিংবা আমি কেউই তো স্রষ্টার সাথে দর কষাকষি করে আমার মায়ের জঠরটা দখল করিনি । অথচ খুব বড় রকমের কোন ব্যত্যয় না হলে আজীবনই আমি অমন আরাম করে তুলোয় মোড়া বিছানায় ঘুমুতে থাকবো আর ওরা রাস্তার নেড়ী কুকুরের মতো কখনো এখানে কিংবা সেখানে ঘুমাতে থাকবে ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৫২