somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রহস্যে ঘেরা আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক B:-/

১০ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আলবার্ট আইনস্টাইন!! এখনো পর্যন্ত বিশ্বের সকল বিজ্ঞানীদের মধ্যে সর্বকালের সেরা মনে করা হয় তাঁকে। ১৮৭৯ শালে জার্মানির উলম শহরের এক ইহুদি পরিবারে তাঁর জন্ম। স্কুল জীবনে তিনি ছিলেন সবচেয়ে ব্যর্থ। শিক্ষকরা তো একবার বলেই দিয়েছিলেন "তোমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না।" কিন্তু সেই বিজ্ঞানী তাঁর প্রখর মস্তিষ্কের তেজে সবার সমালোচনা ঠেলে হয়ে উঠেন সেরার সেরা।
আইনস্টাইন সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত তাঁর সাধারণ আপেক্ষিকতার সূত্রের জন্য। ১৯০৫ সালে তিনি একসাথে ৪টি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রকাশ করেন। তৎকালীন সময়ে অন্যান্য বিজ্ঞানীরা যেখানে আপেক্ষিকতার কিছুই না বুঝে মাথার চুল ছিঁড়ছিলেন তখন এই বিজ্ঞানী মাত্র ২৬ বছর বয়সে তাঁর বিখ্যাত আপেক্ষিকতার সূত্র প্রতিপাদন করেন। পদার্থ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাঁর দেওয়া তত্ত্ব গুলি ছাড়া বর্তমান বিশ্বের সকল আবিষ্কারই অসম্ভব মনে করা হয়
আইনস্টাইনের এই সকল তত্ত্ব এবং আবিষ্কারের মূলে ছিল তার প্রজ্ঞা এবং অসাধারণ মস্তিষ্কের অবদান।
এখন প্রশ্ন পদার্থ বিজ্ঞানের এত্তসব জটিল তত্ত্বের প্রবক্তার মস্তিষ্ক কি সাধারণ মানুষের মতো ছিলো?? না তার মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রার ছিলো??
এজন্য চলুন ঘুরে আসা যাক আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের রাজ্যে।


১৯৫৫ সালের এপ্রিল মাসে প্রিন্সটন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। সারা বিশ্বে খবর ছড়িয়ে গেলো আইনস্টাইন আর নেই। বাকরূদ্ধ সম্পূর্ণ বিজ্ঞানী মহল। তাঁর মৃত্যুর পর আমেরিকার তৎকালীন নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনের জন্য পোস্টমর্টেম করা হলো। কিন্তু এই পোস্টমর্টেম করার সময় অতি গোপনে একটা কাজ করে ফেলা হয়। আর এই গোপনীয়তার মূলে ছিলেন প্রিন্সটন হাসপাতালের প্যথলজিস্ট ডাঃ টমাস হার্ভে। প্রিন্সটন হাসপাতালের পরিচালকের কথা অনুযায়ী তিনি অতি গোপনে আইনস্টাইনের মাথার খুলি ভেদ করে মস্তিষ্ক বা "ব্রেন" বের করে নিয়ে আসেন। উদ্দেশ্য একটাই কি বিশেষত্ব আছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রতিভাধর বিজ্ঞানীর মস্তিষ্কে তা জানা।।

মৃত্যুর কয়েকদিন পর The New York Times এ খবর বেরোলো আইনস্টাইন তাঁর মস্তিষ্ক গবেষণার জন্য দান করে গেছেন। এই খবর সারা বিশ্বে আলোড়ন ছড়িয়ে ফেলে। এরপর ঘটে এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। ডঃ টমাস হার্ভে আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক নিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। অনেক খোঁজা খোঁজির পরও কোনো খবর পাওয়া যায় নি তাঁর।



তারপর ধীরে ধীরে মানুষ ভুলে যায় আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের কথা। এরপর প্লটে আসে ১৯৭৮ সাল। মান্থলি নিউজার্সি নামক একটি পত্রিকার একজন রিপোর্টার স্টিভেন লেভি দাবী করেন যে তিনি টমাস হার্ভের সন্ধান পেয়েছেন। তাঁর ভাষ্য মতে টমাস হার্ভের সাথে খোশ গল্পের এক পর্যায়ে হঠাৎ তিনি আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের কথা তোলেন। তখন হার্ভে তাকে একটি জারের মধ্যে আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক দেখান। অপর আরেকটি জারে তিনি দেখতে পান মস্তিষ্কের টুকরো করা চিনাবাদাম আকৃতির কতগুলা ব্লক। হার্ভে এই ব্লক গুলো Silurian নামক তরল পদার্থের মধ্যে নিমজ্জিত করে রাখেন।



এখন চলে যাই আরেকটু অতীতে, টমাস হার্ভে ১৯৫৫ সালে মস্তিষ্ক সংগ্রহের পর থেকেই গবেষণা শুরু করে দিয়ে ছিলেন। প্রথমেই তিনি লক্ষ্য করেন আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের ওজন ১২৩০ গ্রাম, অপর পক্ষে সাধারণ মানুষের মস্তিষ্কের ওজন ধরা হয় ১৩০০ গ্রাম। হার্ভে তখন সিদ্ধান্ত নেন যে মস্তিষ্ককে বিভিন্ন টুকরায় ভাগ করবেন। তিনি তখন ২৪০টি ব্লকে ভাগ করেন। ব্লকগুলোর কিছু তিনি নিজের কাছে রাখেন এবং কিছু তাঁর সহকর্মী-প্যাথলজিষ্টদের কাছে পাঠান। সেইসময়ে বিজ্ঞানীরা আইনস্টাইনের মস্তিষ্কে সাধারণ মানুষের চেয়ে আলাদা কোনো বিশেষত্ব খুঁজে পান নি।



কিন্তু এর ৩০ বছর পর ১৯৮৫ সালে Marian Diamond তাঁর মস্তিষ্কে সাধারণ মানুষের তুলনায় বেশি পরিমাণ Glial Cell রয়েছে, যা নিউরনকে আরো সহজ এবং দ্রুততার সাথে কাজ করতে সাহায্য করে। এরপর বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা তাঁর মস্তিষ্কের আরো কিছু বিশেষত্ব খুঁজে পান। এগুলো না হয় পরে আরেকদিন লেখা যাবে।।

বিঃদ্রঃ-
আপনি যদি যদি আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক এখন দেখতে চান তাহলে আপনাকে চলে যেতে হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার Mütter Museum এ। কারণ আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক এখন সেখানে সংরক্ষিত করা রয়েছে।

Read More: http://www.bbc.com/news/magazine-32354300
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:০৯
১৯টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×