হিন্দি এক চ্যানেলে এক নারী অভিনেত্রী বলতেছিলো,
নারীই যেনো নারীকে অপমান, অন্যায়, অত্যাচার না করে। প্রত্যেক নারী অন্য এক নারীকে যেন সম্মান করে। শাশুড়ি বৌকে বৌ শাশুড়ি কে সম্মান ও স্নেহ করবে। শাশুড়ি বৌ এর মধ্যে সম্পর্ক যেন মা মেয়ের মত হয়, কেননা একদিন শাশুড়িও বৌ ছিলো। কথাটা সে খুব সুন্দর বলেছে।( হিন্দিতে বলছিল আমি বাংলা অনুবাদ করে দিছি, আর আমি কোনো হিন্দি সিরিয়াল দেখিনা। আমার পাশে বসা এক কাজিন এর কাছ থেকে জানতে পারছি ঐ নারী হিন্দি সিরিয়ালের অভিনেত্রী)।
ফেয়ার এন্ড লাভলীর বিজ্ঞাপন তো সবাই দেখেছেন তো নিশ্চিত। সেখানে প্রত্যেক বার একটা কথাই নারীকে স্মরণ করে দেয়া হয় "যদি ক্যারিয়ার গড়তে চাও তাহলে ফর্সা হও" তার মানে এই দাঁড়ায় শুধু গুণবতী নয় রূপবতীও হতে হবে! এর সাথে অনেক নারী আবার একমতও হয়েছেন। কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধুর চাচাত বোন সুন্দর না হওয়ার কারণে তার চাকরি হয়নি! অথচ সে অনেক প্রতিভাবান।
ফেসবুকে একটা ট্রল আছে যদি ফেয়ার এন্ড লাভলী ত্বক ফর্সা করতে পারে তাহলে আফ্রিকায় যায়না কেন? সেখানে অনেক কালো মেয়ে আছে।
অনেকেই বলেছেন, নারীদের আজ পন্য বানিয়ে ফেলা হচ্ছে, বিশেষ করে নারীদের শরীরকে! এই কথার পরিপেক্ষিতে, হিন্দি ছিঃনেমার আইটেম সং এর কথা থাক, বাংলা সিনেমাতেও আইটেম সং !! অদ্ভুত.... কমন ডায়ালগ হয়ে গেছে একটা আইটেম গান না থাকলে কি ছবি হিট হয় ?! বেশ হতাশা জনক ওই আইটেম গানের যে মূল চরিত্র সেও একজন মেয়ে মানুষ, কম পোশাকে নাচতেছে এরকম দৃশ্যে দেখা যায়। কোথায় যাচ্ছে দেশ , জাতি , বিবেক!! চিন্তা শক্তি দিন দিন হারাইতেছে বা হ্রাস ঘটছে। ওই আইটেম গানের দৃশ্যে যদি মেয়েটা কম পোশাক পরে না নাচতো তাহলে জোর করে কি কেউ নাচাতে পারতো! বেশি কথা বাড়ালাম না, শুধু এতোটুকু বলার, অন্তত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এরকম টা হওয়া উচিত নয়। আইটেম গার্ল বলে নিজেকে পরিচয় দিলে কারও সম্মান বেড়ে যায়না খোলামেলা পোশাকে কখনো কারও মান সম্মান বৃদ্ধি পায়না।
ওই আইটেম সংএর নায়িকাকে যদি বলা হয় যে কেন আপনি এরকম খোলা মেলা পোশাক পরে আইটেম সং এর দৃশ্যে নাচেন? তখন তার উত্তর সে এভাবে দিবে, এটা আমার অধিকার আমি কম পোশাক পরতেই পারি, তাতে কার কি আসে যায়। এরকম উত্তরই আসবে
( কেউ হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, যে আমি কিভাবে জানলাম যে আইটেম সং এ কম পোশাক পরা হয়? ভাই না জানলে বলা যাবেনা তো, বিষ না চিনলে মরার উপায় হবে আরকি।)
এবার আরেকটা বিজ্ঞাপনের কথা বলি না বললেই নয়! শেভ করার যে রেজর, শেভিং ক্রিমের বিজ্ঞাপন দেখানো হয় সেখানে একজন পুরুষ থাকবে স্বাভাবিক, কিন্তু একজন নারীকেও ওই বিজ্ঞাপনে দেখতে হবে কেন? একটা প্রশ্ন রেখে গেলাম।
আমি প্রায়ই সময় চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে দেখি বিশেষ করে মার্কেটিং বা সেলিং এক্সেকিটিভ পদে নিয়োগ পোস্টে কোম্পানি গুলো নারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। চাকরি করার জন্য হয়তো অনেক মেয়ে চাকরি টা বেছে নিবে অনেকেই অনেকের প্রয়োজনে। একবার আমি এক কোম্পানির ম্যানেজার কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এমন কেন! উনার উত্তর ছিলো, নারী সেলস পারসন থাকলে সেল বেশি হয়। তা না হয় বুঝলাম সেল বেশি হয় কিন্তু আপনার মেয়েও যদি ভবিষ্যতে এরকম চাকুরী করে তাহলে আপনি কি মেনে নিবেন? যাই হোক লোকটা একটা ফোন কলের বাহানায় কথাটা এড়িয়ে যায়। সে অনেক দিন আগের কথা।
খুব জানতে ইচ্ছে করে কবে বিশ্ব মানুষ দিবস পালন করা হবে?
বেশি বিতর্কিত বা মনে কষ্ট দেয়া পোষ্ট হলে ৬ ঘন্টা পর ডিলিট করে দিবো পোষ্টখানা!!!
আমার বিশেষ কথা: যে সম্মান রক্ষা করতে পারে ও অন্যকে সম্মান দিতে পারে সেই সম্মানের অধিকারী।
নারীকে সম্মান জানাতে দিবস লাগে নাকি! নারীও একজন মানুষ। নারী পুরুষ একে অন্যের পরিপূরক। নারী ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সন্তান গর্ভে বহন করে। নারী পারে বংশ রক্ষা করতে। তাই নারী কে সব সময় সম্মান জানাই।
মুষ্টিমেয় কয়েক জন নারী কিংবা পুরুষের ভুল কর্মকান্ডের জন্য সবার সম্মান ব্যাহত হয় না।
প্রতিপাদ্য হোক 'নির্দিষ্ট দিবস নয় সব দিনই হোক নারীদের, পুরুষের, সকলের' । সে সব নারীদের স্যালুট জানাই যারা তিল তিল করে গড়ে ওঠা সংসার কে আগলে রেখেছে, যারা দেশের জন্য শহীদ হয়েছে, যারা দেশের উন্নতির জন্য কাজ করছে।
পাদটিকা- ১
তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও আমি তোমাদের একটা শিক্ষিত জাতি দিবো।
- ন্যাপলিয়ন বোনাপার্ট
পাদটিকা-২
শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড কথাটা একটু ভুল কথাটা হবে সুশিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড।
পানির ওপর নাম জীবন নিশ্চিত বিশুদ্ধ পানি!
পাদটিকা-৩
অনেক নারী স্বামীর সাথে ঘর সংসার করতে চায় না , সে চায় স্বাধীনতা, চাকরি করতে চায়।
চাকরিই তো এক ধরণের পরাধীনতা!
শেষে একটা ছোট প্রশ্ন নারী দিবস কত সাল থেকে উদযাপন হয়ে আসছে?
( খুব আশা করছি যে কথা গুলো মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং সুন্দর মন্তব্য কামনা করি।)
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১:১৯