somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরঃ নমি তোমায় বিনম্র শ্রদ্ধায়।

২৯ শে জুলাই, ২০০৯ দুপুর ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ ২৯ জুলাই ২০০৯ আধুনিকালের শ্রেষ্ট বাঙালী ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১০৮ তম মৃত্যু বার্ষিকী।

ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর কে নিয়ে কিছু লিখবার কোন ক্ষমতা আমার নাই। তাই বিদ্যাসাগর সম্পর্কে আমার ব্যক্তি গত অনুভুতির দু'টি কথা বলতে চাই।

মাইলস্টোন ও ঈশ্বর চন্দ্র

আজ পরিস্কার স্মরণ আসছে না, শিশুপাঠে কোথাও বালক ঈশ্বর চন্দ্র কে নিয়ে একটা কাহিনী পড়েছিলাম। কাহিনীটা ঈশ্বর চন্দ্রের বাবার সাথে পায়ে হেটে কলকাতা যাবার কালে পথের পাশের মাইলস্টোন দেখে ইংরেজি গননা শিক্ষা সংক্রান্ত। কাহিনী টি আমার শিশু মনে গভীর দাগ কেঁটে ছিল । সেই শৈশব থেকে আজ পর্যন্ত গাড়িতে ভ্রমনকালে জানালার পাশের সীটে বসবার আমার প্রধান আকর্ষন 'মাইলস্টোন' পড়া।

আজ পঙ্কিল জীবন চলার পথে সমাজের নোংরামি আর মানুষে ভন্ডামি দেখে দেখে যখনই বারংবার হতাশ হয়ে পরি, তখনই দেখি জীবনের বাঁকে বাঁকে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর হাস্য উজ্জ্বল মুখে দাড়িয়ে আছেন ।

বিদ্যাসাগর উপাধি ঃ

আমার ছোট বেলায় ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের নামের শেষাংশের 'বিদ্যাসাগর' উপাধিটি নিযে আমার চরম বিস্ময় ছিল। আম্মা বুঝি দিযেছিলেন , তিনি এত পড়াশনা করেছিলেন যে তাঁর সাথে জ্ঞানের প্রতিযোগিতায় কেউ পেরে উঠতো না।সাগরের জল যে অফুরন্ত , তেমনি বিস্তৃত তাঁর জ্ঞান।

১৮৩৯ সালের ২২ এপ্রিল 'হিন্দু ল কমিটি'র পরীক্ষা দেন ঈশ্বরচন্দ্র। এই পরীক্ষাতেও যথারীতি কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে ১৬ মে ল কমিটির কাছ থেকে যে প্রশংসাপত্রটি পান, তাতেই প্রথম তাঁর নামের সঙ্গে 'বিদ্যাসাগর' উপাধিটি ব্যবহৃত হয়। এই প্রশংসাপত্রটি ছিল নিম্নরূপ :



সংস্কৃত কলেজে বারো বছর পাঁচ মাস অধ্যয়নের পর তিনি এই কলেজ থেকে অপর একটি প্রশংসাপত্র লাভ করেন। ১৮৪১ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রাপ্ত দেবনাগরী হরফে লিখিত এই সংস্কৃত প্রশংসাপত্রে কলেজের অধ্যাপকগণ ঈশ্বরচন্দ্রকে 'বিদ্যাসাগর' নামে অভিহিত করেন। প্রশংসাপত্রটি নিম্নরূপ:



এ রকম সনদধারী ব্যক্তির পৃথিবীতে ভুড়ি-ভুড়ি আছে। ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের সমসায়িক কালে বা বর্তমান কাল পর্যন্ত তাঁর মত কিংবা তাঁর থেকে বেশি সার্টিফিকেট ধারী অনেকেই জন্মেছেন। কিন্তু অর্জিত জ্ঞানকে তাঁর মত প্রকৃত নৈব্যক্তিক প্রয়োগ করে যাওয়া মানুষ খুজে পাওয়া সমগ্র বাংলার ইতিহাসে দুষ্কর।

খ্যাতির মোহঃ


১৯৩৫ সংবৎ (১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দ)-এ প্রকাশিত বর্ণপরিচয় গ্রন্থের ৫৩তম সংস্করণ। বাংলা বর্ণশিক্ষার জগতে ১৮৫৫ সালে প্রকাশিত বইটি দেড়শ বছর পরে আজও সমান জনপ্রিয়।

মানুষের অর্জিত সম্পদ কে দু ভাগে ভাগ করা যায়; এক বস্তুগত সম্পত্তি আর দুই ভাবগত সম্পত্তি। নিজ কায়িক শ্রম ও মেধাবলে অর্জিত বস্তুগত সম্পদ ( অর্থ , জমি- জমা) দু'হাতে অকাতরে বিলিয়ে যাওয়া মহৎ হৃদয়ের পরিচয নিঃসন্দেহে। কিন্তু নিজ যোগ্যতায় অর্জিত জস-মান নির্লিপ্ত ভাবে অবহেলা করার শক্তি অর্জণ অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না।
ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর অর্জিত সকল বস্তগত সম্পদই শুধু অকাতরে বিলিয়ে জান নি; সত্য আর ন্যায় প্রতিষ্ঠায় নিজের সামাজিক অবস্থান- খ্যাতিকে পদদলিত করতে এক মুহুর্ত বিলম্ব করেন নি।

ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের কেন অবহেলিত?

ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের মত মানুষ কে মূল্যায়ণ করেনি তার সমসাময়িক অনেক প্রতিভাবান মানুষই। আজও এই বিশাল মাপের মানুষটি কে সাধারণ মানুষের অন্তরালে রাখা হয় সুকৌশলে। যে টুকু হাজির করা হয় তাও খন্ডিত।

কিন্তু কেন ?
কেন না, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর মানে হচ্ছে সকল সামাজিক অসংগতি আর বঞ্ছনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের নাম।
ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর মানে হচ্ছে সদা উন্নত শীর...... স্বাধীন চিন্তা আর যুক্তিবাদীতার মুর্ত প্রতীক ।


সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০০৯ দুপুর ২:৪২
৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×