'ওই জুতা কতরে????
'ভাই,একদাম ২০০টাকা।
কেন,এত কেন???? এক মাস আগেও তো নিলাম ১০০টাকা।
'''কি কন ভাই,ঈদের মাস। এত বেশিও তো কই নাই।
-নাহ,এত দিয়া জুতা এখান থেকে না কিনে রাইফেলস থেকেই কেনা ভালো।
''আইচ্ছা,ভাই ১৫০ দিয়েন,তাও লইয়া যান।
-নাহ,এত দিয়ে তো নিবো নাহ,১০০ হইলে দে, নাইলে গেলাম।
''''আইচ্ছা,ভাই লইয়া যান। আমার আবার টেরেন ধরবার লাগবো। বাড়িত যামু । মা, বইন আমার পথ চাইয়া বইয়া আছে। যত কিছুই হোক ঈদের দিনডা তো আপনজনের লগে কাটাইতে পারুম। তয় ভাই ২০টা টাহা বেশি দিলে ভালা হইতো। কিছু টাহা জমাইছিলাম। ছোডো বইনডার লাইগা তাইলে একটা জামা নিতাম।
-:আমি তাকিয়ে রইলাম ছেলেটার দিকে। আমার বয়সি ছেলে,ঢাকায় একা একা টাকা উপার্জন করছে। কত কষ্টই নাহ হচ্ছে,কিন্তু সে যখন বলছিল তার বাড়ি যাওয়ার কথা,'তার মায়ের কথা,বোনের কথা, তার চোখে মুখে অন্যরকম একটা ঝিলিক দেখেছি,দেখেছি সত্যিকারের ভালোবাসা। আপনজনের জন্য, তাদের দেখার জন্য আকুলতা।
আমি তাকে ২০০ টাকা দিয়ে বললাম "সামর্থ্য থাকলে তোর বোনের জন্য আমি নিজেই একটা জামা কিনে দিতাম,এটা রাখ"
ছেলেটার চোখ মুখ খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে গিয়েছিল,ঘামছিল কিন্তু বোঝা যাচ্ছিল নাহ। ছেলেটার মুখে হাসি,সত্যিকারের হাসি। মনে হলো বহুদিন এমন হাসি দেখিনা।
তারপর জুতা নিয়ে একটু সামনে এগিয়ে আবার পিছে তাকাই। ছেলেটা ব্যস্তসমস্ত তার সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছে।
তার যে তার ছোট বোনের জন্য একটা লাল টুকটুকে জামা নিতে হবে,মায়ের জন্য সেমাই, আর বড় বোনের জন্য রঙিন চুড়ি ।
রাতের ট্রেনেই হয়তো তার স্বপ্ন যাবে বাড়ি। কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তব। সে কঠিন বাস্তবতাকেও বুড়ো আংগুল দেখিয়ে,যাবে পরিবারের কাছে,ছোট্ট বোনটির কাছে,লাল টুকটুকে জামাটি নিয়ে।