কাকে বলে পেপটিক আলসার ডিজিস ?
পেপটিক আলসার হল পাকস্থলীর বা ক্ষুদ্রান্ত্র এর প্রথম অংশের (ডিউডেনাম) আস্তরণের ক্ষয় যা গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিডের কারণে হয়ে থাকে।
পেপটিক আলসার ডিজিস কেন হয়?
অধিক গুরুত্বপূর্ণ কারণ সমূহঃ
১) Helicobacter pylori ইনফেকশন
২) ব্যথার ওষুধ (NSAIDs)
৩) ধূমপান।
অন্যান্য কারণ সমূহঃ
১) কেমোথেরাপি
২) স্টেরয়েডস
৩) ক্লোপিডোগ্রেল
৪) এলকোহল
৫) Herpes simplex virus, Cytomegalo virusবা Helicobacter heilmanni ইনফেকশন
৬) খাদ্যতন্ত্রে ইশকেমিয়া (রক্ত সরবরাহের অভাব)
৭) হাইপোভলেমিয়া (রক্তের ভলিওম কমে যাওয়া)
৮) শক
৯) ডিউডেনাল অবস্ট্রাকশন
১০) রেডিয়েশন থেরাপি
১১) ক্রন্স ডিজিস
১২) জলিঙ্গার এলিসন সিনড্রোম
১৩) সারকোইডোসিস ইত্যাদি।
পেপটিক আলসার ডিজিস এর উপসর্গসমূহ:
১) পৌনঃপুনিক বার্নিং বা একিং ধরণের উপরের পেটে ব্যথা যা খাবার 1-3 ঘন্টা পরে হয় (ডিউডেনাল আলসার এ) বা, খাবার পর পর হয় (গ্যাস্ট্রিক আলসার এ), কখনও কখনও পিছনেও যায় এবং সাধারণত একটি অম্লনাশক বা অ্যাসিড রিডিউসার নেওয়ার পর দূর হয়ে যায়
২) ক্ষুধাহীনতা
৩) বমি বমি ভাব
৪) পেট ফোলা
৫) উপসর্গসমূহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনুপস্থিতও হতে পারে।
গুরুতর উপসর্গসমূহযা দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের নিকট যেতে হবে:
১) রক্ত বমি (কফির মত রং এর)
২) খাওয়ার পরে বমি
৩) কালো আলকাতরার মতো মল ত্যাগ
৪) দৃঢ়, শক্ত পেট যাতে ধরলে ব্যথা লাগে
৫) অজ্ঞান হওয়া
৬) অতিরিক্ত ঘামানো
৭) কনফিউশন তৈরি হওয়া।
পেপটিক আলসার ডিজিস প্রতিরোধ করুনঃ
১) লাইফস্টাইল পরিবর্তন করুনঃ
i) শুতে যাওয়ার ২ ঘন্টা আগে থেকে কিছু খাবেন না বা পান করবেন না
ii) ধূমপান করবেন না
iii) মদ্য পান হতে দূরে থাকুন
iv) মানসিক চাপ মুক্ত থাকুন
v) ব্যথার ওষুধ(NSAIDs) যতদূর সম্ভব উপেক্ষা করুন
২) খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনকরুনঃ
i) যেসব খাবারে আপনার বুক জ্বালা পোড়া বা পেপটিক আলসার এর ব্যথা বাড়ে সেসব খাবার কম খাবেন, পারলে খাবেন না
ii) দিনে ৩ বেলা বেশী পরিমাণে খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে ৫/৬ বার খান
iii) বেশী মসলাযুক্ত খাবার খাবেন না
iv) ধীরে ধীরে ভাল মতো চিবিয়ে খাবেন
v) সহজে হজম হয় এমন চর্বি খাবেন, যেমন – ননীযুক্ত দুধ, ডিমের কুসুম, ক্রিম এবং মাখন।
vi) চা, কফি, কোলা ইত্যাদি যতটুকু সম্ভব কম গ্রহণ করুন
vii) আঁশ যুক্ত ফল ও সবজি খুব বেশি খাবেন না
viii) প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশী খাবেন
পেপটিক আলসার ডিজিস এর চিকিৎসাঃ
১) Helicobacter pylori ইনফেকশনের কারণে হলেঃ
হেলিকন কিট বা পাইলোট্রিপ স্ট্রিপ –
১টি করে স্ট্রিপ সকালে ও রাতে (খাওয়ার ১/২ ঘন্টা আগে) -১৪ দিন, এরপর,
ক্যাপ./ট্যাব. অমিপ্রাজোল/ইসোমিপ্রাজোল/প্যান্টোপ্রাজোল/রাবিপ্রাজোল (২০/৪০ মিঃ গ্রাঃ)
১টি করে ক্যাপ./ট্যাব সকালে ও রাতে (খাওয়ার ১/২ ঘন্টা আগে) -১৪ দিন/১ মাস।
২) ব্যথার ওষুধ (NSAIDs) এর কারণে হলেঃ
i) ক্যাপ./ট্যাব. অমিপ্রাজোল/ইসোমিপ্রাজোল/প্যান্টোপ্রাজোল/রাবিপ্রাজোল (২০/৪০ মিঃ গ্রাঃ)- ১টি করে ক্যাপ./ট্যাব সকালে ও রাতে (খাওয়ার ১/২ ঘন্টা আগে)-১৪ দিন/১ মাস।
ii) ট্যাব. মিজোপ্রোস্টোল (২০০ মাইক্রোগ্রাম) – ১টি করে ৬/৮ ঘন্টা পরপর -২/১ মাস।
iii) ট্যাব. সুক্রালফেট (৫০০/১০০০ মিঃ গ্রাঃ) – ১ টি করে ৬ ঘন্টা পরপর বা ২ টি করে ১২ ঘন্টা পরপর (খাওয়ার ১/২ ঘন্টা আগে) -১ মাস।
iv) এলুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড, মেগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড ও সিমিথিকোন এর মিশ্রণে তৈরি সাস্পেনশন (যেমনঃ এন্টাসিড প্লাস) – ২/৩ চামচ করে দিনে ৩ বার (খাওয়ার ১/২ ঘন্টা আগে বা ২ ঘন্টা পরে) – ১৫ দিন/ ১ মাস।
আরও রোগ সম্পর্কে জানতে/আপনার রোগ সম্পর্কে আমার সাথে Live Chat করতে/আমাকে Message পাঠাতে ভিজিট করূনঃ
|medicalforall.net/স্বাস্থ্য
ফেইসবুকে আমাকে আপনার রোগ সম্পর্কে জানাতে লিখুন এখানেঃ
www.facebook.com/Medicalforallnet
ডাঃ মোঃ রেদওয়ানুল হক মাসুম।
সিনিয়র হাউস অফিসার, ইউনাইটেড হাসপাতাল ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৮