somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ড. জাকির নায়েকের পূর্ণাঙ্গ জীবনী

১৩ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জাকির নায়েক
পূর্ণনাম - জাকির আব্দুল করিম নায়েক
জন্মঃ ১৮ অক্টোবর ১৯৬৫, মুম্বাই, ভারত

তিনি হলেন একজন ভারতীয় ইসলামী চিন্তাবিদ, ধর্মপ্রচারক, বক্তা ও লেখক যিনি ইসলাম ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব বিষয়ে কাজ করেন।

তিনি 'ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন' নামক একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, যেটি পিস টিভি নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে থাকে, যার মাধ্যমে তার বক্তৃতা প্রায় দশ কোটি দর্শকের নিকট পৌঁছে যায়। তানি তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের একজন বিশেষজ্ঞ ও সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি।

তাকে টেলিভিশনভিত্তিক-ধর্মপ্রচারণার এবং আধুনিক ইসলামের একজন ও পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় সালাফি ধর্মপ্রচারক বলা হয়ে থাকে।

বহু ইসলামী ধর্মপ্রচারকদের সাথে তার ভিন্নতা হল, তার বক্তিতা গুলো পারস্পারিক আলাপচারিতা ও প্রশ্নোত্তরভিত্তিক,
যা তিনি আরবি কিংবা উর্দুতে নয় বরং ইংরেজি ভাষায় প্রদান করেন

পেশাগত জীবনে তিনি একজন ডাক্তার হলেও ১৯৯১ সাল থেকে তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচারে মনোনিবেশ করেন। ইসলাম এবং তুলনামূলক ধর্মের উপর তিনি তার বক্তিতা বহু পুস্তিকা সংস্করণ প্রকাশ করেছেন।

যদিও প্রকাশ্যে তিনি ইসলামে শ্রেণীবিভাজনকে অস্বীকার করে থাকেন, তবুও অনেকে তাকে সালাফি মতাদর্শের সমর্থক বলে মনে করেন, এবং আরও অনেকে তাকে ওয়াহাবি মতবাদ প্রচারকারী ধর্মপ্রচারক বলেও মনে করে থাকেন।
বর্তমানে ভারত, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশে তার ধর্মপ্রচার নিষিদ্ধ।


জীবনী

জাকির আবদুল করিম নায়েক ১৮ অক্টোবর ১৯৬৫ সালে ভারতের মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মুম্বাইয়ের সেন্ট পিটার্স হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। তিনি মেডিসিনের ওপর টোপিওয়ালা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড নাইর হসপিটালে ভর্তি হন। অতঃপর, তিনি ইউনিভার্সিটি অফ মুম্বাই থেকে ব্যাচেলর অব মেডিসিন সার্জারি বা এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৯১ সালে তিনি ইসলাম-ধর্ম প্রচারের কার্যক্রম শুরু করেন এবং আইআরএফ প্রতিষ্ঠা করেন।

নায়েকের স্ত্রী, ফারহাত নায়েক, ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নারীদের শাখায় কাজ করেন।

ডাঃ জাকির বলেন তিনি আহমেদ দিদাতের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন,
যার সাথে তিনি ১৯৮৭ সালে সাক্ষাত করেন। ডাঃ জাকিরকে অনেক সময় ‘‘দিদাত প্লাস’’ বলা হয়, এই উপাধি দিদাত নিজে দেন।

এছাড়াও তিনি মুম্বাইয়ের ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং ইউনাইটেড ইসলামিক এইডের প্রতিষ্ঠাতা, যা দরিদ্র ও অসহায় মুসলিম তরুণ-তরুণীদের বৃত্তি প্রদান করে থাকে।

ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে তাকে "পিস টিভি নেটওয়ার্কের পৃষ্ঠপোষক ও আদর্শিক চালিকাশক্তি" হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
যে চ্যানেলটি "সমগ্র মানবতার জন্য সত্য, ন্যায়বিচার, নৈতিকতা, সৌহার্দ্য ও জ্ঞানের" প্রচারের লক্ষ্যে কাজ করে বলে এর ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে।

বক্তিতা ও বিতর্ক
জাকির নায়েক ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত অনেক বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন ও বিতর্ক করেছেন।
জাকির নায়েক ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত অনেক বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন ও বিতর্ক করেছেন।
বিভিন্ন ধর্মের তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে ইসলামের অধিকতর গ্রহণযোগ্যতা প্রতিষ্ঠা করা তার অন্যতম কৌশল।
তার আলোচনার বিষয় হল: "ইসলাম ও আধুনিক বিজ্ঞান",

তার অন্যতম বিখ্যাত বিতর্ক হয় ২০০০ সালের এপ্রিলে বিজ্ঞানের আলোয় কুরআন ও বাইবেল’ বিষয়ে শিকাগোতে উইলিয়াম ক্যাম্পবেলের সাথে। তিনি বলেন ইসলাম একটি কার্যকারণ ও যুক্তির ধর্ম এবং কুরআনে বিজ্ঞান বিষয়ক প্রায় ১০০০ আয়াত আছে। সেখানে তিনি পশ্চিমা কনভার্টের সংখ্যা ব্যাখ্যা করেন।
জাকিরের অন্যতম জনপ্রিয় থিম হল বিজ্ঞানের সূত্র দিয়ে কোরআনকে যাচাই করা।
২১ জানুয়ারি ২০০৬ জাকির শ্রী শ্রী রবিশঙ্করের সাথে ‘ইসলাম ও হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর’ বিষয়ে ব্যাঙ্গালোরে বিতর্ক করেন।

২০০৪-এ অস্ট্রেলিয়ায় ও ২০০৬-এ ওয়েলসে সফর

‘‘শুধু ইসলামই নারীকে সমতা দেয়-এ বিষয়ে জাকির ২০০৪ সালে ‘ইসলামিক ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক অফ অস্ট্রেলিয়া-এর আমন্ত্রণে মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটিতে বিতর্ক করেন। তিনি বলেন যে, পশ্চিমা পোষাক মেয়েদের ধর্ষণের অন্যতম কারণ। কারণ, এটা মেয়েদেরকে পর-পুরুষের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে।
২০১০-এ যুক্তরাজ্য ও কানাডায় নিষেধাজ্ঞা
ডঃ নায়েককে ২০১০-এর জুন মাসে যুক্তরাজ্যে ও কানাডায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এবং তিনি বাংলাদেশ এবং ভারতেও নিষিদ্ধ।

জাকিরের দৃষ্টিভঙ্গি
জাকির বলেন তার লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষিত মুসলমানরা যারা তাদের নিজ ধর্মকে ত্রিুটিপূর্ণ, সেকেলে (প্রচীন/পুরাতন) বলে মনে করেন। তিনি মনে করেন, প্রত্যেক মুসলিমের উচিত ইসলাম সম্বন্ধে ভুল ধারণা গুলো ভেঙে দেওয়া এবং পশ্চিমা মিডিয়ার ইসলামের ওপর অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বলতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সেপ্টেম্বর ১১, ২০০১-এর আক্রমণ বা নাইন ইলেভেন এর সাজানো নাটককে বোঝান। নায়েক আরও বলেন যে, তীব্র ইসলাম বিরোধী প্রচারণা সত্ত্বেও ২০০১ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে ৩৪,০০০ মার্কিন নাগরিক ইসলাম গ্রহণ করে। নায়েকের ভাষ্য অনুযায়ী, ইসলাম একটি কার্যকারণ ও যুক্তির ধর্ম, এবং কুরআনে বিজ্ঞান সম্পর্কিত ১০০০ বানী রয়েছে, যা তিনি পশ্চিমা ধর্মান্তরিত মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। তার কিছু নিবন্ধ ‘‘‘ইসলামিক ভয়েস’’’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব
নায়েক ইসলামকে শ্রেষ্ঠ ধর্ম বলে দাবি করেন কারণ “স্বয়ং কুরআনে এই কথা বলা হয়েছে। অন্য কোন ধর্মগ্রন্থ বা ধর্মীয় লিপি এমনটা দাবি করে না। তিনি আরও বলেন, ইসলামকে অসহনশীল হিসেবে মেডেল/পরিচয় দেয়া হয়। দুর্নীতি, বৈষম্য, অবিচার, ব্যাভিচার, মাদক এবং সকল খারাপ বিষয়বস্তুর প্রতি নিষেদাঙ্গা দেওয়া হয়। ইসলাম হল সবচেয়ে "সহনশীল" ধর্ম, যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষের মূল্যবোধের প্রতি সমর্থন ঠিক থাকে।

সঙ্গীত
নায়েক সঙ্গীত ও বাদ্যযন্ত্রকে মদের সঙ্গে তুলনা করে বলেন যে দুটোই প্রকৃতিগতভাবে নেশা সৃষ্টিকারী। ইসলামে নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে তিনি নাচগানকে তিরস্কার করে থাকেন।

চুরির শাস্তি
জাকির নায়েক বলেন যে, যে কোন দোষী ব্যক্তি শাস্তি পাবার যোগ্য। তিনি চুরির বিচার হিসেবে দুই হাত কেটে ফেলার নির্দেশনা দেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রকেও তিনি এই আদেশ বাস্তবায়ন করার পরামর্শ দিয়েছেন যাতে সেই দেশে অপরাধের পরিমাণ কমে যায়।

নারী অধিকার বিতর্ক
নায়েক তার বক্তব্যে স্ত্রীকে হালকাভাবে প্রহার করার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তার বক্তব্য হল, "একটি পরিবার সামলানোর অধিকাংশ ক্ষেত্রে, পুরুষই নেতৃস্থানীয় হবে। তাই, তার (নিজ স্ত্রীকে প্রহার করার) অধিকারটি আছে কিন্তু তার উচিৎ তার স্ত্রীকে হালকাভাবে প্রহার করা।

সমকামিতা
নায়েক সমকামীদের ব্যাপারে কট্টর দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। তিনি এলজিবিটি সম্প্রদায়কে "পাপে পূর্ণ মানসিক সমস্যায় ভোগা রোগী" হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন যে একমাত্র পর্নোগ্রাফিক চলচ্চিত্র দেখার কারণেই এটি ঘটে। এটা টিভি চ্যানেলগুলোর দোষ। এছাড়াও কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী, তিনি সমকামীদেরকে শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদণ্ড দেয়ার পরামর্শ দেন।

জীবের বিবর্তন
নায়েক ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্বকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন যে, বিবর্তন বিষয়ক তত্ত্ব হল একটি প্রস্তাব মাত্র, এবং এটি খুব বেশি অপ্রমাণিত একটি অনুমান। তার মতে, বেশিরভাগ বিজ্ঞানী এটা সমর্থন করেন এই কারণে যে, এটা বাইবেলের বিরুদ্ধে যায়, এই কারণে নয় যে এটা সত্য। নায়েক দাবি করেন যে, কুরআন বহু বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের ভবিষৎবাণী করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১০ সালে তিনি বলেন যে, কুরআনের কিছু নির্দিষ্ট আয়াতে মাতৃগর্ভে নবজাতক-ভ্রুনের বৃদ্ধি ও ক্রমবিকাশের ধাপগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বর্ণনা করা হয়েছে।
নায়েক দাবি করেন যে, "ডারউইন যা বলেছিলেন তা শুধু একটি তত্ত্ব মাত্র"। এমন কোন বই নেই যা ‘বিবর্তন বিষয়ক ফ্যাক্ট’ বলে – সকল বইই বলে বিবর্তন বিষয়ক তত্ত্ব। তিনি আরও বলেন, "পবিত্র কুরআনের এমন কোন কথা নেই, যা বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত মিথ্যা প্রমাণ করতে পেরেছে। প্রস্তাব কুরআনের বিরুদ্ধে যায় – তত্ত্বসমূহ কুরআনের বিরুদ্ধে যায়। কুরআনে বর্ণিত বৈজ্ঞানিক সত্যগুলোর মধ্যে এমন একটিও নেই, যা প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে গিয়েছে - সেটা হয়তো তত্ত্বের বিরুদ্ধে গিয়ে থাকতে পারে।

গণমাধ্যমের সমালোচনা
জাকির গণমাধ্যমকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার এবং বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ানক অস্ত্র" হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন যা "সাদাকে কালো এবং খলনায়ককে নায়কে পরিণত করে"।
তিনি পরামর্শ দেন যে, এই একই গণমাধ্যমকে আমাদের ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা, ভুল উদ্ধৃতি, ভুল ব্যাখ্যা এবং ভুল প্রদর্শনগুলোকে মুছে দেয়ার জন্য ব্যবহার করা উচিৎ। তিনি দাবি করেন, পশ্চিমা ক্ষমতা এবং গণমাধ্যম একটি দ্বিমুখী-আদর্শের কৌশল অবলবম্বন করে, যারা ইসলামের সম্মানকে খাটো করার জন্য মুসলিমদেরকে চরমপন্থি এবং মৌলবাদী হিসেবে বর্ণনা করে। তিনি বলেন, আজকের দিনে ইসলামের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দ্বারা, যা দিনরাত একটি পরিকল্পিত কৌশলের মাধ্যমে ইসলাম সম্পর্কিত ভুল ধারণাগুলো গলা ফাটিয়ে প্রচার করছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, হোক তা প্রিন্ট, অডিও, ভিডিও, বা অনলাইন, তারা সকলেই একগুচ্ছ কৌশল অবলম্বন করে ইসলামের পরিচিতিকে খাটো করতে সর্বপ্রথম মুসলিম সম্প্রদায়ের কুলঙ্গারদেরকে তুলে আনে এবং এদেরকে এমনভাবে চিত্রায়িত করে যেন এরাই হল মুসলিমদের উদাহরণ। নায়েক আরও দাবি করেন যে গণমাধ্যমের তৃতীয় ও চতুর্থ কৌশল হল, "কুরআন ও সুন্নাহ থেকে কোন কথা তুলে আনা এবং তা ভুলভাবে অনুবাদ করা" এবং "ইসলাম সম্পর্কে এমন কিছু বলে ইসলামের মর্যাদাকে খাটো করা যা আদৌ ইসলামের মধ্যে নেই।
নায়েক আরও বলেন, "কোন মুসলিম মহিলা যদি হিজাব বা বোরকা পড়ে তবে তারা এর ওপর নারীর পশ্চাৎপদতার লেবেল এঁটে দেয়, কিন্তু যদি কোন খ্রিস্টান পাদ্রী মহিলা একই কাজ করে তবে তা বদলে গিয়ে তাদের কাছে সম্মান ও শালীনতার প্রতীক হয়ে দাড়ায়। ৫০ বছরের বৃদ্ধ মুসলিম ১৬ বছরের মেয়েকে তার সম্মতিতে বিয়ে করলে তা হেডলাইনে ছাপা হয়, আর ৫০ বছরের অমুসলিম ৬ বছরের কোন মেয়েকে ধর্ষণ করলে তা সংক্ষিপ্ত সংবাদ বা ফিল্টারে ছাপা হয়। তারা বলে ইসলাম নারীকে অধিকার দেয় না, এবং এটি একটি অযৌক্তিক ধর্ম। তারা ইসলামকে মানবতার সমস্যা হিসেবে চিত্রায়িত করে যেন এটি শুধুই পুরুষদের সকল সমস্যার সমাধান দেয়। একই ঘটনা ঘটে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা শব্দ "মৌলবাদী" এবং "চরম্পন্থী"র ক্ষেত্রে, যেগুলো মূলত পশ্চিমা শব্দ।একজন প্রকৃত মুসলিমকে অবশ্যই সঠিক দিকে চরমপন্থি হতে হবে, চরমভাবে দয়ালু, স্নেহপ্রবন, সহনশীল, সৎ এবং ভদ্র হওয়ার মাধ্যমে। যখন ভারতীয়রা তাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছিল, ব্রিটিশ সরকার তাদেরকে সন্ত্রাসীর পরিচয় দিত; একই কাজ, একই ব্যক্তি, কিন্তু দুটি ভিন্ন পরিচয়। বর্তমানে একই ঘটনা ঘটতেছে মুসলিমদের সাথে।
তিনি চলচ্চিত্রে মুসলিমদের চিত্রায়িত করার সমালোচনা করে বলেন, "ইসলামের ইমেজকে হেয় করার জন্য হলিউডে এত শত শত চলচ্চিত্র বানানো হয়েছে যে, একজন মুসলিমকে "আল্লাহু আকবার" বলতে শুনলেই একজন অমুসলিম ভয় পেয়ে যায়, ভাবে যে সে হয়তো তাকে খুন করতে আসছে। যদি কেউ আসলেই ভালো ইসলামকে জানতে চায়, তাকে ইসলামের বিশুদ্ধ সূত্রকে পড়তে হবে; মহিমান্বিত কুরআন ও হাদিস বাদ দিয়ে এর অনুসারীদের (মুসলিমদের) দিকে তাকানো হল সেই গাড়িচালকের প্রসঙ্গের মত যার বেপরোয়া গাড়িচালনার কারণে দুর্ঘটনা ঘটলেও তার দ্বারা চালানো সর্বশেষ হালনাগাদকৃত মারসিটিজ গাড়িকেই ওই দুর্ঘটনার জন্য দোষ দেয়া হয়। উদাহরণ হিসেবে সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম হলেন সর্বশেষ ও চূড়ান্ত বার্তাবাহক নবী মুহাম্মাদ, তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। এছাড়াও তিনি "সালমান রুশদির মত ইসলামের সমালোচনাকারী মুসলিমদের তুলে এনে তাদেরকে পদক দিয়ে পুরস্কৃত করার জন্য" গণমাধ্যমের সমালোচনা করেন এবং বলেন, "যদি কোন মুসলিম কোন মহৎ কাজ করে, তারা হয়তো তাকে তার কাজের কৃতিত্ব দেয় কিন্তু তার ধর্মকে এড়িয়ে যায় অথবা তার মুসলিম নামকে বদলে দেয়; যেমন প্রাচ্যের অ্যারিস্টটল "আভিসেনা" যার প্রকৃত নাম ছিল "আলী ইবনে সিনা"।

অন্যান্য ধর্ম
স্বধর্মত্যাগ

জাকির বলেছেন, কোন মুসলিম চাইলে ইসলাম থেকে আলাদা হয়ে যেতে পারে, এবং এজন্য তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান নেই। কিন্তু কোন মুসলিম যদি ইসলাম ত্যাগের পর তার নতুন (অ-ইসলামিক) ধর্মবিশ্বাস প্রচার করে এবং ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে, তবে সে বিশ্বাসঘাতক বলে বিবেচিত হবে। জাকির বলেন, ইসলামিক আইন অনুসারে, তার মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত, যেমনটি দেশদ্রোহীর শাস্তি হয়ে থাকে। আরেকটি সূত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে নায়েকের বক্তব্য অনুযায়ী, "ইসলামে স্বধর্মত্যাগীদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের কোন বিধান নেই, "যতক্ষণ না পর্যন্ত" উক্ত ধর্মত্যাগী ব্যক্তি ইসলামী শিক্ষার বিরুদ্ধে কোন মতবাদ প্রচার শুরু করে, যদি সে তা করে তবে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া যাবে।"

ইসলামী রাষ্ট্রে অন্যান্য ধর্ম প্রচার

যদিও তিনি অন্যান্য ধর্মের মানুষদের উৎসাহিত করে থাকেন যেন তারা তাদের দেশে মুসলিমদেরকে স্বাধীনভাবে ধর্মপ্রচারের সুযোগ দেয়, নায়েক বলেন যে, একটি ইসলামী রাষ্ট্রে অন্যান্য ধর্মের ধর্মপ্রচার অবশ্যই নিষিদ্ধ করা উচিৎ কারণ (তিনি বিশ্বাস করেন) অন্যান্য ধর্মগুলো ভুল, তাই তাদের প্রচারণাও ভুল, এটা এরকম যে কোন অংকের শিক্ষক কাওকে ২+২=৪ এর পরিবর্তে ২+২=৩ শেখাচ্ছেন। একইভাবে, নায়েক বলেন যে, "গির্জা বা মন্দিরের ভবন নির্মাণের ব্যপারে, কিভাবে আমরা তার অনুমতি দিতে পারি যখন কিনা তাদের ধর্মটাই ভুল এবং তাদের উপাসনাটিও ভুল?" মুসলিম বিশ্বে খ্রিস্টান মিশনারিগুলোর ধর্মপ্রচার কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে নায়েক বলেন যে, "মিশনারিগুলো মুসলিমদের দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার জন্য বাইবেলের বানীগুলো আরবি ক্যালিগ্রাফিতে লেখে, যেমন "ঈশ্বর হলেন প্রেম।" আমরা পিস টিভিতে উদাহরণস্বরূপ এমন প্রতারণার কৌশল ব্যবহার করি না।

জিহাদ
গাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া এক বক্তৃতায়, জাকির বিশ্বজুড়ে জিহাদের নামে বর্বর কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেন, যেখানে নিরপরাধ মানুষ মারা যায় এবং বলেন যে, “মুসলিমগণ ও অমুসলিমগণ উভয়ই জিহাদকে ভুলভাবে বুঝে থাকে, জিহাদ অর্থ সমাজকে আরও ভালো করার জন্য চেষ্টা ও সংগ্রাম করা। জিহাদের সবচেয়ে ভালো রূপ হল কুরআনের শিক্ষা ব্যবহার করে অমুসলিমদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা; নবী (সা) ও মহান আল্লাহর কাছে, ইসলাম অর্থ হল শান্তি।” তিনি আরও বলেন, “কোন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা, হোক সে মুসলিম বা অমুসলিম, তা ইসলামে নিষিদ্ধ। কিন্তু পশ্চিমা ক্ষমতা ও তাদের গণমাধ্যম একটি পরস্পরবিরোধী আদর্শিক ভূমিকা পালন করে, যারা মুসলিমদের চরমপন্থি ও মৌলবাদী হিসেবে বর্ণনা করে। এমনকি ইসলামী জিহাদেও,
এটা প্রথম ব্যবহৃত হয় ক্রুসেডারদের দ্বারা যারা খ্রিস্টধর্মের নামে লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ হত্যা করেছিল। জিহাদ শব্দের প্রকৃত অর্থ হল চেষ্টা ও সংগ্রাম করা: কারো নিজস্ব কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে, সমাজকে আরও ভালো করে গড়ে তুলতে, যুদ্ধক্ষেত্রে নিজের আত্মরক্ষা করতে এবং নির্যাতন-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে।"

সেপ্টেম্বর ১১-র হামলা ও ওসামা বিন লাদেন
একটি ইউটিউব ভিডিওতে ওসামা বিন লাদেন সম্পকে জাকির বলেন যে, তিনি বিন লাদেনকে ব্যক্তিগত ভাবে চেনেনও না, তাদের কখনও সাক্ষাৎ হয়নি। যদি বিবিসি, সিএনএন দেখে যদি লাদেন সম্পর্কে বলতে হয়, তাহলে তাকে বলতেই হবে যে লাদেন একজন সন্ত্রাসী। কিন্তু কুরআন বলছে যে কোনো সংবাদ পেলে তা প্রচারের আগে যাচাই করে নিতে। তাই, তিনি তাকে দোষারোপ করতে পারেন না। তিনি আরো বলেন, যদি বিন লাদেন সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী আমেরিকাকে ভয় দেখিয়ে থাকে, ৩১ জুলাই ২০০৮ সালে পিস টিভিতে দেওয়া লেকচারে জাকির নাইন ইলেভেন সম্বন্ধে মন্তব্য করেন, ‘এটি একটি সাজানো নাটক,


সন্ত্রাসবাদ, হত্যাকাণ্ড ও আত্মঘাতী বোমাহামলা
জাকিরের মতে ইসলামী সন্ত্রাসবাদ মিডিয়ার (প্রচারমাধ্যমের) সৃষ্টি। তিনি বলেন, আমি সবসময়ই সন্ত্রাসবাদকে দোষারোপ করি, কারণ মহিমান্বিত কোরআন অনুসারে, কেউ যদি একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করো তবে সে যেনো পুরো মানবজাতিকে হত্যা করলো।" তিনি হিটলারকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, "সে মুসলিম না হয়েও বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী কারণ সে প্রায় ষাট লক্ষ ইহুদিকে হত্যা করেছিল।"
নায়েককে হত্যা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "কুরআন বলে - কেউ যদি নিরপরাধ একটি মানুষকে হত্যা করে, হোক সে মুসলিম বা অমুসলিম, এটা এমন যে সে পুরো মানবতাকে হত্যা করলো। অতএব কিভাবে একজন মুসলিম কোন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করতে পারে? তবে, তিনি বলেন কোন ব্যক্তিকে হত্যা করা বৈধ হবে "যদি সে কাওকে হত্যা করে…অথবা কোন স্থানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তিনি আরও দাবি করেন, "ইসলামের সমালোচকগণ (কুরআনের) ৫/৯ নং আয়াতটিকে ইসলামকে হেয় করার জন্য অপ্রাসঙ্গিকভাবে উদ্ধৃত করে যাতে বলা হয়েছেঃ "যেখানেই একজন অমুসলিমকে খুঁজে পাও, তাকে হত্যা করো।" যদিও এটি ছিল যুদ্ধের ময়দানে একটি নির্দেশ, এবং ইসলাম সর্বদা যুদ্ধের সময় তুলনামূলক উত্তম সিদ্ধান্ত হিসেবে শান্তিকে সমর্থন করে।
স্কাইপের মাধ্যমে একটি প্রেস কনফারেন্সে, জাকির নায়েককে আত্মঘাতী বোমাহামলা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যে, ইসলামে এর অনুমতি আছে, এবং আরও বলেন "নিরপরাধ মানুষকে যদি হত্যা করা হয় তবে এটি হারাম। কিন্তু আত্মঘাতী বোমাহামলা যদি যুদ্ধকৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয় তবে এটি বৈধ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে, জাপান যুদ্ধকৌশল হিসেবে আত্মঘাতী বোমাহামলাকে ব্যবহার করেছিল।

আইসিস ISIS
২০১৬-র জুলাইয়ে এক ভিডিও বার্তায়, নায়েক ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়াকে "অ্যান্টি-ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া" বলে সম্বোধন করেন। এবং বলেন যে, ইসলামের শত্রুরা আইসিসের প্রচার করছে। তিনি আরও বলেন যে, "কুরআন বলে - কেউ যদি নিরপরাধ একটি মানুষকে হত্যা করে, হোক সে মুসলিম বা অমুসলিম, এটা এমন যে সে পুরো মানবতাকে হত্যা করলো। অতএব কিভাবে একজন মুসলিম কোন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করতে পারে? .. আমাদের ISIS বলা উচিৎ না, আমাদের বলা উচিৎ AISIS। কারণ এটা অ্যান্টি-ইসলামিক বা ইসলাম বিরোধী। আমি বিশ্বের সকল মুসলিমদের এবং মুসলিম গণমাধ্যমগুলোকে অনুরোধ করছি যে, দয়া করে ইসলামের শত্রুদেরকে ইসলামকে আক্রমণের ব্যাপারে সাহায্য করবেন না।" তিনি আরও বলেন যে, আপনি যদি ভালো করে খতিয়ে দেখেন তাহলে আপনি জানতে পারবেন যে আমি পুরোপুরি সন্ত্রাসবাদের বিপক্ষে। আমি নিরপরাধ মানুষ হত্যার পুরোপুরি বিপক্ষে। জাকির বলেন যে, এই 0গ্রুপের কাজকর্মকে কঠোরভাবে নিন্দা করি

অভ্যর্থনা, পুরষ্কার, উপাধি এবং সম্মাননা
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ‘‘সবচাইতে শক্তিশালী ১০০ ভারতীয় ২০১০’’ তালিকায় জাকিরের অবস্থান ৮৯তম। ২০০৯ সালে তার অবস্থান ছিলো ৮২তম। প্রাভেন স্বামীতে জাকিরকে বলা হয়, ভারতে সবচাইতে বেশি প্রভাবশালী সালাফি ব্যাখ্যাকারী।

২০১৪ অনারারি ডক্টরেট (ডক্টর অব হিউম্যান লেটারস) গাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
২০১৫ বাদশাহ ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার সৌদি আরব


সমালোচনা
মুসলিম বিশ্বে জনপ্রিয় হলেও জাকির নায়েক তার বক্তব্য ও মতের জন্য বিভিন্ন স্থানে সমালোচিত হয়েছেন। তিনি বলেন, 'বিন লাদেন যদি যুক্তরাষ্ট্রের মত সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে সন্ত্রাসের মাধ্যমে হুমকির সম্মুখীন করে তাহলে তিনি বিন লাদেনের পক্ষে'; 'ইসলামের শত্রু বা যুক্তরাষ্ট্রকে কোন উপায়ে হুমকির সম্মুখীন করাকে সন্ত্রাস' বলা হলে তিনি 'প্রত্যেক মুসলিমেরই সন্ত্রাসী হওয়া উচিত' বলে মন্তব্য করেন।
তিনি শিয়া ও সুন্নিদের বিরোধ বিষয়ে কথা বলেন এবং খলিফা ইয়াজিদের নামের পর রাদিয়াল্লাহ তা’আলা (আল্লাহ্‌ তাদের অনুগ্রহ করুন) বলেন, এতে বহু মুসলমান দ্বারা তিনি ঘৃণিত হন; বিশেষ করে শিয়াদের দ্বারা।

তিনি আরও বলেন, কারাবালার যুদ্ধ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত; উক্ত মন্তব্যটিও যথেষ্ট সমালোচিত হয়েছিল।
ভারতীয় ওলামাদের অনেক সদস্য নায়েককে কঠিনভাবে অপছন্দ করেন কারণ নায়েক তাদের দেয়া ব্যাখ্যাকে এড়িয়ে যায় এবং সে বলে যে, যে কেউ কুরআনের ব্যাখ্যা করতে ওসামা বিন লাদেনকে ‘‘ইসলামের সৈন্য’’ বলায় আলী সিনা এবং খালিদ আহমেদ নায়েকের সমালোচনা করেন। তারা বলেন যে, জাকির আল-কায়দাকে পরোক্ষ ভাবে সমর্থন করছেন। ফেব্রুয়ারী ২০১১তে, তিনি ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ‘অক্সফোর্ড ইউনিয়ন’কে পত্র লেখেন।

ভারতীয় সাংবাদিক শোয়াইব দানিয়াল জাকিরের "মার্কিনিরা স্বেচ্ছায় নিজেদের মধ্যে স্ত্রী বিনিময় করে কারণ তারা শুকর খায়, যা নিজেও স্বয়ং স্ত্রী বিনিময় করে" বক্তব্যটির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি আরও তুলে ধরেন যে, "ইসলাম পুরুষকে একাধিক নারীকে বিয়ের অনুমতি দেয় কারণ "যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশী" " জাকিরের এই বক্তব্যটি যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারির সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।

২০১২ সালে ভারতীয় সরকার জাকিরের পিস টিভির সম্প্রচার নিষিদ্ধ করে এবং ভারতীয় স্যাটেলাইট সরবরাহকগণ তার টেলিভিশন চ্যানেল "পিস টিভি"র সম্প্রচারে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

২০১৬ সালে ঢাকায় সন্ত্রাসী আক্রমণের ৫ হামলাকারীর মাঝে একজন ফেসবুকে জাকির নায়েকের অনুসারী ছিলেন বলে বাংলাদেশী পত্রিকা ডেইলি স্টারে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর, ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, "জাকির নায়েকের বক্তব্য আমাদের জন্য একটি নজরদারির বিষয়। আমাদের এজেন্সিগুলো এর উপর কাজ করছে। এর ২ দিন পর মহারাষ্ট্র সরকারের সিআইডি বিভাগ তদন্তের ফলাফল হিসেবে জানায় যে, তারা জাকির নায়েকের বক্তৃতায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কোন প্রমাণ খুজে পায় নি।
ডেইলি স্টার উক্ত বিতর্ক নিয়ে জাকির নায়েকের নিকট ক্ষমা চেয়ে মন্তব্য করে যে তারা কখনোই নায়েককে উক্ত হামলার জন্য দোষারোপ করে নি।

পত্রিকাটি বলে যে, এটি শুধুমাত্র এটাই তুলে ধরেছে যে, কিভাবে তরুণরা তার বক্তব্যকে ভুলভাবে বুঝছে। তবে, এঘটনার পরপরই বাংলাদেশ সরকার নায়েকের পিস টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এর কারণ হিসেবে বলেন যে "পিস টিভি মুসলিম সমাজ, কুরআন, সুন্নাহ, হাদিস, বাংলাদেশের সংবিধান, আমাদের সংস্কৃতি, আচার-প্রথা ও রীতিনীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
দারুম উলুমের সহ সভাপতি আব্দুল খালিক মাদ্রাসি জাকিরের সমর্থনে বলেন: "জাকির নায়েকের সাথে আমাদের অনেক মতপার্থক্য রয়েছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী সে একজন ইসলামী পণ্ডিত হিসেবে স্বীকৃত। আমরা কোনভাবেই বিশ্বাস করি না যে সে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।"


বক্তৃতা ও বইসমুহ
ডঃ জাকির নায়েক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রেখেছেন। তার বক্তৃতায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের আমন্ত্রিত ও অনামন্ত্রিত শ্রোতাগণ অংশগ্রহণ করেন। তার উল্লেখযোগ্য বক্তৃতা পরবর্তীতে মূল ইংরেজিসহ একাধিক ভাষায় বই হিসাবে প্রকাশিত হয়েছে। ২০০৭ সালে দার- উস- সালাম প্রকাশনী (সৌদি আরব) জাকির নায়েকের দুইটি বই প্রকাশ করে। যথাঃ ‘দি কনসেপ্ট অফ গড ইন মেজর রেলিজিওনস’ (জনপ্রিয় ধর্ম গুলোতে ঈশ্বরের ধারণা)এবং ‘দি কুরআন অ্যান্ড মর্ডান সায়েন্সঃ কম্পিটেবল অর ইনকম্পিটেবল’ (কুরআন এবং আধুনিক বিজ্ঞানঃ সাদৃশ্যপূর্ণ নাকি বৈসাদৃশ্যপূর্ণ) । বাংলাদেশে একাধিক প্রকাশনী তাঁর বইসমূহ বাংলায় অনূবাদ করে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করেছে
• ইসলাম বিষয়ে অমুসলিমদের কিছু সাধারণ প্রশ্নের জবাব।
• কোর'আন ও আধুনিক বিজ্ঞান।
• কোর'আন কি ঈশ্বরের বাণী?
• আমিষ খাদ্য কি মানুষের পক্ষে ক্ষতিকর?
• বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ।
• প্রধান প্রধান ধর্মে ঈশ্বরের অস্তিত্ব।
• বিজ্ঞানের আলোকে কোর'আন ও বাইবেল।
• হিন্দু ও ইসলাম ধর্মের অন্তরনিহিত সাদৃশ্য।
• সন্ত্রাসবাদ ও জিহাদ।
• ইদলামের কেন্দ্রবিন্দু।
• সন্ত্রাসবাদ কি কেবল মুসলিমদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?
• প্রশ্নোত্তোরে ইসলামে নারীর অধিকার।
• কেন ইসলাম গ্রহণ করছে পশ্চিমারা?
• ইসলামে নারীর অধিকার আধুনিক নাকি সেকেলে?
• সুদমুক্ত অর্থনীতি।
• ইসলাম ও খ্রিস্টধর্মের সাদৃশ্য।
• বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ সমুহের আলোকে হিন্দুধর্ম ও ইসলাম।
• আলকোর'আন বুঝে পড়া উচিত।
• রসুলুল্লাহর নামায(সালাত)।
• চাঁদ ও কুর'আন।
• মিডিয়া ও ইসলাম।
• সুন্নত ও বিজ্ঞান।
• পোশাকের নিয়মাবলী।

#
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:০০
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×