অনলাইনে জগতে ঠাটাইয়া থাপ্পর মারা,পুটু মারা,জিহাদ করা ইত্যাদি কাজগুলো কোন রকম পরিশ্রম ছাড়াই কেবল কিবোর্ড চাইপাই করা যায় ।বাস্তব জীবনে এরাই হয়ত তেলাপোকার ভয়ে সিলিং ধইরা ঝুলে থাকে ।সবার কথা বলছি না কিছু কিছু মানুষের ফেসবুকিয় জিহাদ আর বাস্তব জীবনের কর্মকান্ড দেইখা তাই মনে হয় ।একটা গল্প বলি :এক লোক মাথায় গুলি খেয়ে মরছে,চারিদিকে কান্নাকাটি,হাহাকার আর আর্তনাদ ।এর মধ্যে আসল এক শুভাকাঙ্খি ।এসেই মৃত মানুষটির পুত্রের হাত ধরে বলল "বাবা কাইন্দো না তোমার বাপের কপাল দেখছ একটুর জন্য চোখটা বাইচ্চা গেছে !এমন শুভাখানকি আমাদের আশপাশেই শিকড় গজিয়ে বসে আছে ।এদের থেকে সাবধান থাকবেন ।
শাহবাগ আন্দোলনের পক্ষে বিপক্ষে কোটি কোটি শব্দ খরচ করা হয়েছে ।লাভের গুড় গেছে মোবাইল কম্পানীর ঘরে !পক্ষের মধ্যে আবার ভাগ তৈরি হয়েছে ।কেউ হোমিওপ্যাথিক ঔষধের পক্ষে কেউ ডাইরেক্ট এন্টিবায়োটিক এর পক্ষে ।বিকেলে বলছিলাম, যেহেতু স্বর্গ নরকের মধ্যে কোন নো ম্যানস ল্যান্ড নাই তাই ন্যায় অন্যায়ের মধ্যেও কোন নিরপেক্ষ অবস্থান নাই ।তাই নিজের অবস্থান পরিস্কার করার প্রয়োজন বোধ করছি ।আমি ধীরে চলো নীতিতে বিশ্বাসী ।
কেন ?
প্রজন্ম চত্ত্বরের বেশীর ভাগ প্রতিবাদকারী হল একেবারে সাধারন মানুষ ।যাদের গায়ে কোন রাজনৈতিক লেবেল লাগানো নাই ।সিংহভাগই স্কুল কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুন যুবক যুবতী ।এরা কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষ হয়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে আসেনি ।এসেছে কেবল তাদের চেতনার জায়গা থেকে প্রতিবাদ জানাতে ।৩০ লাখ শহীদের এই বাংলায় তারা আর একমুহুর্ত রাজাকারদের দেখতে চায় না ।এরা একেবারেই সাধারন মানুষ ।এরা কখনও মিছিল মিটিং পিকেটিং হামলা মারামারির মধ্যে জড়ায়নি ।যে যুদ্ধে তারা নেমেছে তাতে জয়ী হওয়াটা অনেক দুরের পথ । প্রতিপক্ষ কেবল জামাত শিবির নয় আরো অনেক যা আস্তে আস্তে প্রকাশিত হচ্ছে ।একটি সামান্য মানববন্ধন থেকে যখন লক্ষ মানুষের জনসমুদ্র তৈরি হল তখনই বুঝলাম আর ফিরে যাবার পথ নাই ।বাঙ্গালী তাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে এবার তা বাস্তাবায়নের কাজ আমাদের ।হুট করে কোন কঠোর কর্মসুচী দিলে তা পালন করার সামর্থ আমাদের আছে কিনা সেটা আগে বুঝতে হবে ।আমরা তো জামাত বি এন পি না যে গুলশান অফিসে বসে হরতালের ডাক দিলাম কাওরান বাজারে কিছু বাস পুড়িয়ে দিলাম,পরদিন হরতাল সফল হয়ে গেল ।জনতাই আমাদের একমাত্র অস্ত্র, স্লোগানই আমাদের প্রতিবাদের হাতিয়ার ।আচ্ছা ধরুন প্রধানমন্ত্রীর অফিস ঘেরাও এর কর্মসুচী দেওয়া হলো ।এতদিন পুলিশকে ফুল দিয়েছেন সেই পুলিশ কিন্তু আমাদের তখন ছেড়ে দেবে না ।আর জামাত শিবিরের গুপ্তহত্যাকারীরা তো আছেই ।ঘেরাও করতে সেদিন কতজন কে রাস্তায় পাবেন ?আচ্ছা ধরে নিলাম লক্ষ মানুষ একত্রিত হবে ।প্রধান মন্ত্রীর অফিস ঘেরাও করতে যাব আমরা ।সেদিন পুলিশ নিশ্চয়ই আমাদের জন্য ফুল নিয়ে বসে থাকবে না ।এত বড় মুভমেন্ট সামলাতে নিশ্চিত গুলি করা হবে ।হয়ত আমরা দু দশজন মারা যাব ।প্রতিবাদে ফেটে পড়বে বাংলাদেশ ।সত্যি বলছি আর ক্ষমতায় থাকা সম্ভব হবে না এই সরকারের।পতন ঘটবে নতুন সরকার আসবে ।কিন্তু তাতে তো আমাদের আলটিমেট অবজেকটিভ তো পুরন হবে না ।শহীদের সংখ্যাই কেবল বাড়বে । নিশ্চয়ই আমরা নিরীহ ছাত্রের উপর গুলি করা আম্লিগকে ভোট দেব না ।ধরুন মন্দের ভালো বিম্পিকে পছন্দ করলাম।এবার আপনিই বলুন এই বি এন পি কি কোনদিন রাজাকারদের বিচার করবে ।এই বিম্পি সরকারই কিন্তু জাহানারা ইমামকে রাস্ট্রদ্রোহী বানিয়েছিল ।আচ্ছা বলুন তো,শাহবাগে লক্ষ মানুষের স্রোত যে আজ হাজারে পরিনত হয়েছে এর কারন কি ? আপনার কি মনে হয় বাকী লোকগুলো তাদের স্বাধীনতার চেতনা হারিয়ে কফির কাপে চুমুক দিয়ে বসে আছে ?না,তারা ঠিকই আছে ।প্রয়োজন মতো আবার স্লোগান তুলবে।তার চেয়ে কি এই ভালো নয়,আমরা একটু একটু করে সংগঠিত হই,ক্রমান্বয়ে আন্দোলকে কঠোর করে সরকারকে সবসময় চাপের মধ্যে রাখি তারপর যে কোন সময় সুযোগ বুঝে শেষ আঘাত হানবো ।যাতে সরকার বাধ্য হয় আমাদের দাবী মেনে নিতে ।
সবশেষ একটা কথা বলি আমাদের এই বিভক্তি দেইখা ছাগুদের আনন্দে বোগল বাজানোর কিছু নাই ।সবার আখেরী চয়েজ কিন্তু তুমাগো রাজনীতি শেষ করা ।খালি ধরনটা ভিন্ন ।কেউ তোমাগো পুটু মাইরা শেষ করতে চায় কেউ তোমাগো অন্ডকোষ চাইপা শেষ করতে চায় ।ফলাফল কিন্তু একই ।
শহীদ রুমী স্কোয়াডের প্রত্যেকটা অনশনকারী যোদ্ধাকে জানাই স্যালুট !তোমরা আছো বলেই এখনও স্বপ্ন দেখতে সাহস পাই !
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:২০