somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবশেষে বাচ্চাদের দেখা পেয়েছি

০৩ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে প্রায় চারমাস আগে দুইটি খরগোশ উপহার দিয়েছিলাম। সেই খরগোশ পেয়ে তার সেকি আনন্দ। খরগোশের জন্য ঘর বানানো হল। সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে সে নিজের হাতে তাদের খাবার দিয়ে যায়। দারুয়ান মাইকেলকে খুব করে বলে যায় যাতে একটু পর পর তাদের খাবার দেয়। স্কুল থেকে এসে গাড়ি থেকে নেমেই আগে তাদের কোলে নিয়ে আদর করে। সন্ধ্যার আগে বাসার নিচে নেমেই খরগোশকে ঘর থেকে বের করে আমাদের সবজি বাগানে নিয়ে যায়। তাদের সাথে ঘন্টা খানেক দৌড়াদৌড়ি করে, খরগোশ মনের আনন্দে ঘাস খায়,লাফায়। তারপর অন্ধকার হওয়ার আগেই খরগোশ নিজেই তাদের ঘরে চলে আসে।

মাস খানেক আগে মাইকেল ফোন দিয়ে বলে খরগোশের বাচ্চা হয়েছে। আকিফ দুপুরের খাবার খাচ্ছে তখন। খাবার ফেলে দৌড়ে নিচে নেমে গেল বাচ্চা দেখতে। ছবি তুলে নিয়ে এল, তার খুশি তখন আরো বেড়ে গেল। আমি বাচ্চা দেখতে যায়নি। পরদিন সকালে আকিফকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার আগে বাচ্চা দেখতে গেলাম, কিন্তু খরগোশের ঘরে বাচ্চা নেই। সবাই মিলে অনেক খুঁজেও বাচ্চা পাইনি। বাচ্চা কোথায় গেল কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না। আকিফের স্কুলের সময় হয়ে গেল তাই তাকে স্কুলে নামাতে গেলাম, বললাম যে ফিরে এসে বাচ্চা খুঁজে বের করব।




স্কুল থেকে এসেই শুরু হল বাচ্চা খোঁজার অভিযান। আমার পুরা বাহিনী বাসার সমস্ত কম্পাউন্ডে বাচ্চা খুঁজে বেড়াচ্ছে কিন্তু কিসের কি, বাচ্চার পাত্তাও নেই। মাইকেল নাকি অনেক আগে খরগোশের ঘরে তাদের গর্ত খুঁড়তে দেখেছিল, কিন্তু এখন সেই গর্তও নাই। মাইকেল কি মনে করে তাদের ঘরের যেখানে গর্ত ছিল সেখানে মাটি সরাতে লাগলো। কিছু মাটি সরানোর পর গর্তের মুখ বের হল, মাইকেল আরো বেশি করে মাটি সরিয়ে দেখে অনেক বড় গর্ত, আর উঁকি দিয়ে দেখে ভেতরে বাচ্চা। আমি বাচ্চা দেখার আগেই মা আর বাবা খরগোশ মিলে মাইকেলের হাতের উপর বসেই তাদের পা দিয়ে আবার গর্ত ঢেকে দিল। গর্তের ভেতর কয়টা বাচ্চা, কত বড়, দেখতে কেমন কিছুই জানা হলনা। খরগোশ খাবার খেয়ে গর্তের মুখের কাছেই শুয়ে থাকে, পাহারা দেয়, যাতে আমরা গর্তের মুখ খুলে বাচ্চা বের করতে না পারি।





সেই যে গর্তের মুখ বন্ধ করেছে বাবা, মা আর খুলে না। তারা খাবার খায়, বাইরে এসে বাগানে ঘাস খায় কিন্তু বাচ্চার কোন খবর নাই। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি কখন বাচ্চা দেখতে পাব। অবশেষে অনেকদিন পর দেখি খরগোশ নিজেই গর্তের মুখ খুলে দিয়েছে আর বাচ্চারা গর্তের মুখে বসে থাকে, আমাদের দেখলেই আবার গর্তের ভেতর চলে যায়।কয়টা বাচ্চা আছে তা আর জানা হয়না।একদিন দেখি সব বাচ্চা গর্তের বাইরে চলে এসেছে, সবাই মিলে খাবার খাচ্ছে। মোট তিনটা বাচ্চা। এখন তারা আর গর্তের ভেতর যায় না, আমাদের দেখে ভয়ও পায়না। এখন আমাদের খরগোশের ৫ জনের বিশাল পরিবার।



সামান্য পশুও যেখানে নিজের বাচ্চাকে বাইরের সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষার জন্য সর্তক থাকে আর সেখানে আমরা মানুষ হয়েও নিজের সন্তানকে নিজেই হত্যা করি।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৩৩
৩০টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×