বার্বিকিউ করাটা আমার কাছে এত সহজ না, একটা প্রস্তুতির ব্যাপার আছে। আর আমাদের বাসাতেই যেহেতু মিনি বাংলাদেশ তাই প্রস্তুতিও বড় করেই নিতে হয়। মাঝে মাঝেই আমরা শনিবার রাতে আয়োজন করি বার্বিকিউর। রাত ১০টার পর ধীরে সুস্থ্যে বার্বিকিউ করা শুরু করি,আড্ডা আর খাওয়া দাওয়া করতে করতে রাত ২/৩টা বেজে যায়। শনি, রবি দুইদিন সাপ্তাহিক বন্ধ বলে আমরা এই শনিবারই ঘুরাঘুরির জন্য, কেনাকাটার জন্য অথবা বাসায় কোন অনুষ্ঠান করার জন্য, বাইরে দাওয়াতে যাওয়ার জন্য বরাদ্দ রাখি।
এখানেই আয়োজন করি আমাদের বার্বিকিউ করার। খোলা বারান্দায় বসে আড্ডা দিতে আর গল্প করতে করতে কখন যে সময় পার হয়ে যায় টেরই পাওয়া যায় না। বাইরে প্রচুর বৃষ্টি তাই ভেতরে বসে বৃষ্টি দেখা আর বার্বিকিউ করা দুটোই হয়ে গেল।
আমাদের বাসায় আরো অনেক দেশি ভাই আছে। তাদের দায়িত্ব দিলাম চিকেন কিনে মেরিনেট করার।মেরিনেট সব সময় আমিই করি কিন্তু বাইরে আমাদের কাজ ছিল, আর কখন ফিরবো তার ঠিক নাই তাই তাদের দায়িত্ব দিলাম। মেরিনেট করতে কি কি লাগবে তাও বলে দিলাম।
আমরা দুপুরের দিকে চলে গেলাম বাইরে কেনাকাটা ছিল কিছু তা করতে। বাইরে কেনাকাটা করতে করতেই অনেক রাত। বাসায় ফেরার পথেই শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি। বৃষ্টি নিয়েই বাসায় ফিরলাম রাত ১০টায়। আমাদের বাসার অন্য দেশি ভাইয়েরা বললো যদি আমাদের ক্লান্ত লাগে তাহলে আজকের প্রোগ্রাম বাদ দিবে। আমি বললাম প্রোগ্রাম বাতিলের কিছু নাই, যা সিদ্ধান্ত তাই হবে। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে রাত ১১ টায় শুরু করলাম আমাদের বার্বিকিউ করা।
যখন বার্বিকিউ শুরু করা হল দেখলাম যে মেরিনেট তারা ভালোই করেছে কিন্তু চিকেনের চামড়া ছিলে ফেলেছে। বললাম সব সময় তো দেখেন চামড়া ফেলিনা আর আজকে আপনাদের দায়িত্ব দিলাম কিন্তু এটাও মনে রাখতে পারেননি।যাক তাও মেরেনেট করতে ভুলেনি এতেই আমরা খুশি। বাইরে ঝুম বৃষ্টিতেই শুরু হল আমাদের বার্বিকিউ করার কাজ। বারান্দার পাশে চেয়ার পেতে গল্প করতে করতে আর বৃষ্টি দেখতে দেখতেই হয়ে গেল আমাদের বার্বিকিউ করা শেষ, সাথে ছিল পুরনো দিনের বাংলা গান। এর ফাঁকে আমি কিছু নান রুটি আর আমার স্পেশাল পুদিনা আর টক দইয়ের একটা সস বানিয়ে নিলাম। খেতে খেতে রাত তিনটা। তাতে কি, সকালে তো আর অফিস যেতে হবেনা কাউকে।
আসলে খাওয়াটাই আসল না, মাঝেমাঝে একটু পরিবর্তন, আড্ডা,গল্পের দরকার আছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:০৭