সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমংগলে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের পাশেই পাঁচ তারকা মানের ‘’গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট এন্ড গলফ’’গড়ে উঠেছে। যার যাত্রা শুরু হয়েছে ২০১৩ সালের ২৫শে ডিসেম্বর। যাত্রার প্রথম বছরেই এই গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট এন্ড গলফ ‘’ওয়ার্ল্ড লাক্সারি হোটেল এওয়ার্ড ২০১৪’’ অর্জন করে ফেলেছে।
এতদিন শুধু ‘’গ্র্যান্ড সুলতান হোটেল আর গলফ’’ এর নাম শুনেছি, বিভিন্ন ছবি দেখেছি। বিভিন্ন দেশে তো কত রকমের হোটেলে থাকার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, করছি কিন্তু নিজের দেশের এই হোটেলে থাকার এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে চাইনি, তাই দেশে আসার পর একদিন হাজির হয়ে গেলাম সুলতানের দরবারে।
সুলতানের দরবারে প্রবেশের রাস্তা
সুলতানের দরবারে প্রবেশের রাস্তা
হোটেল লবি
হোটেল লবি
হোটেল রুমে এসে জানালার পর্দা সরিয়ে হোটেলের পেছনে দিকের এই সৌন্দর্য মন কাড়বেই। চারদিকে যেন সবুজের হাতছানি
আমরা কত দেশ ঘুরি, কতকিছু দেখি কিন্তু মা বাবাকে কিছুই দেখাতে পারিনা, তাই আমাদের সফর সঙ্গী হিসাবে মা বাবাকে অনেকটা জোর করেই রাজি করিয়েছি। গ্র্যান্ড সুলতানে প্রবেশ করার পর মনে হচ্ছিল যেন অন্য এক জগতে প্রবেশ করেছি। বিভিন্ন তারকা মানের হোটেলে থাকার অভিজ্ঞতা থাকলেও এই গ্র্যান্ড সুলতানের আলাদা যা ভালো লেগেছে তা হচ্ছে এই হোটেলের বাইরের বিশাল ক্যাম্পাস। হোটেলের বাইরের সামনে, পেছনে, ডানে, বামে বিশাল জায়গা,যেখানে চা বাগান থেকে শুরু করে হিলি প্যাড পর্যন্ত করা আছে। চারদিকে সবুজ আর সবুজ, সব কিছু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। নিজের দেশে এত উন্নত মানের আর এত সুযোগ সুবিধাসহ এই হোটেল দেখে আসলেই অনেক বেশি আনন্দিত ও গর্ব অনুভব করেছি। অনেক বিদেশী পর্যটকও দেখলাম আছে।
রুম থেকে তোলা বাইরের ভিউ। এই পুরা এলাকা গ্র্যান্ড সুলতানের
এই হোটেলে সবচেয়ে বড় যে সুবিধা আছে তা হচ্ছে রুমের ভাড়ার সাথেই তিন বেলার ব্যুফে খাবার ব্যবস্থা। যে আমি আর কোন দেশের হোটেলে পাইনি, শুধুমাত্র সকালের নাস্তাটা কমপ্লিমেন্টারি হিসাবে অন্য দেশের হোটেলে পেয়েছি।
দেশের ঐতিহ্যের সাথে মিল রেখে আছে নানা রকম পিঠা পুলি
গ্র্যান্ড সুলতান প্রথম বাংলাদেশী ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত পাঁচ তারকা মানের হোটেল। ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর সাউথ আফ্রিকার কেপটাউনে ‘’বিশ্বের সেরা গলফ রিসোর্ট’’ হিসেবে এই গ্র্যান্ড সুলতানকে আন্তর্জাতিক এওয়ার্ড প্রদান করা হয়। ১৩.২ একর জায়গার উপর সকল সুবিধাসহ ৮তলা এই ভবনে রয়েছে ১৩৫টি কক্ষ। এরমধ্যে ৪৫টি কিং আর ৪৭টি কুইন সাইজ কক্ষ রয়েছে। এখানে আছে একটি নাইট হোল গলফ কোর্স, লং টেনিস, ব্যাডমিন্টন, বিলিয়ার্ড, টেবিল টেনিস ও বাস্কেট বল কোর্ট।বাচ্চাদের জন্য আছে আলাদা খেলার জোন। আরো আছে ৩টি সুইমিংপুল, আছে মুভি থিয়েটার, যেখানে একসাথে ৪৪জন একসাথে বসে মুভি দেখতে পারে। আছে একটি বিশাল লাইব্রেরি।
এবার একটু হোটেলের আশেপাশে ঘুরা যাক
বাচ্চাদের খেলার জায়গা
সিঁড়ি বেয়ে উঠে যাওয়া যায় পাহাড়ের উপর, উপর থেকে তাকালে চতুর্দিকে শুধু চা বাগান আর পাহাড় দেখা যায়।
হোটেলের সামনে লেকের মত করা আছে, তার উপর ব্রিজ।
লেকের উপর কাঠের ব্রিজ
আছে দোলনার ব্যবস্থা
হোটেলের ভেতর আছে বিশাল লাইব্রেরী
এখানে বসে কফি হাতে যারা বই পড়তে ভালোবাসেন তাদের সময় চলে যাবে।
গ্র্যান্ড সুলতানে থেকে এবং এর ক্যাম্পাসে ঘুরে ফিরে বার বার এটাই মনে হচ্ছিল আমার দেশও পিছিয়ে নেই।
উপরের দুইটা ছবি নেট থেকে নিয়েছি আর বাকিসব আমার তোলা
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:০৩