somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৪র্থ ব্লগ দিবস : ব্যবচ্ছেদ ।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



( একটি বিলম্বিত পোষ্ট )

কথা ছিলো বেলা ৫টাতে মিলবে সবাই । ধানমন্ডি ৩২ নং থেকে ৪ টায় যাত্রা শুরু করে এ্যালিফ্যান্ট রোডের বাটার মোড়ে পৌঁছুতেই দেখি আর বারো মিনিট বাকী মাত্র । জ্যামের কারনে এইটুকু রাস্তা পেরুতেই ৪৮ মিনিট লেগে গেছে । বাহন ছেড়ে দে দৌঁড় । জ্যাম ঠেলে দৌঁড় তো ভালো, হাটাও কষ্টকর । সাথে কেউ থাকলে বিরক্তিকর লাগতোনা । একা একা এঁকেবেঁকে সাপের মতো হাটছি দ্রুত পায়ে । বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাটা যেমন আমার প্রচন্ড সম্ভ্রম উদ্রেক করে তেমনি ভয়ও ধরিয়ে দেয় । কি জানি হুট করে কোথা থেকে কি হয়ে যায় !
তো শেষমেশ নির্দিষ্ট আর,সি,মজুমদার মিলনায়তনে পৌঁছা গেলো । দশ মিনিট লেট । অন্ধকার । ৪র্থ বাংলা ব্লগ দিবস লেখা একটা ব্যানার জাতীয় কিছু থাকার কথা এখানে কোথাও । নেই । ঠিক জায়গায় এসেছি তো !

হুমমমম... জায়গা ঠিক আছে । সামনে “রক্তসংগ্রহ” লেখা গাড়ীখানা দেখে বোঝা গেলো এখানেই মিলন মেলা । স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী ছিলো, দেখেছি ব্লগ নোটিশে । কিন্তু লোক কই ? অন্ধকার ঠেলে ভেতরের দিকে যেতেই ক’জন প্রানচঞ্চল স্বেচ্ছাসেবীর দেখা মিললো । দরজা দিয়ে উঁকি মেরে দেখি জনা দশেক লোক মাত্র বসে । যাদের সাথে এতোদিন লেখার মধ্যে দিয়ে অলিখিত একটা বন্ধন গড়ে উঠেছে তাদের বিপুল সংখ্যায় দেখতে পাবো এটাই প্রত্যাশা ছিলো । ব্লগে তো সব্বাই ঝড় তোলে, কেউ পেছিয়ে থাকতে রাজী নয় কিন্তু এই মহা সমুদ্রের মিলনমেলায় তেমন কিছুর দেখা নেই কেন ? এটা কি তাদের দোলা দিতে পারেনি ?

অনেক স্বেচ্ছাসেবীরা ব্যস্ত ভেতরে , আসল লোকজন নেই । এর মধ্যে এক স্বেচ্ছাসেবীকে সবচেয়ে উদ্দ্যমী মনে হলো, নজর কাড়া তার ব্যস্ততা, চেহারাও । শরৎ ...শরৎ বলে ডাকছিলো তাকে অন্যরা । আমি এখোন কি করবো ভাবছি । আজ শহরের যানজটে সবাই স্যান্ডউইচড হয়ে আছে পথে নির্ঘাৎ । কতোক্ষনে এরা মানে আসল উদ্দোক্তারা আসবেন ! বাইরে বেরুলাম আবার । সিগারেটের তেষ্টা পেয়েছে । সিগ্রেট টানা ছাড়া আর করার কিছুই ছিলোনা । কাউকে চিনিনে এখানে । সিগ্রেট টানছি একজন পাশে এসে দাঁড়ালেন ।
- আপনি কোন ব্লগ থেকে এসেছেন ?
তার এমোন প্রশ্নের জবাবে বললাম , সামু ব্লগ থেকে । ইনি নিজের পরিচয় দিলেন “শব্দনীড়” এর ব্লগার বলে । প্রথম আলো ব্লগেও লেখেন । সম্ভবত “নীল পদ্ম” জাতীয় এইরকম একটি নামে । একথাও বললেন যে তার ব্লগজীবন শুরু “সামু” থেকে । ভালো লাগলো শুনে যে, এটা আমারই ব্লগ ।
আমরা দুজনে আজকের ব্লগদিবসের টুকটাক নিয়ে আলাপ করছিলাম । আগের দিন হরতাল গেছে তাই আজ যানজটের কথা মাথায় রেখে উদ্দোক্তাদের আগে থেকেই করনীয় কি ছিলো, আলোচনা করছিলাম এগুলোও । কোনও ব্যানার নেই, আলো নেই । দুরদৃষ্টি থাকলে এগুলোর ব্যাপারেও আগে থেকেই ব্যবস্থা নেয়া যেতো ইত্যাকার আলোচনা ।

আমাদের এইসব আলাপের মাঝে এসে জুটলেন - ডাংগুলি ও বিডি-২৪ ব্লগের এ্যাডমিনরা । এলেন তাদেরই নিজনিজ ব্লগের আরো ব্লগাররা । গল্প জমলো, ব্লগকে ঘিরে । এদের মাঝে আমি একা নির্বান্ধব সামু ব্লগার । এতোক্ষন কথা বলছিলাম আমরা দু’জন । এবারে তারা সবাই নিজেদের মতো কথা বলতে শুরু করলেন , আমি নিরব শ্রোতা হয়ে রইলাম । তাদের কথায় যা বেড়িয়ে এলো তা এই – এ উদ্দোগে অন্য ব্লগগুলো সম্মিলিত ভাবে জড়িত থাকলেও “ সামু” হলো আসল । যা কিছু করার সামুই করবে ।
একজন বললেন, তিনি তার ব্লগের ব্যানার নাকি প্রিন্টই করেননি । কি দরকার, এমোন একটি মনোভাব তার । বাকীদের অবস্থাও তাই । একফাঁকে সবাই মিলে চা খেয়ে আসা গেল পাশের ক্যান্টিন থেকে । আমার মনে হলো, এরা দায়সাড়া ভাবে এসেছেন । আসতে হয় বলে আসা । সামু হয়তো সবসময়ই অগ্রনী ভুমিকা নিয়ে থাকে কারন সামুর অবস্থানটি বেশ ভারী , লোকবলে আর উদ্দ্যমী কর্মীবাহিনীর কারনে । তাই হয়তো তারা সবকিছুই সামুর উপরে চাপিয়ে নিশ্চিন্তে আছেন । কিন্তু আমাকে যা ভাবিয়ে তুললো তা এই –
- আজকে বাকস্বাধীনতার গলাকে টিপে ধরতে বিভিন্ন দেশ, ইন্টারনেটকে কি ভাবে চলতে শেখাবেন তার নকশা তৈরী করছেন, সেখানে আমরা যারা প্রান উজার করে কথা বলতে চাই তাদের দলগত ঐক্যমত, প্রচেষ্টা এতো নাজুক হবে কেন ? বিশেষ করে বছরে একবার সবাই মিলে একটি দিবস উদযাপনে ?
আমার এই শংকা আরো বেড়ে গেলো যখোন দেখলাম হাতে গোনা তিন-চারটি ছাড়া আর কোনও ব্লগদল এই সম্মিলিত “ব্লগদিবস”এ উপস্থিত নেই । এটা আমার দেখার বা বোঝার ভুল কিনা জানিনে । মনে মনে ভাবলাম, সামু ব্লগের প্রেরনাদায়িনী “জানা’কে ব্যাপারটি ভেবে দেখতে বলবো । কিন্তু জানাকে পাবো কই ? ছয়টা প্রায় বেজে গেলো, আসল উদ্দোক্তা জানার দেখা নেই । পথে আটকে আছে নির্ঘাৎ ।

আবারো মূল অনুষ্ঠান কক্ষে ঢুকতে গিয়ে দেখি লাল শাড়ী, সবুজ ব্লাউজ পরিহিতা চটপটে একজন । স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে তার বেশ হৃদ্যতা । আমি এ পর্যন্ত তাকে চিনিনে । কিন্তু অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছেনা কেনও ? জানার জন্যে অপেক্ষা ! মনে হলো এরকম কতো যে অনুষ্ঠান আমরা করেছি । শুরু হতে দেরী হলে , দর্শকশ্রোতাদের অন্য কিছু দিয়ে ভুলিয়ে রাখতাম । মূল স্বেচ্ছাসেবী কেউ একজন জানার কাছে এরকম কিছুর নির্দেশ চেয়ে তো উপস্থিত দর্শকদের ভুলিয়ে রাখতে পারতেন ! তা করছেন না কেন কেউ ? অবশ্য মাঝে মাঝে আমার দৃষ্টি কাড়া স্বেচ্ছাসেবীটি আমাদের ধৈর্য্য ধরতে বলছিলেন ( পরে জেনেছি ইনিই শরৎ চৌধুরী ) ।

এবারে এগিয়ে এলেন শাড়ী পরিহিতা । জানা গেল তিনি ব্লগার “আরজু পনি ” । ব্লগের বিভিন্ন বিষয়ে , ব্লগারদের সচেতনতামূলক অনেক কাজে তার তৎপরতা চোখে পড়ার মতো । প্রশংসার দাবী রাখে । আরজু প্রস্তাব রাখলেন , দেরীর সুযোগে অনুষ্ঠান শুরুর আগে আমরা সবাই পরিচিত হয়ে নেই , পরে আর সময় পাওয়া যাবেনা । আমি চমকে উঠলাম । ব্লগ দিবসে ব্লগারদের পরিচিতি অংশটুকু থাকবেনা ! এ যে তারই সংকেত । উপস্থিত ব্লগাররা নড়েচড়ে বসলেন । এতোক্ষন পরে যেনো প্রান এলো মিলন মেলাটিতে । পরিচয় শুরু হলো । ফ্লাশ জ্বলে উঠতে থাকলো পরিচিতজনদের ক্যামেরা থেকে । আমার পালা এলে আমিও পরিচয় রাখলাম ।
দৃশ্যতঃ মনে হলো কেউ চেনেন না আমাকে । চেনার কথাও নয় । আমার পাঠক সংখ্যা সামান্য । ব্লগে আমার পোষ্টে যাদের যাদের নাম আমি দেখেছি এদের প্রায় কেউ ই এখানে নেই সম্ভবত । থাকলেও আহামরি কিছু ঘটতো বলে আশা করা বোকামী । আরজু পনিকে ধন্যবাদ, যে উনি পরিচয়পবর্টা করতে পেরেছেন । যেটা এই দিবসে প্রথম কাজটি হওয়া উচিৎ ছিলো । এটি নির্দ্ধারিত সূচীর বাইরে ছিলো সম্ভবত । বা থাকলেও শেষের দিকে ।
এই পর্ব শেষ হলে আর একবার চা-সিগ্রেট খেতে বাইরে গেলাম একা । দেরী আর কতোক্ষন সহ্য করা যায় ।
ফিরে এসে দেখি উপস্থিত উদ্দোক্তারা অনুষ্ঠান শুরু করে দিয়েছেন । একটা ব্যানার লাগানো দেখা গেলো মঞ্চে । বাক-স্বাধীনতা আর বাক দায়িত্বশীলতার কথা লেখা শ্লোগান তাতে । সময় সম্ভবত তখোন সন্ধ্যে ৭ টা বাজতে ১০ মিনিট । প্রধান অতিথি অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এসে বসেছিলেন বেশ কিছুক্ষন । অনুষ্ঠান শুরু হলে উনি ডায়াসে এসে বসলেন । পাশে বসলেন অধ্যাপক ফাহমিদুল ( পুরো নামটি জানিনে ) বক্তব্য রাখলেন প্রধান অতিথি । উনি একজন ব্লগার না হয়েও যে ব্লগারদের এই সম্মেলনে এসেছেন, তা জেনে ভালো লাগলো । বললেন, বাংলা ব্লগারদের ব্যানারের বানান ভুল থাকা ঠিক নয় । ঠিক । আমিও বলি- এ ব্যাপারে একটু যত্নবান হওয়া যেতো । যদিও তরুনরা অনেক খেটেখুটে রাত জেগে এগুলো করেছেন, সেটা আমরা ব্লগাররা ক্ষমার চোখে দেখতে পারি অন্যেরা কিন্তু নয় । কারন বিশ্বব্যাপী লোক এটা দেখে থাকবেন । সামনের দিনে সতর্ক থাকতে হবে ।
প্রধান অতিথি চলে গেলে অনেককে কথা বলার সুযোগ দেয়া হলো ।
বক্তাদের বক্তব্যে বাক-স্বাধীনতা আর বাক দায়িত্বশীলতার কথা তেমন উচ্চকিত ছিলোনা একটুও । ছিলো, তারা কে কি করেছেন বা করছেন এসব । তারা এই দু’টি প্রতিপাদ্যকে উপরে তুলে আনতে পারেননি । ভরাট গলায় ব্লগার কৌশিক এর “ব্লগ থেকে আয় করা যায় কিনা” এমোন বক্তব্য প্রাঞ্জল ছিলো । ডায়াসে তার ডানে বসা হালকা পাতলা বক্তার ( দুঃখিত তার নামটি না বলতে পেরে ) কথা ও বাচনভঙ্গি আঁতেলীয় যা ভালো লাগেনি । বুঝতে পারিনি উনি আসলে কি বলতে চেয়েছেন । দোষটা হয়তো আমারই । বাকীরা কেবল ব্লগে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শুধু যেমন আমাদের রাজনীতিবিদেরা অনেক ধরনের আহ্বান জানিয়ে থাকেন অথচ পথ বাৎলে দেননা কখোনো, তেমন ।
কিন্তু ব্লগে, বিশেষ করে বিশাল সামু ব্লগে বেশ কিছুদিন ধরে যে অশালীন আর দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা চালাচালি হচ্ছে ; তাকে পরিশুদ্ধ করার পদ্ধতি বাৎলাননি কেউই যদিও বক্তারা সম্ভবত সবাই সামু ব্লগের । এবং সবাই যথেষ্ট বিদ্বান, পরিশীলিত, প্রাজ্ঞ । গেলবারের ব্লগদিবসের শেষে লেখা ব্লগারদের পোষ্টগুলো থেকে ধারনা হয়েছিলো ব্লগ দিবসের অনুষ্ঠানে ভালো , বিজ্ঞ ব্লগাররা যান না । যাদের খেয়ে দেয়ে কাজ নেই কেবল তারাই যান সেখানে । আজ নিজের অভিজ্ঞতায় দেখলাম তা সম্পূর্ণ ভুল, হয়তো বিদ্বেষ প্রসূত ।

একজন পরিচালিকা হিসেবে জানা মাঝেমাঝে ব্লগারদের দায়িত্বশীল হওয়ার কথা বলেন বটে ব্লগে, সেটা কতোখানি কার্যকর ভেবে দেখার অবকাশ আছে । লেখা সম্ভবত লেখকের সাথে “ কমিয়্যুনিকেশান ” এর সরাসরি রূপ নয় । সরাসরি “ কমিয়্যুনিকেশান ” অনেক তেজী । আজ এই সুযোগটি ছিলো । যারা যারা এখানে এসেছেন তারা যথেষ্ট উৎসাহী সন্দেহ নেই , তাদের সাথে ব্লগ দিবসটির উদ্দেশ্যগুলো আলোচনা করা যেতে পারতো । যেতে পারতো মতবিনিময় করা । নোটিশবোর্ডে তেমনটাই লেখা ছিলো ।
এসবের ফল হতে পারতো সুদুরপ্রসারী । ব্লগাররা হয়তো মুখিয়েও ছিলেন এমোনটার জন্যে । অথচ এরকম একটা সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে । ভেবে দেখতে বলি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আগামীর জন্যে ।

সাড়ে সাতটায় দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জানা এলেন । অনুষ্ঠান এগিয়ে গেলো তরতর করে ।



মিনিট কয়েক সময়ের প্রস্তুতিতে, সতেজ টগবগে স্বেচ্ছাসেবীদের দিয়ে
“ মডু আর ব্লগার মুখোমুখি” এমন উপস্থাপনাটির বিষয় যে ব্লগারদের কাছে কতোখানি বাস্তব তা প্রমানিত হয়েছে উপস্থিত ব্লগারদের হর্ষধ্বনিতে । উপস্থাপনার মাঝে তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহন আর টিকা টিপ্পনীতে । সবচেয়ে মজাদার ছিলো এই অংশটুকু ।
কারন এটি ছিলো বাস্তব থেকে প্রসূত । এতেই বোঝা যায় , ব্লগের বর্তমান বাস্তবতায় ( বিশেষ করে সামু ব্লগ) বাক দায়িত্বশীলতার প্রতি যদি উপস্থিত ব্লগারদের দৃষ্টি কাড়া যেতো তবে তা সাড়া পেতো বেশ । শুরু থেকেই আগাগোড়া সঞ্চালনাটুকু শরৎ চৌধুরী সামলেছেন দারুন মুন্সিয়ানার সাথে । প্রচন্ড পরিনত তিনি বোঝা গেছে । এখানে এসে দেখা গেল প্রানোচ্ছল একটি কিশোরও তার মনের ভেতরে বসে আছে । এটা অন্য সবার মধ্যেও বারবার ঝিলিক দিয়ে উঠছিলো । খুব প্রানবন্ত একটি উপস্থাপনার জন্যে ঝকঝকে সব স্বেচ্ছাসেবীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে রাখছি ।
এদিকে মাইক্রোফোনের ব্যাটারী ঝিমিয়ে পড়তে শুরু করেছে । শরৎ চৌধুরী সে অভাবটুকু গলার জোরে পুষিয়ে দিতে চাইছেন । চাইছেন যারা যারা বলছেন, তারাও । একসময় মাইক্রোফোন বিহীন হয়ে গেল মঞ্চটি ।

পুরো অনুষ্ঠানটিই চলছিলো সামু ব্লগের ঘাড়ে চড়ে । এই সমুদয় কৃতিত্বের জন্যে আমি পুলকিত হচ্ছিলাম কারন “সামু” যে আমারই ব্লগ ।
এর পরেই ছিলো অংশগ্রহনকারী বাকী ব্লগ প্লাটফর্মদের নিজেদের কথা বলা আর তাদের ব্লগারদের মাঝে পুরষ্কার বিতরন । এরপরে খাবার দিয়ে গেলেন স্বেচ্ছাসেবীরা যত্ন করে ।
সামুর পুরষ্কার বিতরন হয়েছিলো শেষের দিকে । একটি বিভাগে পুরষ্কার পেলেন ব্লগার “চেয়ারম্যান০০৭” যোগ্য ব্যক্তির কাছেই গেছে পুরষ্কারটি ।

দেশের বাইরে থেকে তো অসংখ্য ব্লগার সামুতে লিখে থাকেন । তারা কি সবাই সামুর ভালোমন্দকে নিজেদের করে নেন ? সামুকে একান্ত নিজের বলে ভাবেন ? কে জানে ! তবে সেই সুদুর থেকে অসংখ্যের ভীড়ে একমাত্র “চেয়ারম্যান০০৭” ই ফোনে উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, একাত্মতা ঘোষনা করেছেন ৪র্থ বাংলা ব্লগ দিবসটির সাথে । তার এই আন্তরিকতা সামুর অলঙ্কার হয়ে থাকুক ।

পরে মাইক্রোফোন বিহীন জানা আর আরিল পরিচয় করিয়ে দিলেন অনেক কৃতি ব্লগার আর একই সাথে সামুর প্রান সঞ্চারে যারা অকপট আর নিরলস ছিলেন এবং আছেন তাদের , যারা গড়েছেন এই বিশাল সামুকে ধীরে ধীরে। খুব ভালো লাগলো তাদের পরিচয় পেয়ে ।
হাসিমুখের স্বেচ্ছাসেবীদেরও পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো । এরা নামকরা সব ব্লগার ।
মূল সঞ্চালক শরৎ চৌধুরীর পরে ব্লগার “কাল্পনিক ভালোবাসা”র স্বেচ্ছাসেবা চোখে পড়েছে বেশী । সবখানেই পদচারনা ছিলো তার । বেশ মিশুকে, বোঝা যায় । প্রথম দিকে ঝুলে পড়া অনুষ্ঠানটিকে চাঙ্গা করে এ পর্য্যন্ত টেনে আনতে শরৎ চৌধুরীর আন্তরিকতা মনে থাকবে অনেকদিন ।
সব মিলিয়ে ভালো লাগলো এটা দেখে যে, এখোনো ইচ্ছে করলে আমরা আমাদের টগবগে তরুন প্রজন্মকে সৃজনমূলক কাজে লাগাতে পারি । লাগাতে পারি আরো কঠিন কাজে । জানা এবং আরিলকে ধন্যবাদ , তারা একগোছা তরুনদের তেমন কাজে লাগাতে পেরেছেন ।

“শেষ হইয়া ও হইলোনা শেষ ” এমোন পর্যায়ে এসে বলা হলো উপস্থিত ব্লগারদের বলার কিছু আছে কিনা । ব্লগারদের বলার কিছু আছে কিনা, এই প্রশ্নটি বা এই প্রসঙ্গটি আসা উচিৎ ছিলো অনেক আগেই । আসেনি । আসতো হয়তো । হয়তো অপ্রত্যাশিত দেরীর কারনে অনুষ্ঠানের অংশ থেকে তা ছেটে ফেলা হয়েছে । যেহেতু এটা ব্লগারদের সম্মিলিত একটি দিন তাই এই দিনটির মেজাজের সাথে তাল রেখে ব্লগারদের মতামতকে প্রায়োরিটির শীর্ষে রাখা উচিৎ ছিলো । জানিনে, এটা আমি ভুল বললাম কিনা ! কিম্বা ব্লগাররা আমার সাথে একমত হবেন কিনা !

রাত ন’টার বেশী বেজে গেছে তখোন । শীতের রাত তাই অনেকটা গভীর । তার উপর পরের দিন হরতাল । তাই এটাকে উপেক্ষা করে সবাই ছুটলেন দরজার দিকে । ঘরে ফিরতে হবে আগেভাগে । অগত্যা আমিও .... জানাকে যা বলার ছিলো বলা হয়নি, ব্যস্ত ছিলেন উনি । শুধু শরৎকে সামনে পেলাম । তার হাত ঝাকিয়ে দরজার বাইরে ।

যে নষ্ট সংস্কৃতির ভেতরে আমাদের বাস , সেখানে ধর্ম, বর্ণ, বয়স, অভিজ্ঞতা নির্বিশেষে উপস্থিত সবার মাঝে সম্প্রীতির যে স্রোত এখোনও বইছে তার সব কটি আলো জ্বালিয়েই ৪র্থ ব্লগ দিবসটি আজ ভাস্বর হয়ে উঠেছিলো যেন । শীতের কুয়াশা ঠেলে যখোন ঘরে ফিরছে সবাই, আমি বিশ্বাস করি সেই আলোই কুয়াশার ভেতর তাদেরকে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেছে নিজের ঘরে । আমাকেও.......

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১১
২৯টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×